
প্রথমবার ‘তিন তারকাখচিত’ জার্সি পরে খেলতে
নেমে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়ে আর্জেন্টিনা। প্রথম মিনিট থেকে আক্রমণের ঢেউ বইয়ে দিয়েও
পাচ্ছিল না জালের দেখা। লিওনেল মেসির সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় পোস্ট। শেষ পর্যন্ত অবশ্য
আটকানো যায়নি এই মহাতারকাকে। তার ইতিহাস গড়ার রাতে প্রত্যাশিত জয় পেল আর্জেন্টিনাও।
বুয়েনস এইরেসের এল মনুমেন্তালে বাংলাদেশ
সময় শুক্রবার সকালের প্রীতি ম্যাচে পানামাকে ২-০ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। থিয়াগো
আলমাদার গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর চমৎকার ফ্রি কিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেসি।
যার মাধ্যমে তিনি ক্যারিয়ারের ৮০০তম গোলের
অনবদ্য রেকর্ডবুকে নাম উঠিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ৮৩০ গোল করে চূড়ায় আছেন তার দীর্ঘ সময়েরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো।
কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলা সবাইকে
সুযোগ দেওয়ার ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন কোচ লিওনেল স্কালোনি। যেই কথা সেই কাজ, সেদিনের
শুরুর একাদশ নিয়েই খেলতে নামে আর্জেন্টিনা। প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণে উঠতে থাকে তারা।
দ্বিতীয় মিনিটে সুযোগও পেয়ে যায় চ্যাম্পিয়নরা।
কিন্তু বক্সে বল পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি আলেক্সিস মাক আলিস্তের। পরের মিনিটে বল পায়ে
দারুণ কারিকুরিতে প্রতিপক্ষের কয়েকজন খেলোয়াড়ের মধ্যে দিয়ে কোনাকুনি এগিয়ে শট নেন
মেসি। তবে যথেষ্ট গতি না থাকায় নিয়ন্ত্রণে নিতে সমস্যা হয়নি গোলরক্ষকের।
পঞ্চদশ মিনিটে মেসিকে বিপজ্জনক ফাউল করে
হলুদ কার্ড দেখেন পানামার ডিফেন্ডার কেভিন গালভান। প্রায় ২৭ গজ দূর থেকে নেওয়া পিএসজি
তারকার দুর্দান্ত ফ্রি কিক দুর্ভাগ্যবশত পোস্ট কাঁপিয়ে ফেরে।
সত্তর শতাংশের বেশি সময় বল দখলে রেখে মুহুর্মুহু
আক্রমণ করতে থাকে আর্জেন্টিনা। প্রবল চাপের মুখেও দারুণ দৃঢ়তায় রক্ষণ জমাট রেখে প্রতিপক্ষের
আক্রমণভাগকে আটকে রাখে পানামা।
৪৩তম মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে উড়িয়ে
মারেন মেসি। পরের মিনিটে অনেক দূর থেকে বুলেট গতির শট নেন এনসো ফের্নান্দেস, ঝাঁপিয়ে
কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক হোসে গেরা।
আক্রমণে একচেটিয়া আধিপত্য করে প্রথমার্ধে
গোলের উদ্দেশ্যে ১০টি শট নেয় আর্জেন্টিনা, যার মধ্যে কেবল দুটি ছিল লক্ষ্যে।
চমৎকার গোলে ৮০০’র ঘরে মেসি, আর্জেন্টিনার
জয়
দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে ২১ মিটার দূর
থেকে মেসির ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক। খানিক পর আর্জেন্টিনা অধিনায়কের আরেকটি
শট রুখে দেন গেরা।
সময় পেরিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোলের
দেখা মিলছে না। তাতে আরও মরিয়া হয়ে উঠতে থাকে আর্জেন্টিনা। ৭৩তম মিনিটে মার্কোস আকুনার
ডি-বক্সে বাড়ানো ক্রসে ছুটে গিয়ে হেড করেন মেসি, কিন্তু বল চলে যায় ক্রসবারের ওপর
দিয়ে।
অবশেষে ৭৮তম মিনিটে ডেডলক ভাঙতে সক্ষম
হয় তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
মেসির বাঁকানো ফ্রি কিক পোস্টে লেগে ফেরার
পর বল বুক দিয়ে নামিয়ে শট নিতে গিয়ে ঠিকমতো পারেননি লেয়ান্দ্রো পারেদেস। সুযোগ পেয়ে
দুরূহ কোণ থেকে জোরাল শটে দলকে এগিয়ে নেন দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মাক আলিস্তেরের বদলি
নামা আলমাদা।
চমৎকার গোলে ৮০০’র ঘরে মেসি, আর্জেন্টিনার
জয়
নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট বাকি থাকতে মাইলফলক
ছোঁয়া গোলটি করেন মেসি। এর আগে তার দুটি ফ্রি কিক ভাগ্যের ফেরে পোস্টে লাগলেও এবার
আর ব্যর্থ হননি তিনি, বাঁকানো শটে রক্ষণ দেয়ালের ওপর দিয়ে খুঁজে নেন ঠিকানা। জয়টাও
প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় আর্জেন্টিনার।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে মেসির গোল হলো ৯৯টি।
পরের প্রীতি ম্যাচে আগামী ২৮ মার্চ কিরাসাওয়ের
মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা।