ভারতের প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদির প্রতি দেশটির জনগণ দিনকে দিন আস্থা হারাচ্ছে। গত এক বছরে তার প্রতি
সমর্থন কমেছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-র একটি সমীক্ষায়
এ তথ্য জানা গেছে।
সমীক্ষায় বলা
হয়েছে, ২০২০-র অগস্ট মাসে ৬৬ শতাংশ মানুষই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির বিকল্প
কাউকে পাননি। ২০২১-এর আগস্টে তা কমে ২৪ শতাংশে এসে ঠেকেছে। পরবর্তী পছন্দের প্রধানমন্ত্রী
হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে। তার সঙ্গে চতুর্থস্থানে
রয়েছেন অরবিন্দ কেজরিবালও। গত বছর যথাক্রমে সপ্তম ও ষষ্ঠ স্থানে ছিলেন তারা।
‘মুড অব দ্য নেশন’ নামে প্রত্যেক বছর জানুয়ারি এবং অগস্ট
মাসে সমীক্ষা চালায় ইন্ডিয়া টুডে। তাতে দেশের রাজনীতিকদের নিয়ে সাধারণ মানুষদের মতামত
তুলে ধরে তারা। চলতি মাসে যে সমীক্ষা সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী
হিসেবে মোদিকে পছন্দ দেশের মাত্র ২৪ শতাংশ মানুষের।
তালিকায় দ্বিতীয়
স্থানে রয়েছেন কট্টরপন্থী বিজেপি নেতা এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী রয়েছেন তৃতীয় স্থানে। যুগ্মভাবে চতুর্থ স্থানে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিবাল। ২০২৪-এর
লোকসভা নির্বাচনে অমিত শাহ প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন কি না, সে নিয়ে জল্পনা দীর্ঘ
দিন ধরেই। তিনি তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছেন।
এর আগে, জানুয়ারি
মাসেও দেশের ৩৮ শতাংশ মানুষের পছন্দের তালিকায় ছিলেন মোদি। কিন্তু কোভিডের দ্বিতীয়
ঢেউয়ের ভয়াবহতা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি দেশবাসী। অক্সিজেনের জন্য হাহাকার, শ্মশানের
বাইরে শবের সারি, গঙ্গায় ভেসে আসা মৃতদেহ- এ সবের স্মৃতি এখনও টাটকা। তাই কেন্দ্রের
ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ মানুষের মনে। তার উপর কৃষি আইন, বিমার বেসরকারিকরণ ঘিরেও অসন্তোষ
রয়েছে। সমীক্ষায় তারই প্রতিচ্ছবি ধরা পড়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
একই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশে
বিধানসভা নির্বাচনের আগে যোগীর প্রতি মানুষের সমর্থন বেড়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। ২০২০-র
অগস্টে তাঁকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী দেখতে চেয়েছিলেন মাত্র ৩ শতাংশ মানুষ। এ বছর জানুয়ারিতে
তা বেড়ে ৭ শতাংশ হয়। অগস্টে তা আরও বেড়ে ১১ শতাংশে ঠেকেছে।
আবার হাথরস থেকে কৃষক বিক্ষোভ, পেগাসাস থেকে পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, লাগাতার সরকারের বিরোধিতার ফল পেয়েছেন রাহুল। গত বছর তাকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন ৮ শতাংশ। এ বছর জানুয়ারিতে তা কমে ৭ শতাংশ হলেও, আগস্টে তা বেড়ে ১০ শতাংশ হয়ে গিয়েছে।