মহেশপুর(ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তবে সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে যত্রতত্র ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইট ভাটাগুলোতে। ফলে ওইসব জমির উর্বতা শক্তি কমে যাচ্ছে।
এ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে আবাদি কৃষি জমির টপসয়েল বা উপরিভাগের মাটি কেটে ইটভাটায় ব্যবহার করছে ইটভাটা মালিকরা। এতে জমির মালিকরা সাময়িকভাবে আর্থিক লাভবান হলেও রাতারাতি অর্থবিত্তের মালিক বনে যাচ্ছেন কিছু আসাধু মাটি খেকো ইটভাটা ব্যবসায়ীরা।
উপজেলা জুড়ে অবাধে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি ভেকু দিয়ে কেটে ট্রাক্টরের মাধ্যমে সেই মাটি ইটভাটায় নিয়ে যাওয়ায় একদিকে গ্রামীণ রাস্তা যেমন ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ।
এ উপজেলায় একাধিক সিন্ডিকেট মাটির ব্যবসায় সক্রিয়। এর সাথে জড়িত ব্যক্তিরা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হাত করে অবাধে কেটে চলেছে কৃষি জমির উপরিভাগের ঊর্বর মাটি।
সরেজমিনে গত ১৩ মার্চ বাঘাডাঙ্গা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ওই গ্রামের মৃত কাদের উদ্দিন হালসান ছেলে নাসির উদ্দিন হালসান, জসিম উদ্দিন হালসান, ফরহাদ উদ্দিন হালসান, মৃত রবিউল মন্ডলের ছেলে মহি উদ্দিন, রজব আলীর ছেলে আনারুল, মুনসুর হালসানের ছেলে হাবিবুর রহমান, মৃত আজিজুর হকের ছেলে আব্দুল সাত্তার তিনমাস ধরে স্কাভেটর ভাড়া করে এনে এলাকার কৃষকদের প্রলোভন দেখিয়ে কৃষি জমির উপরিভাগের টপ সয়েল কেটে নিয়ে উপজেলার সোহাগ ভাটা, করিম ভাটা, মাসুম ভাটা, সুলতান ভাটায় বিক্রি করছেন। ওই মাটি তারা ট্রাক্টর ও লাটাযোগে নিয়ে যাচ্ছেন ওই সকল ইটভাটায়। এছাড়াও ফতেপুর, আজমপুর, মান্দারবাড়িয়া যাদবপুর, পান্তাপারা, নাটিমা ইউপিসহ বিভিন্ন এলাকায় মাটি কাটার প্রতিযোগিতায় নেমেছে মাটি সিন্ডিকেট।
বাঘাডাঙ্গা গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, টাকার লোভে অনেক জমির মালিক মাটি বিক্রিতে ঝুঁকছেন। ১০-১২ ফুট গর্ত করে মাটি বিক্রি হচ্ছে। ফলে পাশের জমির মাটিও ভেঙে পড়ছে। বাধ্য হয়ে ওইসব জমির মাটিও বিক্রি করছেন মালিকরা। স্কাভেটর মেশিন দিয়ে রাতের আধারে এসব মাটি কাটা হচ্ছে। কিছু বললে হুমকি দিচ্ছেন তারা।
এ ব্যাপারে নেপা ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, এর আগে ওই স্থানে মাটি কাটা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পুনরায় মাটি কাটছে কিনা জানা নেই যদি কাটে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।