৭৫৫ বছরের একটি পুরোনো ঐতিহাসিক মসজিদ
খুলে দিলো উত্তর আফ্রিকার দেশ মিশর। দীর্ঘ সংস্কারের পর ত্রয়োদশ শতকে নির্মিত এই মসজিদটি
সোমবার (৫ জুন) খুলে দেওয়া হয়।
অতীতে এই মসজিদটি কখনও সাবান কারখানা এবং
আবার কখনও দুর্গ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছিল। মঙ্গলবার (৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে
বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার মিশরের রাজধানী
কায়রোতে ত্রয়োদশ শতকের একটি ঐতিহাসিক মসজিদ পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে। ঐতিহাসিক এই মসজিদটি
অতীতে বছরের পর বছর ধরে সাবান কারখানা, কসাইখানা এবং দুর্গ হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল।
তবে দীর্ঘ সংস্কারের পর সোমবার সেটি ফের চালু করা হয়।
আরও পড়ুন: বন্যা ও খরায় ৫০ বছরে ২০ লাখ মানুষের মৃত্যু : জাতিসংঘ
রয়টার্স বলছে, সোমবার খুলে দেওয়া এই মসজিদটির
নাম আল-জাহির বেবারস মসজিদ। ১২৬৮ সালে মামলুক শাসনের অধীনে নির্মিত এই মসজিদটি মধ্য
কায়রোর ঠিক উত্তরে তিন একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এটি মিশরের তৃতীয় বৃহত্তম মসজিদ।
মসজিদটির সংস্কার কাজের তত্ত্বাবধান করেন
তারেক মোহাম্মদ আল-বেহারি। তিনি বলছেন, মসজিদটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য
যান্ত্রিক ও রাসায়নিক সংস্কার কার্যক্রম চালানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মসজিদের কিছু
অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে, কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে কারণ সেগুলো মসজিদের অংশ হিসেবে থাকার
জন্য কাঠামোগতভাবে অনুপযুক্ত ছিল। তবে আমরা সঠিক প্রত্নতাত্ত্বিক শৈলী অনুসারে কাজ
করার জন্য, এমনকি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়াতেও সেটি মেনে চলার জন্য খুব আগ্রহী ছিলাম।’
আরও পড়ুন: সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান প্রার্থী
রয়টার্স বলছে, ঐতিহাসিক এই মসজিদটির সংস্কার
কার্যক্রমে ব্যয় হয়েছে ৭৬ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। কাজাখস্তানের সাথে সহ-অর্থায়নের
মাধ্যমে ২০০৭ সালে এই সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, নির্মিত হওয়ার পর
থেকে মসজিদটি ধর্মীয়ভাবেই চালু ছিল। তবে গত ২২৫ বছর ধরে মসজিদটি হয় বন্ধ ছিল, আর না
হয় পরিত্যক্ত বা অ-ধর্মীয় উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়ে আসছিল। আর এর ফলেই ঐতিহাসিক এই
মসজিদটি ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়।
রয়টার্স বলছে, মিশরে নেপোলিয়নের অভিযানের সময় এই মসজিদটি একটি সামরিক দুর্গ হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। তারপর ১৯ শতকে অটোমান শাসনের অধীনে এটি সাবান কারখানা হিসাবে ব্যবহৃত হয়। পরে ১৮৮২ সালে ব্রিটিশরা মিশরে আক্রমণ করলে এটি একটি কসাইখানা হিসাবে ব্যবহৃত হয়।