আজঃ শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

নার্সিসাস : গ্রীক পুরাণের আত্মপ্রেমি এক যুবকের উপাখ্যান

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ জুন ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ জুন ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

নার্সিসাস, নার্সিসিজম, নার্সিসিস্ট এই শব্দগুলোর সাথে কমবেশি আমরা সবাই পরিচিত । মূলত আত্মপ্রেম বা আত্মমগ্নতাই নার্সিসিজম এর বৈশিষ্ট্য । আজকাল অতিরিক্ত সেলফি রোগে আক্রান্ত লোক চোখে পড়ে প্রায় সবজায়গাতেই । এরাই নার্সিসিস্ট হিসেবে খ্যাত । আবার নার্সিসাস (Narcissus) বা নার্সিসিসি একটি ডেফোডিল জাতীয় ফুলের নাম । গ্রীক পুরাণ অনুসারে এই ফুলের জন্ম নার্সিসাস নামের একজন অপূর্ব সুন্দর যুবকের দেহ থেকে । আজকের পর্বে আলোচনা করা হবে গ্রিক মিথলজির নার্সিসাসের চমকপ্রদ কাহিনী নিয়ে ।

গ্রীক পুরাণের নদী দেবতা সিফিসাস এবং জলপরী লিরিউপির পুত্র নার্সিসাস । অপূর্ব সৌন্দর্যের অধিকারী নার্সিসাসের রূপের বর্ণনা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব ছিল না । আর এই রূপ মাধূর্যই তাকে অহংকারী আর আত্মগর্বিত যুবকে পরিণত করে । যেকোন মেয়ে এমনি পরীরাও তাকে দেখামাত্রই তার প্রেমে পড়ে যেত । নার্সিসাসের জন্মের পর তার মা তাকে নিয়ে গেলেন এক অন্ধ ভবিষ্যৎ-বক্তা টাইরেসিয়াসের কাছে ছেলের আয়ুষ্কালের ব্যাপারে জানতে । জিজ্ঞেস করলেন, আমার ছেলে কতদিন বাঁচবে? টাইরেসিয়াস বললেন, এই ছেলে একটা লম্বা জীবন পাবে কেবল যদি সে নিজেকে কখনো না দেখে।


কিন্তু ছোটবেলা থেকেই নিজের রূপের প্রশংসা শুনতে শুনতে অদ্ভূত অহংকার জাগে নার্সিসাসের মনে । সে শুধু নর নয় নারীদেরকেও তার তুলনায় রূপে নিকৃষ্ট ভাবা শুরু করে । কারও ভালোবাসায় সাড়া দিতেন না বরং প্রত্যেকেই হয়েছিলেন প্রত্যাখ্যাত ও তার নিষ্ঠুরতার শিকার । তিনি মনে করতেন তার যোগ্য ও সমকক্ষ কেউ নেই। তিনি যখন জানতে পারতেন কোন অপ্সরী তার প্রেমে পড়েছে তাহলে সেই অপ্সরীকে তিনি ঘৃণাভরে অভিশাপ দিতেন বা হত্যা করতেন । একবার এমিনিয়াস নামক এক যুবক নার্সিসাসের প্রেমে মজেছিল ভীষণ রকম। এই এমিনিয়াস তার আরও পুরুষ অনুরাগীদের ইতোমধ্যে ফিরিয়ে দিয়েছে শুধুমাত্র নার্সিসাসকে পাওয়ার জন্য। কিন্তু নার্সিসাস ফিরিয়ে দিল তাকে এবং একটা ছুরি উপহার দিল। এর পেছনে ছিল এক গোপন ষড়যন্ত্র।  নার্সিসাসের গোপন ইচ্ছাও পূরণ হলো সেদিন, যেদিন এমিনিয়াস সেই ছুরি দিয়ে আত্মহত্যা করল নার্সিসাসেরই দরজার সামনে । মিথলজিতে নার্সিসাসের নিষ্ঠুরতার সবচেয়ে বড় উদাহরন হিসেবে দেবী অপ্সরী ইকোর নামটি উল্লেখযোগ্য । ইকো ছিলেন অপূর্ব মিষ্টি কন্ঠস্বরের অধিকারী। কিন্তু দূর্ভাগ্যক্রমে হেরা দেবীর অভিশাপে অন্যের কথার প্রতিধ্বনি ফিরিয়ে দেওয়া ছাড়া নিজে থেকে কোন কথা বলতে পারতো না ইকো । তিনি বাস করতেন গভীর জঙ্গলে ও পাহাড়ে । তার দুর্ভাগ্য আরো গাঢ়তর হয়ে গেল যখন সে নার্সিসাসের প্রেমে পড়লো ।

