
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর
ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের দায়ে ফেসবুকের স্বত্বাধিকারী
মেটাকে ১৩০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩ হাজার ৯১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা) জরিমানা করেছে
আয়ারল্যান্ডের ডেটা প্রটেকশন কমিশন (ডিপিসি)।
ইইউ’র ডেটা সুরক্ষা
সম্পর্কিত প্রচলিত আইন জেনারেল ডেটা প্রটেকশন রেগুলেশনের (জিডিপিআর) আওতায় সোমবার
(২২ মে) এ জরিমানা আদেশ জারি করে ডেটা প্রটেকশন বোর্ড। সেই সঙ্গে আগামী ছয় মাস ফেসবুকের
ইউরোপীয় সেবা গ্রহীতাদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রক্রিয়াজাত করতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া
হয়।
ইইউ’র আইনে স্পষ্ট
বলা আছে, ইউরোপের বাইরে তথ্য স্থানান্তরের আগে অবশ্যই ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত
করতে হবে। তবে মেটা যে প্রক্রিয়ায় তথ্য স্থানান্তরিত করেছে, তাতে ওই আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন
হয়েছে।
সোমবারের বিবৃতিতে ইউরোপিয়ান ডেটা প্রটেকশন
বোর্ডের চেয়ারম্যান আন্দ্রেয়া জেলিনেক বলেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লাখ লাখ মানুষ ফেসবুক
ব্যবহার করেন। ফলে ধারাবাহিক ও পদ্ধতিগতভাবে বিশাল পরিমাণ ব্যক্তিগত তথ্য পাচার হয়েছে।
আমাদের অনুসন্ধানে এ ধরনের তথ্যই উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: এবার পাঠানো মেসেজ এডিট করা যাবে হোয়াটসঅ্যাপে
তিনি আরও বলেন, ইউরোপে কারও ব্যক্তিগত
গোপনীয়তার লঙ্ঘণ করা ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের শামিল। এ ধরনের অপরাধ করলে দীর্ঘ
পরিণতি ভোগ করতে হবে। মেটার এ অনাকাঙিক্ষত এ জরিমানার মাধ্যমে আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে
এ সতর্কবার্তা দিতে চাই।
এদিকে, এ সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক ও অপ্রয়োজনীয়
বর্ণনা করে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে বলে জানিয়েছে মেটা। সোমবার পাল্টা এক বার্তায়
মেটা জানায়, যে সমস্যাটি নিয়ে ইইউ এ জরিমানা জারি করেছে, তা মেটার পরিকল্পনা বা গাফিলতির
জন্য নয়, বরং এটি একটি আইনবিষয়ক জটিলতা।
আরও পড়ুন: বন্ধ হলো ফেসবুকে অটো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট যাওয়া
মেটা সদর দপ্তরের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স
বিভাগের প্রধান নির্বাহী নিক ক্লেগ ও মেটার প্রধান লিগ্যাল অফিসার জেনিফার নিউস্টেড
এক বিবৃতিতে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি হওয়ায় মেটা মার্কিন আইন-কানুন অনুযায়ী
কোম্পানি পরিচালনা করতে বাধ্য। ব্যক্তিগত ডেটা ও গোপনীয়তা রক্ষা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের
প্রচলিত আইন ইউরোপের আইন থেকে ভিন্ন।
কোম্পানির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সমস্যাটি
সমাধানের জন্য ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা বৈঠক শুরু করেছেন, এমনকি সমাধানে
পৌঁছানোর পরিস্থিতও তৈরি হচ্ছিল। তার মধ্যেই এ জরিমানা জারি করা হলো, যা একেবারেই অনুচিত।