
মহেশপুর(ঝিনাইদহ)প্রতিনিধি:
রাস্তার মাটি সড়াতে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউপির ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নাসির উদ্দীর সভাপতি-স্ত্রী ঝর্ণা খাতুন ও বড় ভাইসহ নিকট আত্নীয়দেরকে সদস্য বানিয়ে প্রকল্প কমিটি তৈরি করে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টি,আর) বিশেষ-৮৪(১ম-পর্যায়) দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। এই প্রতিবেদকের হাতে সেই প্রকল্প কমিটির একটি চিঠিও এসে পৌঁছেছে। সেখানে ইউপি সদস্য নাসির উদ্দীন সভাপতি স্ত্রী সম্পাদক, আপন বড় ভাইসহ নিকট আত্নীয়দেরকে সদস্য করে ৫ সদস্যে বিশিষ্ঠ প্রকল্প কমিটি দেখানো হয়েছে।
জানা যায়, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টি,আর) বিশেষ-৮৪(১ম-পর্যায়)মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউপির ৭নং ওয়ার্ডের চুন্নিরআইট “চুন্নিরআইট হোসেন আলির বাড়ি হতে নুরুজ্জামানের বাড়িপর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণের জন্য দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্ত ইউপি সদস্য সে প্রকল্পের কোন কাজ না করে প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে দেখিয়ে প্রকল্প কর্মকর্তাদের যোগসাজসে মাস্টাররোল ও হিসাবপত্র/ভাউচারাদী জমা দিয়ে দেড় লাখ টাকা উত্তোলন করে। এতে করে ইউপি সদস্য নাসির উদ্দীন ও প্রকল্প দেখ ভালের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের পকেট ভোড়লেও সরকারি টাকা জলে গেছে।
প্রকল্প স্থানে গিয়ে দেখা যায়, এস্টিমেট অনুযায়ী দেড় লাখ টাকা বরাদ্ধে ২২৬.৫৬ ঘনমিটার মাটির কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এবং ১০৮৮.২০৫ বর্গমিটার রাস্তা লেভেলিং/ড্রেসিং/ক্যাম্বারিং,পার্শ্ব ঢাল ঠিককরণ ইত্যাদি যাবতীয় কাজ সম্পাদন করা হয়েছে।
কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বলেন, খাল কাটা মাটি রাস্তার উপর ফেলার কারণে রাস্তাটি উচু-নিচু হয়ে ছিলো। যে কারণে মাঠের ফসল বাড়িতে নিয়ে যাওয়াসহ রাস্তা দিয়ে চলাচলে এলাকাবাসীর অসুবিধা হচ্ছিলো। রাস্তার উপরে পরে থাকা মাটি অপসারণের জন্য এলাকাবাসী ইউপি সদস্যসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানান।
কিছুদিন পর তাদের অনুমতিক্রমে নাসির মেম্বার ভেকু দিয়ে কেটে কয়েক শত গাড়ি মাটি সেখান থেকে বিক্রি করে দিয়ে রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করে তোলেন।
মাটি সড়ানো বাবদ দেড় লাখ টাকা বরাদ্দের বিষয়ে তারা বলেন, এখানে বরাদ্দের কি দরকার ছিলো, মাটি বেঁচে রাস্তা সমান করে মেম্বার তো এমনিতে লাখ-দুয়েক টাকা কামিয়েছে। এছাড়াও, যদি এলাকাবাসিকে উপজেলা প্রশাসন মাটি নেওয়ার অনুমতি দিতো তাহলে মাটি বিক্রি করে তারা লাভবানসহ রাস্তাটি তাদের মতো করে নিতো।
প্রকল্প সভাপতি ও ইউপি সদস্য নাসির উদ্দীর বলেন, রাস্তা লেভেলিং করতে মাটি সড়িয়ে বিভিন্ন স্থানে দেওয়া হয়েছে। আর যে বরাদ্দ পেয়েছি সে টাকায় এত কাজ করা সম্ভব না, সে কারণে কিছু মাটি বিক্রি করেছি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেরুন নেছা বলেন, রাস্তা লেভেলিং/ড্রেসিং/ক্যাম্বারিং করার জন্য ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুমতিক্রমে ছোট একটি টি,আর দিয়েছি। কাজ হয়েছে গিয়ে দেখে আসতে পারেন।
বাঁশবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা জিন্টু বলেন, রাস্তায় থাকা খালের মাটি আমিওতো নাসির মেম্বারের কাছ থেকে ২১ হাজার টাকা দিয়ে ৩০ গাড়ি(টেক্টর)মাটি কিনে বাঁশবাড়িয়া মোড়ে দিয়েছি। খাল কাটা মাটি রাস্তায় ফেলার কারণে উচু-নিচু রাস্তা লেভেলিং করার জন্য কোন বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে কি না আমার জানা নাই।