নার্সিসাস বনে যেত শিকার করার জন্য আর বনপরী ইকোও তাঁর অপেক্ষায় পথ চেয়ে থাকতো । সে নার্সিসাসের পেছনে পেছনে ঘোরে কিন্তু কথা বলতে পারে না তার সাথে । একদিন সুযোগ পেয়ে গেল সে । নার্সিসাস তার সঙ্গীদের ডাকছিল কেউ এখানে আছে? ইকো আনন্দিত স্বরে প্রতিধ্বনি করল শেষ শব্দটি, আছে, আছে । গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ইকোকে নার্সিসাস ডাকলো এসো। ইকো আবারও উৎফুল্ল হয়ে জবাব দিল এসো । আর দুবাহু বাড়িয়ে বেরিয়ে এলো বন থেকে কারণ স্বয়ং নার্সিসাস তাকে ডেকেছে । কিন্তু অহংকারী নার্সিসাস বিরক্তিতে ফিরিয়ে নিলো তার মুখ । সে বললো, ‘’আমি বরং মারা যাবো কিন্তু তোমাকে কাছে আসতে দিব না । ইকো তার লজ্জা লুকানোর জন্য প্রবেশ করলো এর নির্জন গুহায় । তাকে সান্ত্বনা দেবার ক্ষমতা ছিল না কারো । ধীরে ধীরে বেদনা আর কাতরতায় তার শরীরও লীন হয়ে গেলো। শুধু রয়ে গেলো তার কন্ঠস্বর, যা অন্যের উচ্চারিত শব্দকে অনুকরণ করে ।

নার্সিসাস একইভাবে আরো অসংখ্য পরীকে আকৃষ্ট করে শেষে তাদেরকে তাচ্ছিল্যের সাথে দূরে সরিয়ে দিতো। এভাবে অপমানিত হয়ে তারা মন থেকে চাইত যে, ভালোবেসেও ভালোবাসা না পাওয়ার কষ্ট কেমন তা নার্সিসাস একবার বুঝুক। এমন প্রত্যাখাতদের মধ্যে একজন একবার প্রতিশোধের দেবী নেমেসিসের কাছে প্রার্থনা করলো, হে দেবী নেমেসিস, নার্সিসাস যদি কখনো প্রেমে পরেও, সে যেন ভালোবাসা না পায়। নেমেসিস প্রার্থনা শুনেছিলেন এবং নার্সিসাসের ভাগ্য নির্ধারণ করে ফেললেন।


নার্সিসাসের নিয়তি নিয়ে নানান গল্প চালু আছে তবে সবচেয়ে অধিক প্রচলিত গল্পটি এরকম । নার্সিসাস নিজের রূপ নিজ চোখে স্পষ্টভাবে কোনদিন দেখেননি । এই দেখাটাই তার জীবনে পরিণতি ডেকে আনে । হরিণ শিকার করার পর ক্লান্ত নার্সিসাস একদিন পানির আশায় একটি হ্রদের পাড়ে আসলেন যা জগতের সবচেয়ে স্বচ্ছ পানির হ্রদ যেখানে কোনদিন কেউ হাত দেয়নি, কখনো কোন পশু এর পানি পান করেনি। নার্সিসাস যখন পানির জন্য নিচু হলেন তখনি প্রথমবারের মত নিজেকে স্পষ্ট দেখতে পেলেন এবং পানিতে প্রতিফলিত নিজের রূপ দেখে মুগ্ধ বিস্ময়ে বার বার বলতে লাগলেন, এত সুন্দর! এত সুন্দর! নিজের প্রতিফলনকে ছুঁয়ে দেখার জন্য তিনি পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন এবং পানিতে ডুবে মারা গেলেন ।

