নড়াইলে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহম্মেদ পলক এমপি।
শুক্রবার (২৩ জুন) বিকালে নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের সীমাখালী এলাকায় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান পালিত হয়।
এরপর সেখানকার নাকশী আবু বক্কার সিদ্দিক মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্মার্ট নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ করেন তিনি। এছাড়াও প্রতিমন্ত্রী সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে জয় সেট সেন্টারের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
উদ্বোধনে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার নড়াইলবাসীর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এক অনন্য উপহার। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইটি, রোবোটিক্স, সাইবার সিকিউরিটিসহ উচ্চপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর এবং স্পেশালাইজড ল্যাব স্থাপন করা হচ্ছে। মাত্র ১৩ বছরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক মাননীয় উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এর নেতৃত্বে প্রযুক্তি শিল্প থেকে রপ্তানি আয় দাড়িয়েছে প্রায় ১.৪ বিলিয়ন ডলার। তবে আমরা ২০২৫ সালের মধ্যে তার অধিক করতে চাই।
এসময় নড়াইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডঃ সুবাস চন্দ্র বোসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী, নড়াইল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ নিজাম উদ্দিন খান নিলু, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ রেজাউল করিম, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন (১৪ জেলা) প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম, পৌর-মেয়র আঞ্জুমান আরা, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং নড়াইল জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা- কর্মচারী, জেলার বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এছাড়াও নড়াইল জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করছি দ্রুত এই আইটি ট্রেনিং সেন্টার এর নির্মাণ শেষ হয়ে যাবে এবং আগামী দুই বছরের মধ্যে এখানে আমরা কার্যক্রম শুরু করতে পারবো। এখান থেকে প্রতি বছর কয়েক হাজার তরুণ-তরুণী বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবে। এই তরুণ-তরুণীরাই নড়াইলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘরে বসেই ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে পারবে এবং কাজ করে ডলার আয় করবে, তখন আর ডলার আয়ের জন্য বিদেশে পাড়ি দেওয়ার দরকার হবেনা।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ এর ব্রেইন চাইল্ড এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হবে, একই সাথে তথ্যপ্রযুক্তিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে। আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার থেকে বের হয়ে তরুণ উদ্যোক্তারা আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে যেনো ব্যাপক পরিসরে কাজ করতে পারেন সে লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাই-টেক পার্কও স্থাপন করা হচ্ছে।
সর্বশেষ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেন, বিশ্বব্যাপী কর্মসংস্থানের বাজার উন্মুক্ত করেছে আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। আমাদের দেশের শিক্ষিত বেকার সমস্যা সমাধানে তথ্য ও যোগোযাগ প্রযুক্তি বিপুল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। আমাদের তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে আইসিটি শিল্পের প্রসারে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এরই অংশ হিসেবে নড়াইলে আজ শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের কাজ শুরু হলো। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হবে, অন্যদিকে ফ্রিল্যান্সিং করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে আমাদের তরুণরা স্বাবলম্বী হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৬৪টি জেলায় আইটি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। এরই অংশ হিসেবে নড়াইলে আজ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলো। নড়াইল ছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায় আরো ১৩টি জেলায়। (হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, টাঙ্গাইল (মধুপুর), ঢাকা (নবাবগঞ্জ), গোপালগঞ্জ (কাশিয়ানি), শেরপুর, গাইবান্ধা, পঞ্চগড়(দেবীগঞ্জ), ঠাকুরগাঁও, নীলফামারি, নোয়াখালী, ফেনী (পরশুরাম) ও পটুয়াখালী) শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ১১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।