উচ্চ আদালতের
নির্দেশনায় অবশেষে আলোচিত বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি ঘটনায় দায়ের করা ৫৯টি মামলার অভিযোগপত্র
অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার ১৩ বছর পর অভিযোগপত্র অনুমোদন করা
হলো।
এসব মামলার এজাহারে ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর নাম না থাকলে এবার তদন্তের পর অভিযোগপত্রে তিনিসহ ১৪৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে ৪৬ জন ব্যাংক কর্মকর্তা ও ১০১ জন ঋণ গ্রহণকারী রয়েছেন। আজ সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান কমিশনের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
আরও পড়ুন: দুই সিটির ভোট নিয়ে ইসির প্রতিক্রিয়া
মামলাগুলোর
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা, বিভিন্ন
কোম্পানি/প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ এজাহার এবং তদন্তে আসা আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার
অপব্যবহার করে ভুয়া মর্টগেজ, মর্টগেজের অতিমূল্যায়ন ও মর্টগেজবিহীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের
অনুকূলে ব্যাংকটি থেকে ঋণ গ্রহণ করে ২ হাজার ২৬৫ কোটি ৬৮ লাখ ১৪৫ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
৫৯টি মামলা দুদকের পাঁচ কর্মকর্তা তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর কমিশন থেকে মামলাগুলোর অভিযোগপত্র অনুমোদন করে। এর মধ্যে দুদকের পরিচালক মোহাম্মদ মোরশেদ আলম ছয়টি মামলা, উপপরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম ১৫টি, উপপরিচালক মো. মোনায়েম হোসেন ১৭টি, উপপরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক তিনটি এবং উপ পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান ১৮টি মামলার তদন্ত করেন।
আরও পড়ুন: ৬ দিন ধরে খাটের নিচে স্ত্রীর মরদেহ রেখে বসবাস
২০০৯ থেকে ২০১২
সাল পর্যন্ত বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি আবদুল হাই বাচ্চু।
আর তখনই ব্যাংকটির দিলকুশা, গুলশান ও শান্তিনগর শাখা থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে কয়েক হাজার
কোটি টাকা উত্তোলন ও আত্মসাতের ঘটনা ঘটে।
ঋণপত্র যাচাই
না করে জামানত ছাড়া জাল দলিলে ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়াসহ নিয়ম না মেনে
ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ ওঠে তখনকার পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে ২০১০ সালে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। প্রায় চার বছর অনুসন্ধান শেষে ২০১৫ সালে রাজধানীর তিনটি থানায় ১৫৬ জনকে আসামি করে ৫৬টি মামলা করে কমিশন। এরপর আরও তিনটি মামলা করে দুদক।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে মুষলধারে বৃষ্টি, কমছে তাপমাত্রা
সেসব মামলার
আসামির তালিকায় ২৬ জন ব্যাংক কর্মকর্তা থাকলেও বাচ্চু বা পরিচালনা পর্ষদের কাউকে সেখানে
আসামি না রাখায় প্রশ্ন ওঠে। এরপর বিভিন্ন মহলের সমালোচনা এবং উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণের
ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে পাঁচ দফা বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদ
করেছিল দুদক।
বছরের পর বছর
পার হলেও তদন্ত শেষ না হওয়ার বিষয়টি এক মামলার সূত্রে হাইকোর্টের নজরে আসলে গত বছরে
নভেম্বর মামলাগুলোর তদন্ত তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে দুদককে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত।