খরা কাটিয়ে লিওনেল
মেসি উপহার দিলেন দর্শনীয় গোল। ব্যবধান যদিও ধরে রাখতে পারল না পিএসজি। শেষ সময়ে গোল
হজম করে হাতছাড়া করল জয়। তবে মূল লক্ষ্য ঠিকই পূরণ হলো তাদের। চার ম্যাচ হাতে রেখে
লিগ ওয়ানের শিরোপা ঘরে তুলল মাওরিসিও পচেত্তিনোর দল।
দ্বিতীয়ার্ধের
বেশিরভাগ সময় একজন কম নিয়ে খেলা লঁসের বিপক্ষে ঘরের মাঠে শনিবার রাতে ১-১ গোলে ড্র
করেছে পিএসজি।
শিরোপা নিশ্চিত
করতে এখানে হার এড়ালেই চলত স্বাগতিকদের। আগের চার ম্যাচে সাত গোল করা কিলিয়ান এমবাপে
একের পর এক সুযোগ নষ্ট করায় অপেক্ষা বাড়তে পারত দলের। তবে মেসির গোলে আগেভাগেই উৎসবের
উপলক্ষ পেল প্যারিসের দলটি।
গত মৌসুমে লিলের
কাছে শিরোপা হারানো পিএসজি আবার ফিরে পেল মুকুট। ফ্রান্সের শীর্ষ লিগে পেশাদার যুগে
সাঁত এতিয়েনের সবচেয়ে বেশি ১০ শিরোপা জয়ের রেকর্ডও স্পর্শ করল তারা। অপেশাদার যুগে
একটিসহ সমান সংখ্যক শিরোপা জিতেছে মার্সেইও।
কোচিং ক্যারিয়ারে
এই প্রথম কোনো লিগ শিরোপা জিতলেন পচেত্তিনো। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে টমাস টুখেলের জায়গায়
পিএসজির দায়িত্ব নিয়ে প্রথম মৌসুমে ফরাসি কাপ ও ফরাসি সুপার কাপ জিতেছিলেন এই আর্জেন্টাইন।
ক্লাব ক্যারিয়ারে
মেসি জিতলেন ৩৬তম শিরোপা। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের ক্লাবগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিরোপা
জয়ের রেকর্ডে দানি আলভেসের পাশে বসলেন সাবেক বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড।
বল দখলে শুরু
থেকে আধিপত্য করলেও পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে ভুগছিল পিএসজি। ২৪তম মিনিটে ভালো একটি
সুযোগ হাতছাড়া করেন এমবাপে। ডি-বক্সে মেসির শট বাধা পায় প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের পায়ে।
নেইমারের ব্যাকহিল ফ্লিকে বল পেয়ে কাছ থেকে বাইরে মারেন ফরাসি ফরোয়ার্ড।
দুই মিনিট পর
সুযোগ আসে আশরাফ হাকিমির সামনে। নিজেদের অর্ধ থেকে সতীর্থের লম্বা করে বাড়ানো বল ধরে
ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি। এগিয়ে এসে তার শট রুখে দেন সফরকারী গোলরক্ষক। ৩১তম মিনিটে
দুরূহ কোণ থেকে মেসির শটও ঠেকান তিনি।
একটু পর আরেকটি
সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন চলতি লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা এমবাপে। নেইমারের পাস ধরে ডি-বক্সে
ঢুকে ওয়ান-অন-ওয়ানে উড়িয়ে মারেন বিশ্বকাপ জয়ী তারকা। ৩৯তম মিনিটে এক ডিফেন্ডারের বাধা
এড়িয়ে দুরূহ কোণ থেকে আবারও একইভাবে উড়িয়ে মারেন তিনি।
পরের মিনিটে সুযোগ
পায় লঁস। তবে কয়েক গজ দূর থেকে গোলরক্ষক কেইলর নাভাস বরাবর শট নেন ফরাসি ডিফেন্ডার
জোনাথন।
দ্বিতীয়ার্ধের
অষ্টম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত পিএসজি। কাছ থেকে এমবাপের চিপ গোলরক্ষক ঠেকানোর পর ফিরতি
বলে ফরাসি ফরোয়ার্ডের প্রচেষ্টা গোললাইন থেকে ফেরান ডিফেন্ডার ক্রিস্তোফার।
৫৭তম মিনিটে বড়
ধাক্কা খায় লঁস। ডি-বক্সের বাইরে নেইমারকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন অস্ট্রিয়ান
ডিফেন্ডার কেভিন ডানসো। মেসির ফ্রি-কিক ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক।
৬৮তম মিনিটে মেসির
ওই জাদুকরী গোল। নেইমারের পাস ডি-বক্সের বাইরে পেয়ে বাঁ পায়ের ট্রেডমার্ক শটে ওপরের
কোণা দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী।
লিগ ওয়ানে ২২
ম্যাচে মেসির চতুর্থ গোল এটি। মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে আর্জেন্টাইন তারকার ৩০
ম্যাচে গোল হলো ৯টি।
জয়ের সুবাসই পাচ্ছিল
পিএসজি, কিন্তু নির্ধারিত সময়ের দুই মিনিট বাকি থাকতে সমতা ফেরায় লঁস। বাঁ দিক থেকে
সতীর্থের পাস দূরের পোস্টে পেয়ে ফাঁকা জালে পাঠান অরক্ষিত ফরাসি ফরোয়ার্ড কোঁহতাঁ জঁ।
৩৪ ম্যাচে ২৪
জয় ও ৬ ড্রয়ে পিএসজির পয়েন্ট হলো ৭৮। এক ম্যাচ কম খেলে ৬২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে মার্সেই।
এবারের মৌসুমে
ফরাসি কাপের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নেওয়া পিএসজি ফরাসি সুপার কাপে হারে লিলের বিপক্ষে।
তারকাসমৃদ্ধ দলটি পরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলো থেকে ছিটকে যায় রিয়াল মাদ্রিদের
বিপক্ষে হেরে। মৌসুম একমাত্র লিগ শিরোপাই জিততে পারল পচেত্তিনোর দল।