আরেকটি গল্প আছে যেখানে বলা হয়, একদিন অনেক রৌদ্রের সময় নার্সিসাস একটা জলাশয়ের ধারে এল। সে যখনই জলের দিকে তাকাল, দেখল এক অপূর্ব জলদেবতা জল থেকে তার দিকে তাকিয়ে আছে। সে বুঝতে পারেনি যে ওই প্রতিবিম্ব তারই এবং সাথে সাথেই সে তার প্রতিবিম্বের প্রেমে পড়ে গেল । নার্সিসাস নিচু হয়ে প্রতিবিম্বকে চুমো খেতে গেল । ওই প্রতিবিম্বও তাকে একইভাবে চুমো খেতে এল । এটাকে পারস্পরিক সম্মতি মনে করে নার্সিসাস তার প্রতিবিম্বকে জল থেকে টেনে তোলার জন্য হাত বাড়াল। জলে ঢেউ উঠতেই সেই অপূর্ব জলদেবতা চলে গেল । সে অস্থির হয়ে গেল। কোথায় চলে গেল তার ভালোবাসার মানুষ? যখন জল আবার স্থির হয়ে এল, জলদেবতাও ফিরে এল। নার্সিসাস তাকে জিজ্ঞেস করল, কেনো? হে সুন্দর, কেনো তুমি আমার কাছে থেকে দূরে থাকো, কেনো আমাকে এড়িয়ে যাও ? আমার চেহারা নিশ্চয়ই তোমাকে চলে যেতে বাধ্য করে না! পরীরা আমাকে ভালোবাসে। আমাকে পাওয়ার জন্য তারা ব্যাকুল। তোমাকেও আমার প্রতি বিরক্ত দেখা যাচ্ছে না। যখন আমি আমার বাহু বাড়িয়ে দিই, তুমিও তাই করো। তুমি আমাকে দেখে হাসো এবং আমার মতো তুমিও মাথা নেড়ে সায় দাও। আবার হাত বাড়ালো নার্সিসাস। জলদেবতাও আবার চলে গেল। জল ছুঁলেই জলদেবতা অদৃশ্য হয়ে যায়, এতে নার্সিসাস খুব ভয় পেয়ে গেল। সে আর জলের দিকে হাত বাড়াল না। একদৃষ্টিতে চেয়ে থাকল তার প্রতিবিম্বের প্রতি।  হতাশায় নার্সিসাস শুধু কাঁদত। যেহেতু সে কাঁদত, ইকোও তার সাথে কাঁদত। সে নড়াচড়া করত না, খেত না, কোন কিছু পান করত না। শুধু হতাশায় নিমজ্জিত হতে থাকল । অলীক প্রেমিকের শোকে তার শরীর শুকিয়ে যেতে থাকল, তার সৌন্দর্য ম্লান হতে থাকল । যেসকল পরীরা তাকে ভালোবাসত তারা বারবার তাকে অনুরোধ করল সেই জলাধারের কাছ থেকে সরে আসতে। ইকোও তাদের সাথে সাথে অনুরোধ করল। কিন্তু নার্সিসাস যেন মন্ত্রমুগ্ধের মত অটল রইল। চিরদিনের মত সে জলাধারের পাশেই বসে থাকার ইচ্ছা দেখাল। এভাবে ভুগতে ভুগতে একসময় ইকোর মত নার্সিসাসও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো । ধীরে ধীরে তার শরীরও অদৃশ্য হয়ে গেল । পরীরা শোকে বিলাপ করতে থাকল। যেহেতু পরীরা বিলাপ করতে থাকল, ইকোও তাদের সাথে বিলাপ করতে থাকল। আর মাটিতে মিশে যাওয়া নার্সিসাসের শরীর থেকেই জন্ম নিল সেই ফুল গাছ যা নার্সিসাস ফুল নামে পরিচিত । বাংলায় অবশ্য একে  নার্গিস ফুলও বলা হয় ।


