জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা প্রতিপালনে
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নামানোর আগেই তাদের সংখ্যায় কাটছাঁট করেছে নির্বাচন কমিশন
(ইসি)। ম্যাজিস্ট্রেটদের সংখ্যা কমিয়ে বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নতুন করে
চিঠি দিয়েছে কমিশন। এতে ১৫টি পর্যন্ত ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উপজেলায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
নিয়োগের কথা বলা হয়েছে।
যদিও তিনদিন আগে গত ২০ নভেম্বর পাঠানো
চিঠিতে প্রতি তিন ইউনিয়নের জন্য একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের কথা বলা হয়েছিল। নতুন
চিঠি অনুযায়ী, মাঠপর্যায়ে অনেক কম সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেবে জনপ্রশাসন
মন্ত্রণালয়। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আরও জানা গেছে, আগের মতো বৃহস্পতিবারের
চিঠিতেও আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩৯ দিনের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের
মাঠে থাকতে বলা হয়েছে। আচরণবিধি লঙ্ঘন বা পরিস্থিতির অবনতি হলে তারা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা
করবেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। ইসি জানিয়েছে, ভোটের আগেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর
মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হবে। এছাড়া সেনাবাহিনী নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
তাদের সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়ার প্রয়োজন হবে। তখন আরও বেশি সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট
মাঠে থাকবে। এখন বেশি সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নামানোর মতো অবস্থা নেই।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বৃহস্পতিবার পাঠানো
ইসির চিঠিতে কমবেশি ৮০২ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের জন্য বলা হয়েছে। এতে প্রতিটি উপজেলায়
একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের জন্য বলা হয়েছে। যেসব উপজেলায় ১৫টির বেশি
ইউনিয়ন রয়েছে সেখানে দুজন ম্যাজিস্ট্রেট দিতে বলা হয়েছে। এই হিসাবে উপজেলা পর্যায়ে
৫২৫ জন ম্যাজিস্ট্রেট ও পৌরসভা পর্যায়ে ২১০ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের জন্য বলা হয়েছে।
এ ছাড়া সিটি করপোরেশনগুলোর মধ্যে ঢাকা উত্তরে ১১ জন, ঢাকা দক্ষিণে ১৫ জন, চট্টগ্রামে
১০ জন, খুলনায় ৬ জন, গাজীপুরে ৪ জন এবং অন্যান্য সিটি করপোরেশনে তিনজন করে মোট ৬৭ জন
ম্যাজিস্ট্রেট দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
নিয়োগে চিঠি দেয় ইসি। ওই চিঠিতে ন্যূনতম প্রতি তিন ইউনিয়নের জন্য একজন এবং প্রতিটি
পৌরসভার জন্য তিনজন ও বড় পৌরসভার জন্য চারজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিতে বলা হয়। সিটি
করপোরেশনভুক্ত নির্বাচনি আসনগুলোতে প্রতি চার থেকে পাঁচটি ওয়ার্ড এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম
সিটি করপোরেশন এলাকায় সর্বোচ্চ প্রতি তিন ওয়ার্ডের জন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ
দিতে বলা হয়। ওই হিসাবে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হলে প্রায় দুই হাজার ম্যাজিস্ট্রেট
নিয়োগের প্রয়োজন হতো। নতুন চিঠিতে তা কমিয়ে ৮০২ জনে নামাল ইসি।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, স্থানীয়
বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তার নিরীখে বিভাগীয় কমিশনারের পরামর্শক্রমে ডিসিরা উল্লেখিত ম্যাজিস্ট্রেটদের
সংখ্যার কম-বেশি করতে পারবেন। তাছাড়া প্রত্যেক জেলায় ডিসির অধীনে ১ বা ২ জন নির্বাহী
ম্যাজিস্ট্রেট অতিরিক্ত হিসাবে নিয়োজিত রাখতে হবে; যাতে জরুরি প্রয়োজনে যেকোনো স্থানে
দায়িত্ব পালন করতে পারেন।
ভোটগ্রহণের কয়েকদিন আগ থেকে ভোটগ্রহণের
২ দিন পর পর্যন্ত অথবা কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুসারে মোবাইল স্টাইকিং ফোর্সের সঙ্গে বিশেষ
করে বিজিবি বা অনুরূপ বাহিনীর প্রতি টিম বা প্লাটুনের সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
নিয়োজিত করা হবে বিধায় ওই সময় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সংখ্যা কমানোর প্রয়োজন হবে।
মোবাইল স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ ছাড়াও ভোটগ্রহণের
কয়েকদিন আগ থেকে ভোটগ্রহণের পর পর্যন্ত কিছু সংখ্যক এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্বাচনি
এলাকায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজেও নিয়োজিত করার প্রয়োজন হবে।