মেয়াদ ফুরোচ্ছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র আইএসএসের। ২০৩১ সালে আয়ুষ্কাল শেষে মহাকাশ কেন্দ্রটিকে নিক্ষেপ করা হবে সাগরের অতল গর্ভে। তবে ২০২৬ সাল থেকেই এটিকে পৃথিবীর দিকে নিয়ে আসার কাজ শুরু হবে। বিশ্বের সবচে বড় মহাকাশযানকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। আইএসএসের পর বেসরকারিভাবে একাধিক স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র চীন ও রাশিয়াসহ আরও কিছু দেশ।
আরও পড়ুন: খোঁজ মিলল পৃথিবীর আধা-চাঁদের!
আধুনিক বিশ্বে
মানুষের সক্ষমতার অনন্য এক নিদর্শন আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র আইএসএস। আনুষ্ঠানিক
যাত্রায় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মহাকাশ সংস্থাগুলো
২০০০ সালে তিন নভোচারী পাঠায়। মহাকাশে মানুষের একমাত্র স্থায়ী আবাসস্থল এই মহাকাশ কেদ্র।
স্টেশনটি এপর্যন্ত আশ্রয় দিয়েছে ২০ দেশের আড়াইশ’ও বেশি নভোচারীকে। এটি কখনোই মানবশূন্য থাকেনি। ৬ রুমের স্টেশনে রয়েছে মাইক্রো গ্রেভিটি নিয়ে গবেষণাগার। এছাড়া খাদ্য উৎপাদন, পানি বিশুদ্ধ করাসহ ক্যান্সার আলঝেইমার মতো রোগের চিকিৎসা নিয়েও হয় গবেষণা।
আরও পড়ুন: মানব মস্তিষ্কে চিপ বসানোর অনুমতি পেল মাস্কের নিউরালিংক
উপগ্রহ তৈরিতে
নির্মাতাদের খরচ ১৫ হাজার কোটি ডলার। পরিচালন ব্যয় চারশ’ কোটি ডলার। দুই যুগের দীর্ঘ সফরে
মহাকাশে পর্যটক ভ্রমণ, খাদ্যশস্য উৎপাদন ও সিনেমার শুটিংয়ের মতো অসংখ্য ইতিহাসের সাক্ষী
আন্তর্জাতিক এই মহাকাশ কেন্দ্র। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর আয়ুও কমছে। ২০৩০ সালের পর
এটি ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে।
তাই ২০৩১ সালে আইএসএসকে পুরোপুরি ধ্বংসের পরিকল্পনা নাসার। মহাকাশ যানের কবরস্থান খ্যাত প্রশান্ত মহাসাগরে নিমো পয়েন্টে একে ডোবানো হবে। তবে মহাকাশে মানুষের তৈরি সবচেয়ে বড় স্থাপনাটিকে পৃথিবীতে নামিয়ে আনা চ্যালেঞ্জিং হবে বলেই মনে করেন গবেষকরা।
আরও পড়ুন: এক ফ্রেমে ৪৫ হাজার গ্যালাক্সি!
চারশ’ টনের আইএসএস আয়তনে একটি ফুটবল
মাঠের সমান। পৃথিবীর দিকে ঠেলে আনতে আরেকটি যান ব্যবহার করতে হবে। আর এর নির্মাণ খরচ
দাঁড়াবে প্রায় ১০০ কোটি ডলার।
২০২৬ সাল থেকে
আইএসএসকে পৃথিবীতে আনার কাজ শুরু হবে। বায়ুমণ্ডলের ঘন গ্যাসের স্তরে ঢুকে পড়লে আইএসএসের
গতি থাকবে ঘন্টায় ২৯,০০০ কিলোমিটার। উচ্চগতি ও উত্তাপে স্টেশনটির অনেক অংশই পুড়ে যাবে।