নার্সিসাসের এই স্বভাব থেকেই আত্মকেন্দ্রিকতা বা আত্মপ্রেম বোঝাতে ‘‘নার্সিসিজম’’ শব্দটি চালু হয়েছে । নার্সিসাস কমপ্লেক্সে ভোগা মানুষরা এই মোহ সহজে কাটিয়ে উঠতে পারে না । নার্সিসিজম মূলত পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার বা ব্যক্তিত্বের সংকট। এধরণের মানুষেরা এতই আত্মকেন্দ্রিক হয় যে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন। একজন নার্সিসিস্ট মনে করেন তিনি বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যক্তি । সবার মনোযোগ থাকা উচিৎ তার দিকে।


আরও খবর



২৩৮ বার হেরেও ফের নির্বাচনে লড়বেন পদ্মরাজন

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ২৩৮ বার হারার পরও ফের নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন ভারতের তামিলনাডুর এক ব্যক্তি। আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া লোকসভা নির্বাচনে অংশ নেবেন তিনি। ৬৫ বছর বয়সি ঐ ব্যক্তির নাম কে পদ্মরাজন।

তার টায়ার মেরামতের একটি দোকান রয়েছে। তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়া শুরু করেন ১৯৮৮ সালে। ঐ বছর তামিলনাড়ুর মেটুর থেকে নির্বাচন করেন। যখন তিনি নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেন তখন অনেকে হাসাহাসি করেন।

তবে পদ্মরাজন প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, সাধারণ মানুষও নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। পদ্মরাজন বলেছেন, সব প্রতিদ্বন্দ্বী নির্বাচনে জয় পেতে চায়। কিন্তু আমি নই। আমার জন্য জয় হলো নির্বাচনে অংশ নেওয়া। আমি হারলেও খুশি।’

এবার তামিলনাড়ুর ধর্মপুরী থেকে নির্বাচন করবেন তিনি। পদ্মরাজনকে ইলেকশন কিং’ নামে অভিহিত করে থাকেন তার পরিচিতজনরা। তিনি প্রেসিডেন্সিয়াল থেকে শুরু করে স্থানীয়সহ সব নির্বাচন করেছেন।

নির্বাচনে তিনি হেরেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি ও মনমোহন সিংয়ের কাছে। এছাড়া কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধেও নির্বাচন করেছেন তিনি।

পদ্মরাজন জানিয়েছেন নির্বাচনে জয় পাওয়াটা তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। মূলত নিজের পরাজয়ের তালিকা দীর্ঘ করার লক্ষ্যই এখন তার। এছাড়া কার বিরুদ্ধে নির্বাচন করছেন সেটি নিয়েও তার কোনো চিন্তাভাবনা নেই। পদ্মরাজন বলেছেন, জয় হলো অপ্রধান। বিরোধী প্রতিদ্বন্দ্বী যে-ই হোক, আমি পরোয়া করি না।’


আরও খবর



ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে আজ

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে আজ শুক্রবার (৫ এপ্রিল) থেকে ৮ জোড়া বিশেষ ট্রেন নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে। ৮ জোড়া বিশেষ ট্রেন সম্পর্কে জানা যায়, ঈদুল ফিতরে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল (১ ও ৩) চট্টগ্রাম-চাঁদপুর; চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল (২ ও ৪) চাঁদপুর-চট্টগ্রাম; ময়মনসিংহ ঈদ স্পেশাল (৫ ও ৬) চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম; দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল (৭ ও ৮) ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রুটে শুক্রবার (৫ এপ্রিল) থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এবং ঈদের পরে ৫ দিন চালানো হবে।

কক্সবাজার ঈদ স্পেশাল (৯ ও ১০) চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে ঈদের আগে (৮ ও ৯) এপ্রিল ও ঈদের পরের দিন থেকে ৩ দিন চলাচল করবে।

এছাড়া শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল (১১ ও ১২) ভৈরব বাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব বাজার; শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল (১৩ ও ১৪) ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে শুধু ঈদের দিন চলাচল করবে।

ঈদ স্পেশাল (১৫ ও ১৬) জয়দেবপুর-পার্বতীপুর-জয়দেবপুর রুটে ঈদের আগে ৭-৯ এপ্রিল পর্যন্ত ৩ দিন এবং ঈদের পরের দিন থেকে ৩ দিন চলাচল করবে।


