রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব বিশ্বের সব দেশেই কম বেশি পড়েছে। বাদ যায়নি সিঙ্গাপুরও। এ যুদ্ধের প্রভাবে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির চাপ বেড়েছে। এজন্য মূল্যস্ফীতি কমাতে মুদ্রানীতি আরো কঠোর করল সিঙ্গাপুর। গত বছরের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত চতুর্থবারের মতো এ নীতি কঠোর করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। খবর নিক্কেই এশিয়া।
নগররাষ্ট্রটির প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিল-জুন পর্যন্ত দেশটির অর্থনীতি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ প্রসারিত হয়েছে। এ হার আগের তিন মাসের ৪ শতাংশের চেয়ে বেশি। সুদের হারের পরিবর্তে সিঙ্গাপুরের মুদ্রানীতি বিনিময় হারের ওপর ভিত্তি করেই স্থানীয় বাজারে ডলারের বিনিময় হার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে।
মনিটারি অথরিটি অব সিঙ্গাপুর (এমএএস) এক বিবৃতিতে জানায়, মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস ৩ থেকে বাড়িয়ে ৪ শতাংশ করা হয়েছে, যা চলতি বছরের প্রথম পূর্বাভাসে ২ দশমিক ৫ থেকে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হয়েছিল। অন্যদিকে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেন্ট্রাল ব্যাংক অব সিঙ্গাপুর জানায়, সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির চাপ আগামী মাসগুলোয় অব্যাহত থাকবে। যদিও বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থা সহজ হতে শুরু করেছে। এপ্রিল-জুন পর্যন্ত মোট দেশীয় পণ্যের পরিসংখ্যানও ত্বরান্বিত রয়েছে। যদিও এ চিত্র পূর্বাভাসের চেয়েও নিম্নস্তরে। রয়টার্সের জরিপে অর্থনীতিবিদরা এ সময়ের জন্য ৫ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির অনুমান করেছিলেন। দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় জানায়, উৎপাদন খাতে বেড়েছে ৮ শতাংশ। পাশাপাশি সেবা খাতে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ এবং নির্মাণশিল্প ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।
নগররাষ্ট্রটির সরকারের প্রত্যাশা, চলতি বছর বার্ষিক জিডিপি বৃদ্ধির হার ৩-৫ শতাংশ হবে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি ও খাদ্য সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় প্রবৃদ্ধির পরিমাণ কমতে পারে। গত বছর দেশটির অর্থনীতি ৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছিল, যা এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। কভিডজনিত কারণে ২০২০ সালে ৪ দশমিক ১ শতাংশ সংকোচনের পরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ফিরে এসেছে দেশটি। প্রাথমিক জিডিপির এ পরিসংখ্যান মূলত তৈরি করা তিন মাসের প্রথম দুই মাসের ওপর ভিত্তি করে। পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, চলতি বছর দেশটিতে এপ্রিলে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ ও মে মাসে ১২ দশমিক ৪ শতাংশ জ্বালানি তেলবহির্ভূত খাতের রফতানি বেড়েছে এবং এপ্রিলে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ ও মে মাসে ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ উৎপাদন বেড়েছে।