নেত্রকোনা প্রতিনিধি:
নেত্রকোনা কলমাকান্দা থানায় অপহরণ ও সহায়তা করার অপরাধে এক যুগ আগে মারা যাওয়া ব্যক্তির নামে মামলা করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তির আব্দুর রশিদ। তিনি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের পাঁচকাটা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাদি (৬২) তার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে (১৬) অপহরণের দায়ে মো. জুয়েল মিয়াকে (৩২) প্রধান আসামি ও এ কাজে সহায়তাকারী হিসেবে তার আরও চার ভাই ও বাবার নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা দায়ের করেন। কিন্তু আসামিদের বাবা আব্দুর রশিদ এক যুগ আগেই মারা গেছেন।
এ মামলায় অন্যান্য আসামিরা হলেন- প্রধান আসামির চার ভাই কাউসার মিয়া (৪০), মোবারক (৩৫), মিনারুল (৩০) ও জামিরুল (২৫) এবং তাদের বাবা আ. রশিদ (৬৫)।
শুক্রবার সকালে থানার ওসি মো. আবদুল আহাদ খান অপহরণ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অপহৃতাকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। কিভাবে কোন পথ দিয়ে গিয়েছে তা সনাক্ত করা হয়েছে। এ কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইককেল জব্দ করা হয়েছে। আসামিকে অচিরেই আটক করা সম্ভব হবে। বাদি যদি মৃত ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে থাকেন তা তদন্তের সময় বের হবে। সে মোতবেক চার্জশিট দেওয়া হবে।
মামলার এজাহারে বর্ণনা, ভিকটিম (বাদির মেয়ে) কলমাকান্দা সদরে একটি বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গান বাজনা করেন। জুয়েল মিয়া তিন সন্তানের জনক ও গান বাজনা অনুষ্ঠানের ভিডিও ধারণ করেন। এ কারণে দুজনে পরিচিত থাকায় ভিকটিমের পরিবারে যাতায়াত ছিল। জুয়েল মিয়া প্রায় সময় কু অঙ্গভঙ্গি ও আচরণ এবং মন ভুলানোর কথাবার্তা বলে ভিকটিমকে উত্যক্ত করতেন। বাধা নিষেধ সত্তে¡ও কর্ণপাত না করে ভিকটিমের প্রতি অসদাচরণ ও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন প্রধান আসামি। বিয়ে না দিলে ভিকটিমকে অপহরণের হুমকি দেন জুয়েল মিয়া। প্রধান আসামির ভাইদেরকে বিষয়টি অবগত করলেও তারা কোন সমাধান দেন নাই বরং বিয়ের দেয়ার জন্য তারাও চাপ দিতে থাকেন ভিকটিমের পরিবারকে।
সাবেক ইউপি সদস্য ও পাঁচকাটা গ্রামের বাসিন্দা মানিক মিয়া জানান, স্কুল পড়ূয়া মেয়ের সাথে এ ধরনের কাজ করে থাকলে তা অবশ্যই নিন্দনীয় ও এর সঠিক বিচার চাই। তবে মামলার আসামি আ. রশিদ একযুগ আগেই মারা গেছেন। মৃত মানুষকে আসামি করায় গ্রামের মানুষের মধ্যে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। জুয়েলের এমন কর্মকাণ্ডকে গ্রামের লোকজন ব্যাপক নিন্দা ও সমালোচনা করছে।
মামলার বাদি জানান, আসামিদের বাবা মৃত বিষয়টি জানা ছিল না।
গত বৃহস্পতিবার সকালে ভিকটিম জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য বাড়ি থেকে বের হন। বাড়িতে ফিরে না আসায় খোঁজাখুজি করে বাদি জানতে পারেন, উপজেলা পরিষদের মোড় হতে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে অটোরিকশায় (সিএনজি) তুলে অপহরণ করেন প্রধান আসামি জুয়েল মিয়া।