আরও খবর
চাকরি ছাড়লেন দুদকের ১৫ কর্মকর্তা

শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪




ইউনিক পরিবহনের ছিল না ফিটনেস, রুট পারমিট, এমনকি ট্যাক্স টোকেনও

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর এলাকায় ইউনিক পরিবহনের যে বাসের সঙ্গে পিকআপের সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত হন, সেই বাসটি ফিটনেস ছাড়পত্র ও ট্যাক্স টোকেন ছাড়াই তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলাচল করছে।

এমনকি যেই ঢাকা-মাগুরা রুটে দুর্ঘটনাটি হয়, সেই রুটে বাসটি (ঢাকা মেট্রো-ব ১১-১৭৫৯) চলাচলের অনুমোদনও ছিল না।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বাসটির চট্টগ্রাম-বগুড়া রুটে চালানোর অনুমোদন থাকলেও ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে তা আর হালনাগাদ করা হয়নি।

কিন্তু সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর বেশ কয়েকটি ধারা লঙ্ঘন করে কর্তৃপক্ষের চোখের সামনেই দূরপাল্লার এই বাসটি চলাচল করেছে।

অন্যদিকে যে পিকআপের সঙ্গে বাসটির সংঘর্ষ হয়, পণ্য পরিবহনের সেই পিকআপটিও বিধি লঙ্ঘন করে যাত্রী পরিবহন করছিল।

ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর এলাকায় ঘটা এই দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আরও অনেকে আহতও হয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, হতাহতরা সবাই পিকআপের (যশোর-ন ১১-১৩৩৯) যাত্রী ছিলেন।

বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, বাসটি সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বার্ষিক ফিটনেস ছাড়পত্র নেয় এবং ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এর মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।

সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ৭৫ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ফিটনেস ছাড়পত্র ছাড়া গাড়ি চালালে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বিআরটিএ সূত্র জানায়, বাসটি সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ট্যাক্স টোকেন হালনাগাদ করে, যার মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের নভেম্বরে।

সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ৭৬ ধারা অনুযায়ী, মেয়াদোত্তীর্ণ ট্যাক্স টোকেন নিয়ে গাড়ি চালালে কোনো ব্যক্তিকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে।

বাসটি চট্টগ্রাম-বগুড়া রুটে চলাচলের অনুমতি পেয়েছিল। কিন্তু ২০২১ সালের ডিসেম্বরে রুট পারমিটের মেয়াদও শেষ হয়ে যায় বলে সূত্র জানিয়েছে।

সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ৭৭ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি রুট পারমিট ছাড়া গাড়ি চালালে তিন মাসের কারাদণ্ড বা ২০ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বাসটির মালিক কে?

বিআরটিএর নথি অনুযায়ী, ইউনিক পরিবহনের সেই বাসটির মালিক ঢাকার তেজগাঁও এলাকার ইসহাক মিয়ার ছেলে শামসুল হুদা।

শামসুল হুদার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পাঁচ-ছয় বছর আগে তিনি নাজমুল হোসেন নামে একজনের কাছে বাসটি বিক্রি করেছেন।

কিন্তু বাসটি শামসুল হুদার কোম্পানি ইউনিক পরিবহনের ব্যানার ব্যবহার করছিল।

নতুন মালিক তার প্রতিষ্ঠানের ব্যানার ব্যবহার করতে পারবেন কি না, জানতে চাইলে শামসুল হক বলেন, তারা এটা ব্যবহার করতে পারবে না। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে, অনেক বাস এই পদ্ধতি অবলম্বন করে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে শামসুল হুদা জানান, তিনি বাসটির নতুন মালিককে বিক্রয় রশিদ দিয়েছেন। কিন্তু নতুন মালিক কেন বিআরটিএতে গিয়ে মালিকানা দলিল পরিবর্তন করেননি, তা তিনি জানেন না।

বিষয়টি নিয়ে করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বাসটির রুট পারমিট বা ফিটনেস ক্লিয়ারেন্স না থাকার বিষয়টি আমার জানা নেই।

