রাজধানীর গুলিস্তানে সিটি করপোরেশনের ময়লার
গাড়ির ধাক্কায় নটরডেম কলেজের ছাত্র নাঈম হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় দ্বিতীয় দিনেও সড়কে
নেমে বিক্ষোভ করছেন রাজধানীর বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পর রাজধানীর গুলিস্তান
জিরো পয়েন্টে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। নটরডেম কলেজসহ
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন। রাজধানীর তেজগাঁও ও উত্তরায়ও শিক্ষার্থীরা
বিক্ষোভ করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
এ সময় শিক্ষার্থীদের 'আমার ভাই কবরে, খুনি
কেন বাইরে', 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
ফার্মগেটে আন্দোলন করছেন তেজগাঁও সরকারি
বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেখানে এক শিক্ষার্থী মাইকে বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে
সড়কে গাড়িচাপায় অনেক শিক্ষার্থী মারা গেছে। এরপরে কিছু কিছু ছোট ছোট সমাধান দেওয়া হয়েছে,
কিন্তু আমরা কোনো স্থায়ী সমাধান পাইনি। এই ২১ সালে এসে কালকে যখন নটরডেমের ভাইটা মারা
গেল এটার দায় কে নেবে। এই যে তার বাবার বুকভরা কান্না এটার দায় কে নেবে। এটার কি কোনো
স্থায়ী স্থায়ী সমাধান নেই। কারো কাছে কি নেই।’
এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের
ময়লার গাড়ি কীভাবে একটা ছাত্রের উপর দিয়ে চলে যায়? সে যখন রাস্তায় পড়ে গেল তখন সে হাত
বাড়িয়েছে, কিন্তু গাড়ির চালক তার কোনো কথা শোনেনি। আশেপাশের মানুষ চালককে বলেছে, ভাই
একটু রাখেন, একটা ছেলে নিচে পড়েছে, এরপরেও কীভাবে তার উপর দিয়ে চলে যায়। এর কি কোনো
প্রতিবাদ হবে না।’
তিনি অভিযোগ করেন, নাঈম যখন গাড়ির নিচে
চাপা পড়েন সেখানে পুলিশ উপস্থিত ছিল, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন,
এটা কি পুলিশের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না?
গতকাল বুধবার (২৪ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার
দিকে রাজধানীর গুলিস্তানে সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী গাড়ির ধাক্কায় নটরডেম কলেজের
দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান (১৭) নিহত হন। এর প্রতিবাদে বুধবার বিকাল তিনটা
থেকে মতিঝিলের শাপলা চত্বর ও এর আশপাশের সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস নাঈমের বাবা-মায়ের
সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন।
এদিকে শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় গাড়িচালকের
বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নিহতের বাবা শাহ আলম। চালক নাম রাসেল খানকে গ্রেপ্তার করেছে
পুলিশ। আজ তাকে আদালতে তুলে রিমান্ড চাইবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।