সোমবার বাদ আছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের জেলার প্রধান ঈদগাহ মাঠে নামাজে জানাজা ও রাষ্ট্রীয় মার্যদা প্রদান শেষে শহরের শেরপুর কবরস্থানে তার মায়ের কবরের পাশে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
জানাজায় অংশ নেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট আনিসুল হক, বিমান প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন (অবঃ) এ.বি. তাজুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ এর সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব এডঃ রেজাউল ইসলাম ভুইয়া, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি।
এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। নামাজে জানাজায় ইমামতি করেন জেলার প্রধান জামে মসজিদের খতিব মাওলানা সিবগাহতুল্লাহ নূর।
এর আগে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম ও পুলিশ সুপার মো: শাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে প্রশাসনের একটি দল মহান মুক্তিযুদ্ধে অনবদ্য ভূমিকা রাখা এই ব্যক্তিত্বকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সালাম প্রদান করেন। জানাজা শেষে বর্ষীয়ান এই নেতাকে চির বিদায় জানাতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়।
উল্লেখ্য, তিনি ২০১৫ সালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সদস্য হিসেবে অধিবেশন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনায় ছিলেন। প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা, কল্যাণ ও উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখায় ২০১৭ সালে সমাজসেবায় জাতীয় সম্মাননা স্বীকৃতি অর্জন করেন। তিনি ২০২১ সালে “মাদার অব হিউমিনিটি" জাতীয় সমাজকল্যাণ পদকের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক হিসাবে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করেন। ১৭ বছর বয়সে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। “গেরিলা ট্রুপস কমান্ডার” হিসাবে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে একাধিক দুঃসাহসিক অপারেশন পরিচালনা করেন। যুদ্ধে একাধিকবার গুরুতর আহত হয়েছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমান্ডের প্রথম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি জেলার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী এবং বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুদের শিক্ষা, কল্যাণ ও উন্নয়নে বিভিন্ন সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি ও সম্মাননা অর্জন করেন।
আল-মামুন সরকার জেলাবাসীর কাছে একজন সৎ, নিষ্ঠাবান, কর্মোদ্দোগী এবং স্পষ্টবাদী সামাজিক নেতা হিসাবে সুপরিচিত। তার এই মৃত্যু দেশ ও সমাজের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি বলে মনে করে সবাই।