নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নের ডুংকর বিলে অন্যের জমি জবর দখল করে ঘের কাটার ঘটনা ঘটেছে। ক্ষতিগ্রস্থ ও স্থানীয়দের অভিযোগ বিছালী ইউনিয়নের চাকই ও মধুরগাতী গ্রামের কতিপয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যু পরস্পর যোগসাজোশে ওই বিলের বিভিন্ন লোকজনের ব্যাপক জমি দখল করে রাতের আঁধারে স্কেভেটার দিয়ে ঘের কেটে দখলের অপচেষ্টা চালায়।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ওই দখলবাজির সাথে সরাসরি জড়িত রয়েছে চাকই গ্রামের জুয়েল, লাবলু, মফিজ গাজী, মামুন শেখ, আলমগীর শেখসহ তাদের অনুগত কয়েকজন ব্যক্তি।
শনিবার (২০ মে) দুপুরে সরেজমিন ওই এলাকায় গেলে ক্ষতিগ্রস্থ চাকই গ্রামের ইমামুল, আক্কাস, শাজাহান, কালাম বিশ্বাস, রকিবুল বিশ্বাস সহ আরোও অনেকে জানান, স্থানীয় ভূমিদস্যু চক্র সম্প্রতি রাতের আঁধারে ডুংকর বিলে তাদের এবং বিভিন্ন লোকজনের ব্যাপক জমিতে স্কেভেটর দিয়ে ঘের কেটে ফেলে। পরদিন সকালে সাধারণ লোকজন বিলে গিয়ে দেখতে পায় তাদের জমিতে কে বা কারা ঘের কেটেছে।
অনুসন্ধানে ক্ষতিগ্রস্থরা উপরোক্ত ভূমিদস্যুদের অপকর্মের কথা জেনে তাদের নিকট গিয়ে জমি দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা মারমুখি আচরণ করে। এমনকি ওই জমির কাছে যেতে নিষেধ করে। এতে আতংকিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ভূমি মালিকরা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দেন। কিন্তু ফাঁড়ির পুলিশ কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে কোন গুরুত্ব না দিয়ে স্থানীয় বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুকের নিকট যেতে বলেন।
ক্ষতিগ্রস্থ ও সচেতন নাগরিক বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুকের নিকট গেলে তিনি বলেন, ভুল করে তারা কাজটি করেছে। নিজেদের মাঝে মিমাংসা করে নেন। এরপর বার বার দখলবাজদের নিকট যান ক্ষতিগ্রস্থরা। বরাবরই হুমকি দিতে থাকে ওই ভূমিদস্যু চক্র। এক পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্থ ও স্থানীয় সচেতন সাধারণ জনগণ সংঘবদ্ধ হয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান এবং জেলা প্রশাসকের নিকট গিয়ে নালিশ দেয়ার হুমকি দেন। তখন পিছু হটে ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী চক্র। তারা জবর দখল করে কাটা ঘের পরে বন্ধ করে দেয়। নিজেদের জমি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরত পেলেও অজানা আতংকে আছেন ওই এলাকার সাধারণ মানুষ। আবারও সন্ত্রাসী চক্র জমি জবর দখলের আগ্রাসন চালাতে পারেন, এমন আতংকে তারা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
এদিকে যাদের বিরূদ্ধে ভূমি দখল চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে, তাদের কাউকেই এলাকায় পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুক অন্যের জামিতে ঘের কাটার কথা স্বীকার করে জানান, ওই জায়গা আবার মাটি দিয়ে সমান করে ঘের বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
নড়াইল সদর থানার ওসি ওবাইদুর রহমান জানান, ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।