পীরগঞ্জে ধর্মীয়
উসকানিতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে রোজগার সব উপায় শেষ হয়ে গেছে ভূমিহীন
দেবেন্দ্রনাথের (৫৪)। প্রায় দেড় লাখ টাকা মূল্যের দুটি গরু পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। পুড়ে
ছাই হয়ে গেছে তাঁর তিনটি ঘর। পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই নেই আর। খাল, বিলে মাছ ধরে হাট-বাজারে
বিক্রি করতেন তিনি। সেই রোজগারের একমাত্র জালটিও পুড়ে গেছে।
আজ সোমবার বিকেলে
উপজেলার বড় করিমপুর কসবা হিন্দু পল্লি মাঝিপাড়ায় (জেলে পল্লি) পুড়ে যাওয়া বাড়ির সামনে
কথা হয় ভূপেন্দ্রনাথের ছেলে দেবেন্দ্রনাথের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বউ, চার ছেলে
আর এক মেয়ে নিয়ে হামরা বাড়িত থাকি। হামার তিনটা মাটির ঘর। রোববার রাত ৯টার দিকত আমি
বাজারোত মাছ ব্যাচার সময় খবর পাই, বাড়িত আগুন লাগছে।
রাত ১০টার দিকে
আসি দেকি সব ঘরে দাউ দাউ করি আগুন জ্বলেছে। গোয়াল ঘরে দুটা গরু আছিলো। সেগুলা পুড়ি
ছাই হয়া গেছে। কয়েকদিন আগে গাভীটা ১ লাখ ১০ হাজার টাকা আর বাছুরটা ৩৫ হাজার টাকা দাম
করছিল। কিন্তু দাম বেশি হওয়ার আশায় ব্যাচো নাই। একন কী হবি মোর!
কান্না জড়িত কণ্ঠে
তিনি আরও বলেন, ‘হামার বাপের মাত্র আড়াই শতক জমি বেচি ৯
শতক জমি কিনি বাড়ি করি। আবাদি জমি নাই। নদী, নালায় জাল দিয়া মাছ ধরি বেচি সংসার চালাই।
বাড়িও করি। মোর নাকান এই গাঁওত আরও ৫০-৬০ জন হেন্দু মানুষ মাছ ধরি জেবন চলাই। আর আজ
মোর সউগ পুড়ি ছাই হয়্যা গেছে। মুই একন পতের ফকির। মোর জালটাও গেছে।
দেবেন্দ্রনাথের
পরিবারটি এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। এমনই প্রায় ৫০টি পরিবার খোলা আকাশের নিচে
রয়েছে ওই মাঝিপাড়ায়।
আজ জেলা প্রশাসনের
পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ৭৭টি পরিবারকে খাদ্য, বস্ত্র সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।