শরীয়তপুরের নড়িয়ায় কীর্তিনাশা নদী থেকে দুই কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তারা ঈদে বেড়াতে এসে নদীতে গোসল করতে নেমে প্রাণ হারিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। বুধবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার নশাসন ইউনিয়নের শাওরা গ্ৰামের পাশে নদী থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
মারা যাওয়া দুই কিশোরী হলো উপজেলার নয়ন মাদবরকান্দি গ্রামের শওকত আলী খানের মেয়ে সুচনা (১৪) এবং রাজনগর এলাকার কামরুজ্জামানের মেয়ে আফরিন জামান মৌ (১৫)। সূচনা সপ্তম এবং মৌ অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
পুলিশ ও স্বজনরা জানায়, ঈদের পরদিন গাজীপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে শাওরা গ্ৰামের ফুপুর বাড়ি বেড়াতে আসে মৌ, আর বোনের বাড়িতে আসে সূচনা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ির কাছেই কীর্তিনাশা নদীতে স্থানীয় আরও ৫-৬ জন সমবয়সীর সঙ্গে গোসল করতে যায় মৌ ও সূচনা। এসময় পানির নিচে তলিয়ে যায় তারা দুজনসহ তিনজন। গোসল করতে আসা অন্যদের চিৎকারে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তখন একজনকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও খোঁজ মিলছিল না মৌ আর সূচনার। প্রায় দেড় ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর নদীর তীর থেকে ভাসমান অবস্থায় দুইজনকে উদ্ধার করা হয়। দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
মৌর বাবা কামরুজ্জামান বলেন, ‘ঈদের পরদিন ছেলে-মেয়েকে নিয়ে গ্ৰামের বাড়ি বেড়াতে আসি। আজ গাজীপুরে ফেরার কথা ছিল। দুপুরে আমার অজান্তেই নদীতে গোসল করতে যায় মৌ। পরে খবর পাই নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আমি এখন কাকে নিয়ে ফিরবো? মেয়ে এভাবে আমাদের ছেড়ে চলে যাবে কোনোদিন ভাবতেই পারিনি।’
দুই কিশোরীকে উদ্ধার করা শহিদুল বলেন, ‘ঘটনাস্থলের পাশে থাকা ব্রিজের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ মেয়েদের চিৎকার শুনতে পাই। তাৎক্ষণিক নদীতে নেমে একজনকে জীবিত উদ্ধার করি। বাকি দুজনকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর দুজনকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।’
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ‘দুপুরে দুই শিক্ষার্থী নদীতে ডুবে মারা যাওয়ার খবর পাই। তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজ-খবর নেয়। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’