মেহেদী মিরাজের
প্রথম শতকে চড়েই ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪৩০ রানের বড় সংগ্রহ
পেয়েছে বাংলাদেশ। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০৩ রানে আউট হন ২৩তম ম্যাচ খেলা এই তরুণ।
জবাব দিতে নেমে একমাত্র পেসার মুস্তাফিজের জোড়া আঘাতে শুরুতেই দুই উইকেট হারালো উইন্ডিজ।
ইনিংসের পঞ্চম
ওভারেই ক্যারিবিয় শিবিরে আঘাত হানেন মুস্তাফিজ। চতুর্থ বলটি ওপেনার জন ক্যাম্পবেলের
ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে প্যাডে আঘাত হানলে জোরালো আবেদন তোলেন ফিজসহ ফিল্ডাররা। যাতে আম্পায়ার
সাড়া না দেয়ায় রিভিউয়ের স্মরণাপন্ন হন মোমিনুল, আর তাতে সফলও হয় বাংলাদেশ। মাত্র ৩
রান করে সাজঘরে ফেরেন বাঁহাতি ওপেনার।
এর পরের বলেই
ক্রিজে নতুন আসা শেন মোসেলিকে লেগ বিফোর দেন আম্পায়ার। তবে এ যাত্রায় রিভিউ নিয়ে বেঁচে
যান এই বাঁহাতি। ৯ ওভারে উইন্ডিজের সংগ্রহ এক উইকেটে ২০ রান। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। সেই
মুস্তাফিজের আঘাতেই ফের আরেকবার রিভিউ নিয়েও রেহায় মেলেনি মোসেলির। সাজঘরে ফেরেন মাত্র
২ রানে। যাতে ২৪ রানেই দ্বিতীয় উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা।
এর আগে সকালের
শুরুতেই লিটন দাস আউট ক্রিজে আসেন মিরাজ। সপ্তম উইকেটে সাকিবের সঙ্গে গড়েন ৬৭ রানের
ইনিংসসেরা জুটি। লাঞ্চের ঠিক আগেই সাকিবের আউটের মধ্যদিয়ে ভাঙ্গে এই জুটি। সেঞ্চুরির
আশা জাগিয়েও আক্ষেপ নিয়ে সবাইকে হতাশ করে ফেরেন সাকিব।
তবে মধ্যাহ্ন
বিরতির পরে মাঠে ফিরেই অর্ধশতক হাঁকান মিরাজ। টেস্ট ক্যারিয়ারে যা ছিল তার তৃতীয় ফিফটি।
অর্ধশতক পূরণ করার পরেই রাকীম কর্নওয়ালের ওপর চড়াও হন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ডাউন
দ্য উইকেটে এসে চার মারার পরের বলেই আবার শট হাঁকিয়ে লং অনে তালুবন্দী হয়েছিলেন, তবে
ফিল্ডার ভারসাম্য হারিয়ে বলটি ধরে রাখতে না পারায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান মিরাজ।
সাকিবের ফেরার
পরে মিরাজকে ভালো সমর্থন দিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। বেশ ধৈর্য্যের সাথে রক্ষণাত্মক ব্যাটিং
করেছেন তিনি। তার ৭২ বলের ইনিংসটির সমাপ্তি ঘটে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বলে উইকেটরক্ষক
জসুয়া ডা সিলভার তালুবন্দী হয়ে। তাইজুলের ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান। তার আগে মিরাজের সাথে
গড়েছিলেন ১১৭ বলে ৪৪ রানের জুটি।
তাইজুলের বিদায়ের
পরে মিরাজের সঙ্গী হন আরেক তরুণ নাঈম হাসান। মিরাজ ও নাঈমের জুটিতে বেশ দ্রুত রান উঠতে
থাকে। এরইমাঝে কর্নওয়ালের বলে নাঈমকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে
দেখা যায় বলটি স্ট্যাম্পে আঘাত হানেনি, ফলে সেই যাত্রায় বেঁচে যান নাঈম।
দ্রুত রান তুলতে
থাকা নাঈম পার্ট টাইম বোলার নক্রুমাহ বনারের কাছে পরাস্ত হন। তার ব্যাট ছুঁয়ে বল স্ট্যাম্পে
আঘাত হানে। ২৪ রান করা নাঈম ফিরলেও সঙ্গীর অভাবে নিজের ওপর আস্থা হারাননি মিরাজ। একপ্রান্ত
আগলে রেখে বাংলাদেশকে ঠিকই এগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি পৌঁছে যান নিজের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে।
তৃতীয় ফিফটিকে
ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে রূপ দেন এই স্পিনিং অলরাউন্ডার। শেষ ম্যান মুস্তাফিজুর
রহমানকে নিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। সেঞ্চুরির পরে বেশ আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন এবং
লং অনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। তার আগে মিরাজের ব্যাট থেকে আসে ১০৩ রান। ২২৪ মিনিট
ব্যাপ্তি তার ১৬৮ বলের ওই অনবদ্য ইনিংসে ছিল ১৩টি দৃষ্টিনন্দন চারের মার। যাতে বাংলাদেশের
সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪৩০ রান।
দ্বিতীয় দিনের
শুরুতেই সাজঘরে ফিরেছিলেন লিটন দাস। তিনি করেন ৬৭ বলে ৩৮ রান। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে
সাকিবও আউট হয়ে যান। তার ব্যাট থেকে আসে ৬৮ রান। সাকিবের ১৫০ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৫টি
চার।