টেলিফোনে তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করব এবং তখন সবকিছু প্রকাশ করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত জানতে পেরেছি বাসটির বিরুদ্ধে অন্তত পাঁচটি মামলা হয়েছে।


আরও খবর



নিজের জন্য জামা পরি না, অন্যের ভালো লাগবে বলে পরি : অপরাজিতা

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য। কাজ করেছেন একাধিক ধারাবাহিক সিরিয়ালে। অভিনয়ের পাশাপাশি ব্যক্তিজীবন নিয়ে বেশ সাহসী এই অভিনেত্রী। কোনো কিছু নিয়েই রাখঢাক রাখেন না তিনি।

সম্প্রতি আনন্দবাজারের মুখোমুখি হয়েছিলেন অপরাজিতা। কথা বলেছেন বিয়ে, সংসার থেকে শুরু করে নিজের পোশাক পরিচ্ছেদ নিয়ে। বিশেষ করে অভিনেত্রীর শাড়ি পরিধান নিয়ে কম কটাক্ষের শিকার হতে হয়নি নেটিজেনদের।

এ বিষয়ে আনন্দবাজারকে অপরাজিতা বলেন, শাড়ি পরার এই ধরন নিয়ে কিছু একটা চলছে। তবে কে কী বলেছেন, সেটা না জেনে কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না। আমার মনে হয়, কে কীভাবে শাড়ি পরবেন, সেটা তার ব্যক্তিত্বের উপর নির্ভর করে। আমার খুব ভালো চেহারা, আমি চাই মানুষের প্রশংসার তীব্রতা আমাকে আকর্ষণ করুক। তার চোখে দারুণ দেখতে লাগছে। কেউ যদি লো কাট ব্লাউজের সঙ্গে শিফন শাড়ি পরেন, তিনি যদি আত্মবিশ্বাসী হন, তাহলে পরবেন।’

অভিনেত্রী বলেন, আমরা তো নিজের জন্য জামা-কাপড় পরি না, অন্যের আমাকে ভাল লাগবে বলে পরি। মানুষ যদি শুধু নিজের জন্য জামা-কাপড় পরতেন, তাহলে তো ম্যাক্সি পরেই কেটে যেত। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত মত, আমি নিজে এমন পোশাক পরব যা সর্বজনগ্রাহ্য। পোশাকের মাধ্যমে কোনও ব্যক্তি কী ধরনের বার্তা দিতে চাইছেন, সেটা তার মানসিকতার উপর নির্ভর করে।’

বর্তমান সময়ের রিলেশনশিপ নিয়ে অপরাজিতা বলেন, আমরা পারফেকশন’ খুঁজতে গিয়ে গোলমালটা করে বসি। এই জীবন, প্রকৃতি কোনও কিছুই কি নিখুঁত? আসলে আমরা ভালোবাসি যখন-তখন, কোনও মানুষের গুণ দেখে। কিন্তু ভালোবাসি বলেই কোনও মানুষের শর্তাধীন নই। একে অপরের মর্জি মতো চলা, বা সারাক্ষণ পছন্দ-অপছন্দ মাথায় নিয়ে চলা মানে তো চুক্তির মতো। আমি যদি আশা করে থাকি আমার বর হৃতিক রোশনের মতো দেখতে হবে, তাহলে তো আমার সংসারে অশান্তি হবে।


আরও খবর
নতুন খবর দিলেন বিদ্যা সিনহা মিম

বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪

নিজেকে দেখে নিজেই মুগ্ধ পরীমণি

বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪




বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সোনার দাম

প্রকাশিত:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সোনার দাম। এতে ঘটছে একের পর এক রেকর্ড। সর্বশেষ কার্যদিবস শুক্রবারও সোনার দামে বড় উত্থান হয়েছে। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে দামি এই ধাতু। প্রথমবারের মতো এক আউন্স সোনার দাম দুই হাজার ২৩০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

শুধু শুক্রবার নয়, মার্চজুড়েই বিশ্ববাজারে সোনার দাম এমন লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহেই প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ৫১ দশমিক ৪৬ ডলার বা দুই দশমিক ২৬ শতাংশ। মার্চ মাসে বেড়েছে ১৮৯ দশমিক ২০ ডলার বা নয় দশমিক ২৬ শতাংশ।

গত সপ্তাহজুড়ে বিশ্ববাজারে সোনার দামে বড় উত্থান হলেও এখনো দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকলে এবং স্থানীয় বাজারে সোনার চাহিদা বাড়লে ও তেজাবী সোনার দাম বাড়লে নতুন করে আবার দাম বাড়ানো হতে পারে।

এ বিষয়ে বাজুসের দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, সোনার অস্বাভাবিক দাম হওয়ার কারণে দেশের বাজারে বিক্রি অনেক কমে গেছে। তবে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকলে এবং স্থানীয় বাজারে চাহিদা বাড়লে নতুন করে সোনার দাম বাড়ানো হতে পারে। এ জন্য আগামী কয়েকদিন স্থানীয় বাজারের চিত্র পর্যবেক্ষণ করবে বাজুস।

নতুন করে দাম বাড়ানো হলে বাংলাদেশের বাজারেও সোনার দামে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হবে। অবশ্য বর্তমানে রেকর্ড দামেই বিক্রি হচ্ছে দামি এই ধাতু। দেশের বাজারে সোনার দাম সর্বশেষ নির্ধারণ করা হয় গত ২১ মার্চ, যা কার্যকর হয় ২২ মার্চ থেকে।

বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম বাড়ার কারণ উল্লেখ করে সেদিন সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম দুই হাজার ৯১৬ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করে হয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার ৭৪ টাকা।

এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম দুই হাজার ৭৪১ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ আট হাজার ৮৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম দুই হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়িয়ে ৯৩ হাজার ৩১২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৯৮৩ টাকা বাড়িয়ে ৭৭ হাজার ৭৯৯ টাকা নির্ধারণ করে। দেশের বাজারে সোনার এত দাম আগে কখনো হয়নি। বর্তমানে এই দামেই সোনা বিক্রি হচ্ছে।

অবশ্য সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের এর থেকে বেশি অর্থ গুনতে হচ্ছে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর পাঁচ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে সোনার গহনা বিক্রি করা হয়। সেই সঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম তিন হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে রোববার (৩১ মার্চ) থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের এক লাখ ২৩ হাজার ২৭৭ টাকা গুনতে হচ্ছে।

দেশের বাজারে সর্বশেষ যখন সোনার দাম নির্ধারণ করা হয়, সে সময় বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল দুই হাজার ১৫৫ ডলারের কাছাকাছি। অর্থাৎ দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর পর এরই মধ্যে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৮০ ডলারের মতো বেড়ে গেছে।

বিশ্ববাজারের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত সপ্তাহের শুরুতে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল দুই হাজার ১৮০ দশমিক ৯২ ডলার। সেখান থেকে বেড়ে এখন প্রতি আউন্স সোনার দাম দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২৩২ দশমিক ৩৮ ডলার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ৫১ দশমিক ৪৬ ডলার বা দুই দশমিক ২৬ শতাংশ।

আর মার্চ মাসেরে শুরুতে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল দুই হাজার ৪৩ দশমিক ৬৩ ডলার। অর্থাৎ মাসের ব্যবধানে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ১৮৯ দশমিক ২০ ডলার বা নয় দশমিক ২৬ শতাংশ।

এদিকে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, চলতি বছর প্রতি আউন্স সোনার দাম দুই হাজার ৩০০ ডলার হয়ে যেতে পারে। এ বিষয়ে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংর চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের যে রেকর্ডটা আমরা দেখেছি প্রতি আউন্স সোনার দাম দুই হাজার ৩০০ ডলার এই বছর হয়ে যেতে পারে।

তিনি বলেন, বিশ্বাবাজারে সোনার দাম বাড়ছে, আমাদেরকেও তার সঙ্গে তালমিলিয়ে চলতে হবে। আমরা বেশি দামে কিনলে, বেশি দামে বিক্রি করবো। এর বিকল্প নেই। দাম বেশি হওয়ার কারণে এখন আমাদের সেল কম হচ্ছে। দামটা মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। দামটা কমলে হয় তো তখন মানুষ আবার কেনাকাটা শুরু করবে।


আরও খবর