বৃহস্পতিবার ধর্ষণের শিকার ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা ও আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সমন্বয়কারী
১১ বছরের মেয়ের সামনে এক নারীকে ধষর্ণের ঘটনায় খুলনা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এসআই জাহাঙ্গীর আলমকে (৪৪) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও আদালত প্রত্যক্ষদর্শী মেয়ের জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন।
খুলনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তারা হোটেল সুন্দরবন পরিদর্শন এবং হোটেলের মালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এছাড়া ধর্ষণের শিকার ওই নারীর সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে।
তিনি জানান, প্রত্যক্ষদর্শী ওই নারীর মেয়েকে (১১) বৃহস্পতিবার সকালে মহানগর হাকিম আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। এসআই জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনা তদন্তে খালিশপুর জোনের সহকারী কমিশনার হুমায়ুন কবীরকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে খুলনা মহানগর পুলিশ। বৃহস্পতিবার এসআই জাহাঙ্গীরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
ওসি হাসান আল মামুন বলেন, আদালতের অনুমতি নিয়ে এসআই জাহাঙ্গীরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হবে। সেখানে তার শরীরের বিভিন্ন আলামত ও ডিএনএ নেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান ও সহকারী কমিশনার হুমায়ুন কবীর জানান, তিনি ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছেন। ২-১ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার ধর্ষণের শিকার ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা ও আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সমন্বয়কারী ডা. অঞ্জন কুমার চক্রবর্তী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৭ ডিসেম্বর বিকেলে বাগেরহাটের মোংলা থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুকন্যা ও ভাগনেকে নিয়ে ডাক্তার দেখানোর জন্য খুলনায় আসেন ওই নারী (২৮)। তবে ডাক্তারের সিরিয়াল না পাওয়ায় রাতে থাকার জন্য সুন্দরবন আবাসিক হোটেলের তৃতীয় তলার ৩১৩ নম্বর রুমে মেয়েকে নিয়ে ওই নারী ওঠেন। আর ভাগনে আরেক রুমে থাকেন।
রাত সোয়া ২টার দিকে হোটেলবয়কে নিয়ে পুলিশ পরিচয়ে রুমে প্রবেশ করেন জাহাঙ্গীর। ওই নারীর সঙ্গে থাকা মেয়েটি কার জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তিনি নিজের মেয়ে পরিচয় দিলে জাহাঙ্গীর বিশ্বাস করেননি। এরপর হুমকি-ধমকি দিয়ে হোটেলবয়কে রুম থেকে তাড়িয়ে দেন তিনি। রাত ২টা ৩০ মিনিটের দিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন জাহাঙ্গীর।
এ সময় ওই নারী ও তার মেয়ের চিৎকারে হোটেলবয়সহ অন্যরা আসলে জাহাঙ্গীর পালিয়ে যান। পরে ভাগনে সব শুনে হোটেল মালিক মিশারুল ইসলাম মনিরকে বিষয়টি জানালে তিনি এসে হোটেলের মেইন গেট তালাবদ্ধ করে রাখেন ও পুলিশকে সংবাদ দেন। পুলিশ এসে ওই নারীকে উদ্ধার করে এবং জাহাঙ্গীরকে আটক করে। এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেন।