আজঃ শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

ঐতিহ্য হারিয়ে ভেজালে ভরপুর খেজুর গুড়

প্রকাশিত:শনিবার ২১ জানুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ২১ জানুয়ারী ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
শাকিল মোল্লা, রাজবাড়ী

Image

খেজুর গুড়ের জন্য একসময়ের প্রসিদ্ধ শহর ইতিহাস আর ঐতিহ্য ঘেরা পদ্মাকন্যা খ্যাত রাজবাড়ী। একসময় পদ্মা কন্যা খ্যাত এই রাজবাড়ী ছিল বৃহত্তর ফরিদপুরের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু বৃহত্তর ফরিদপুর থেকে ভৌগলিকভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর থেকে ক্রমান্বয়ে জেলার খেজুরের গুড়ের সেই ঐতিহ্য আজ বিলীয়মান। আছে কেবল নামে। গাছ কমে যাওয়াসহ নানা কারণে ঐতিহ্য হারিয়ে বিলীয়মান খেজুর গুড়। যেন সর্বত্রই ভেজালে ভরপুর।

এক সময় এ জেলা থেকে আশপাশের জেলায় খেজুর গুড় পাঠানো হতো। কিন্তু এখন এ জেলা থেকে পাঠানোতো দূরে থাক নিজের জেলার চাহিদা মেটাতেই অন্য জেলা থেকে গুড় আমদানি করতে হয়। তবে কৃষি বিভাগের দাবি ঐতিহ্য ফেরাতে প্রতি বছর রোপণ করা হচ্ছে খেজুর গাছ।

স্থানীয়রা জানান, এক সময় শীত মৌসুমে দেশের গ্রামাঞ্চলের ঘরে ঘরে খেজুরের রস ও গুড় দিয়ে তৈরি হতো নানা রকমের বাহারি পিঠাপুলি ও পায়েস। নানা ধরনের পিঠা তৈরিতে খেজুর গুড়ের জুড়ি মেলা ভার। শীতের সময় খেজুর গুড়ের পিঠা তৈরি করে আত্মীয় স্বজনকে দাওয়াত করে খাওয়ানোসহ আত্মীয়বাড়ীতে পাঠানোর রেওয়াজ দীর্ঘদিনের।

জেলার বিভিন্ন উপজেলার বেশ কয়েকজন গাছি জানান, নানা কারণে কমছে গাছ। গাছ কমে যাওয়ায় এখন অনেক দূরে গিয়ে রস সংগ্রহ করতে হয়, যা কষ্টসাধ্য। এছাড়া উৎপাদন খরচ অনুযায়ী মূল্যও পাওয়া যায় না বলেও অভিযোগ গাছিদের।

তারা দাবি করেন, বাজারজুড়ে রয়েছে চিনি মিশ্রিত ভোজাল গুড়। যা প্রতিকেজী মাত্র ৮০ টাকা থেকে শুরু করে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে স্থানীয় গাছি ও গুড় তৈরিকরা পরিবারগুলোকে এক কেজি গুড় উৎপাদনে মান অনুসারে দুইশ থেকে তিনশো টাকা খরচ হচ্ছে। এতে তারা ভেজাল গুড়ের প্রভাবের কারণে কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন। তারপরও এখনো কেউ কেউ তৈরি করছেন উৎকৃষ্টমানের খেজুর গুড়।

পাংশা উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের খামারডাঙ্গা গ্রামের গাছি চাঁন মিয়া বলেন, এখন আসল খেজুর গুড় পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তারপরেও যদি কেউ আসল গুড় নিতে চায় তাহলে অবশ্যই দ্বিগুণ মূল্য তথা প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা দিতে হবে।

গাছি মো. মনিরুল বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে তারা রাজশাহীর চারঘাট থেকে বালিয়াকান্দি উপজেলায় এসে গুড় তৈরির কাজে করেন। এই এলাকা থেকে প্রায় ৫/১০ জন ভাগ হয়ে উপজেলার ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় গাছ কাটেন। এটিই তাদের এ মৌসুমের ব্যবসা। স্থানীয় বাসিন্দাদের খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে, তা থেকে পাটালি, গুড় ও স্থানীয় ভাষায় লালিগুড় (জুলাগুড়) তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেন।

তিন বলেন, কয়েক বছর থেকে গাছের সংখ্যা কমেছে। এ মৌসুমে প্রায় শতাধিক খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ করছি। যে রস সংগ্রহ করি তা দিয়ে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ কেজি পাটালি গুড় তৈরি হয়। এক হাড়ি রস ২৫০ টাকা এবং এক কেজি পাটালি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করছি।

পাংশা উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরিদ হাসান ওদুদ বলেন, কয়েক বছর আগেও জেলার বিভিন্ন স্থানে যেদিকে তাকাতাম খেজুর গাছ দেখতাম। শীতের দিনে গাছে গাছে হাঁড়ি দেখতাম। গাছ কাটার কাজ করত গাছিরা। রস কেনাবেচা আর গুড় বানানোর ধুম পড়ত। রসের জন্য মানুষের সিরিয়াল পড়ত। কিন্তু এখন আর সেই চিত্র নেই। রস ও গুড়ে ভেজালে ভরপুর অবস্থা।

পাংশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ততন কুমার ঘোষ বলেন, উপজেলায় মোট ৪ হাজারের বেশি খেজুর গাছ রয়েছে। এ বছর সঠিক সময়ে শীত পড়ায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে খেজুরের রস আহরণের জন্য গাছিরা আগাম খেজুর গাছগুলো প্রস্তুত করে রেখেছেন। এখান থেকে গাছিরা রস আহরণ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হন। তবে উপজেলার চাহিদা মেটাতে পার্শ্ববর্তী জেলা ও উপজেলা থেকে খেজুরের পাটালি ও গুড় আমদানি করতে হয়।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বলেন, এটা ঠিক আগের সেই সুদিন আর নেই। বাজারে ভেজাল ও ভালো গুড় দুটোই আছে। তবে খেজুর গাছ রোপণের পাশাপাশি তার যৌবন ফেরাতে গবেষণার মাধ্যমে অধিক পরিমাণে রস সংগ্রহযোগ্য খাটো জাতের গাছ উদ্ধাবন করা প্রয়োজন। আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের সবধরনের পরামর্শ ও সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছি।

নিউজ ট্যাগ: ঐতিহ্য

আরও খবর



দক্ষিণ গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে ইসরায়েল

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

যুদ্ধের ছয়মাস পর খান ইউনিসসহ দক্ষিণ গাজা উপত্যকা থেকে স্থল সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। তবে উপত্যকাটির অন্য অঞ্চলগুলোতে তাদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সেনা কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে তারা।

যুদ্ধাবস্থার মধ্যে বিচ্ছিন্নতার মাত্রা, সময়কাল সম্পর্কে পরস্পরবিরোধী প্রতিবেদনের মধ্যে দক্ষিণ গাজা উপত্যকা থেকে স্থল সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় ইসরায়েল।

রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।

রোববার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, আইডিএফ-৯৮ কমান্ডো ডিভিশন খান ইউনিসে নিজেদের মিশন শেষ করেছে। এ বাহিনীর গাজা ছেড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য, ভবিষ্যতের অভিযানের জন্য প্রস্তুত ও পুনরুদ্ধার করা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আইডিএফ-১৬২ কমান্ডো ডিভিশন ও নাহাল ব্রিগেডের নেতৃত্বে একটি উল্লেখযোগ্য বাহিনী গাজা উপত্যকায় কাজ করে চলেছে। আইডিএফ তাদের কাজের স্বাধীনতা ও সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা ভিত্তিক অপারেশন পরিচালনার ক্ষমতা রক্ষা করবে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সেনা। তবে বিশদ বিবরণ না দিলেও রয়টার্সকে তারা একটি ব্রিগেড গাজায় রেখে দেওয়া কথা জানিয়েছে। একটি ইসরায়েলি ব্রিগেড সাধারণত কয়েক হাজার সৈন্য দ্বারা গঠিত।

এদিকে খান ইউনিস থেকে সেনা প্রত্যাহার হলেও দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে দীর্ঘ ও হুমকিপূর্ণ অনুপ্রবেশ বিলম্বিত হবে কিনা, সেটি স্পষ্ট হয়নি। কেননা, ইসরায়েল শুরু থেকেই হামাসকে নির্মুলের কথা বলে আসছেন।

অন্যদিকে দক্ষিণ গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের আংশিক প্রত্যাহারের বিষয়ে হোয়াইট হাউসের মন্তব্য যে, সিদ্ধান্তটি সম্ভবত সৈন্যদের "বিশ্রাম ও সংস্কার" করার একটি সুযোগ হতে পারে।


আরও খবর
মিঠুনকে বিশ্বাসঘাতক বললেন মমতা

বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪




অনুমোদনহীন রেস্তোরাঁয় অভিযান অব্যাহত থাকবে: হাইকোর্ট

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

অনুমোদনহীন সব রেস্তোরাঁয় অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি কামরুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে, ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডের গাউছিয়া টুইন পিক টাওয়ারে থাকা অনুমোদনহীন ১৩টি রেস্টুরেন্ট সিলগালা থাকবে বলে আদেশ দেন হাইকোর্ট।

শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন অভিযান পরিচালনাকারী রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। আদালত তার কথা শোনেন। পরে রেস্তোরাঁখাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে এই আদেশ দেন।

এর আগে, বেইলি রোড ট্রাজেডির পর বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে অভিযানে গ্রেফতারকৃত রেস্তোরাঁ শ্রমিকদের তালিকা চেয়েছিলেন হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ। একইসঙ্গে, শ্রমিকদের গ্রেফতার করা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়েও রুল জারি করেন আদালত। ৪ সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে বিবাদিদের।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুন লাগে। এ ঘটনায় ৪৬ জন মারা যান। এরপর রাজধানীর বিভিন্ন রেস্তোঁরা ও ভবনে অভিযান চালায় রাজউক, পুলিশ ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। অভিযানে অনেক রেস্তোরাঁ সিলগালা ও জরিমানা করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৪ মার্চ রাজধানীর ধানমন্ডির সাত মসজিদ সড়কে গাউসিয়া টুইন পিক টাওয়ারে অনুমোদনহীন ও নকশা বহির্ভূতভাবে নির্মাণ করা ১৩টি রেস্তোরাঁ সিলগালা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।


আরও খবর
পরীমণিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি

বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪




বিজিপি প্রত্যাবাসন: ফাইল আটকে আছে মিয়ানমার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে

প্রকাশিত:বুধবার ২০ মার্চ ২০24 | হালনাগাদ:বুধবার ২০ মার্চ ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
Image

মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৭৭ সদস্যকে ফেরত পাঠাতে প্রায় সব প্রস্তুতি রয়েছে বাংলাদেশের। মিয়ানমারও তাদের ফেরত নিতে চায়। তবে কবে নাগাদ তাদের ফেরত নেওয়া হবে, তা এখনো জানায়নি দেশটি। আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যদের ফেরত নেওয়া সংক্রান্ত ফাইল মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে আটকে আছে বলে তথ্য মিলছে।

ঢাকা ও নেপিডোর কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ১৭৭ বিজিপি সদস্যকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। তবে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নেপিডোর দিক থেকে ঢাকাকে জানানো হয়েছে, বিজিপি সদস্যদের ফেরত নেওয়ার ফাইল এখনো ক্লিয়ার করতে পারেননি কর্মকর্তারা। কেননা, কর্মকর্তা পর্যায়ে সব কাজ শেষ হলেও দেশটির প্রধানমন্ত্রীর অফিসে এ সংক্রান্ত ফাইল আটকে আছে। তবে খুব শিগগিরই সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির লড়াইয়ের জেরে গত সপ্তাহে দুই দফায় ১৭৭ বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এসব বিজিপি সদস্য বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হেফাজতে রয়েছেন।

৯ দিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করা মিয়ানমারের সদস্যদের যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফেরত পাঠাতে চায় ঢাকা। এ নিয়ে প্রস্তুতিও রয়েছে ঢাকার। মিয়ানমারের দিক থেকে সবুজ সংকেত পেলে তাদের (বিজিপি) ফেরত পাঠাবে বাংলাদেশ। ফেব্রুয়ারিতে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, বিজিপি, সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সংস্থার ৩৩০ সদস্যকে যেভাবে ফেরত পাঠানো হয়েছে, এবারো সেই প্রক্রিয়ায় অনুসরণ করতে চায় বাংলাদেশ।

ঢাকার এক কূটনীতিক বলেন, তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। আমাদের দিক থেকে প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব তাদের ফেরত পাঠাতে। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে। তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আগে যেভাবে মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, ঠিক একই প্রক্রিয়ায় এদের পাঠানো হবে।

তারা (বিজিপি) এখন ২০০ জনের মতো বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ইতোপূর্বে আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে অনেককে ফেরত পাঠিয়েছি। একই প্রক্রিয়ায় এদের ফেরত পাঠানোর জন্য আলাপ-আলোচনার মধ্যে আছি। আশা করছি, আমরা তাদেরও ফেরত পাঠাতে পারব।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যদের ফেরত পাঠানো, মিয়ানমার ও সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলমের সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে বিজিপি সদস্যদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।

এদিকে, কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টায় মিয়ানমার সীমান্তে দুইশর বেশি বিজিপি সদস্য অপেক্ষমাণ রয়েছে বলে দেশের গণমাধ্যমে খবর এসেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকার এক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক জানান, সীমান্তে শ’খানেকের বেশি বিজিপি সদস্য অবস্থান করছে। তারা এখন অবধি বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি চায়নি। আর আমরাও চাই না তারা বাংলাদেশে আসুক।

তাহলে কি নতুন করে আর কোনো বিজিপি সদস্যকে নেবে না বাংলাদেশ– এমন প্রশ্নে এই জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় হয়ত তাদের ঢুকতে দেওয়া হবে। যদি তারা ঢুকেও আমরা তাদের যত দ্রুত সম্ভব ফেরত পাঠাব। আগের মতো এদেরও ফেরত পাঠানো হবে।

চলমান পরিস্থিতিতে ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের দূতকে ডেকে পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কি না– জানতে চাইলে অন্য এক কূটনীতিক বলেন, রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। তাকে সব বিষয়ে জানানো হয়। রাষ্ট্রদূতকে ডেকে তো কোনো লাভ হচ্ছে না।

সাময়িক আশ্রিত বিজিপি সদস্যদের ফেরত পাঠানোর প্রশ্নে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, তারা (বিজিপি) এখন ২০০ জনের মতো বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ইতোপূর্বে আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে অনেককে ফেরত পাঠিয়েছি। একই প্রক্রিয়ায় এদের ফেরত পাঠানোর জন্য আলাপ-আলোচনার মধ্যে আছি। আশা করছি, আমরা তাদেরও ফেরত পাঠাতে পারব।

ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়। চলমান ওই সংঘর্ষে প্রায় পাঁচ দিনের ব্যবধানে মিয়ানমারের সেনা, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য, শুল্ক কর্মকর্তাসহ ৩৩০ জন বাংলাদেশে ঢুকে পড়েন। তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। আমাদের দিক থেকে প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব তাদের ফেরত পাঠাতে। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে। তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আগে যেভাবে মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, ঠিক একই প্রক্রিয়ায় এদের পাঠানো হবে।

আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষে টিকতে না পেরে গত দেড় মাসে মিয়ানমারের প্রায় ৫০০ সামরিক বাহিনীর সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এদের মধ্যে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা আশ্রয়ের ক্ষেত্রে সহযোগিতা চেয়ে আত্মসমর্পণ করেন। এক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের অস্ত্র নিয়ে নেওয়া হয়। পরে তাদের খাবার ও থাকার ব্যবস্থা করা হয়।

এ প্রক্রিয়া সম্পর্কে সরকারের এক কর্মকর্তা জানান, তারা আশ্রয়ের জন্য সহযোগিতা চায়। আমাদের কাছে সারেন্ডার বা আত্মসমর্পণ করতে হয়। বাংলাদেশ সরকার তাদের জিডআর্ম করে এবং তাদের খাবারের ব্যবস্থা করে। এরপর তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়।

২০২৩ সালের শেষের দিকে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে শুরু হওয়া অপারেশন ১০২৭’ থেকে সংঘর্ষের পর প্রতিবেশী দেশগুলোতে এখন অবধি প্রায় ১ হাজার জান্তা সদস্য (মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সদস্য) আশ্রয় নিয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। প্রায় ৫০০ জান্তা সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বার্মা নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (বিএনআই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বিএনআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী দেশগুলোর বাহিনী এবং গণমাধ্যমের তথ্য মতে, গত বছরের (২০২৩) শেষের দিকে শুরু হওয়া অপারেশন ১০২৭’ থেকে সংঘর্ষের পর প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নেওয়া জান্তা সৈন্যের সংখ্যা প্রায় এক হাজারে পৌঁছেছে। মিয়ানমারের সঙ্গে সীমানা ভাগ করে নেওয়া পাঁচটি প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড, ভারত, বাংলাদেশ ও চীনে সীমান্ত নিয়ে পালিয়ে গেছে জান্তা সৈন্যরা।

বিএনআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, এদের মধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া জান্তা সৈন্যের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। আর ভারতে আশ্রয় নিয়েছে ৪০০ জনের বেশি। এ ছাড়া অপারেশন ১০২৭’-এর আগে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে মিয়ানমারের কারেন রাজ্যে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর তীব্র আক্রমণের মধ্যে শত শত জান্তা সৈন্য থাইল্যান্ডে আশ্রয় নেয়। এসব জান্তা সৈন্যকে নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করা হলেও তাদের প্রসঙ্গে মিলিটারি কাউন্সিল বিস্তারিত তথ্য জানানো থেকে বিরত থাকে।


আরও খবর
ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকা সফর স্থগিত

বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪




বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ

প্রকাশিত:বুধবার ২০ মার্চ ২০24 | হালনাগাদ:বুধবার ২০ মার্চ ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে 'ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট ২০২৪'। বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশগুলোর এই তালিকায় শীর্ষ ১০০ এর মধ্যে নেই বাংলাদেশ। তালিকায় টানা ৭ বছর ধরে শীর্ষে রয়েছে ফিনল্যান্ড। এছাড়াও শীর্ষ ১০-এ রয়েছে ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, সুইডেন, ইসরায়েল, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, লুক্সেমবার্গ, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া। ১৪৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৯তম।

বুধবার (২০ মার্চ) আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। সবচেয়ে সুখী দেশ নির্ধারণের জন্য ৬টি সূচক যাচাই করা হয়। এই সূচকগুলো হলো- মাথাপিছু মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি), সামাজিক সহায়তা, সুস্থ জীবনযাপনের প্রত্যাশা, জীবনযাপনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা, বদান্যতা, দুর্নীতি নিয়ে মনোভাব ও ডিসটোপিয়া।

ডিসটোপিয়া হচ্ছে একটি কাল্পনিক দেশ, যেখানে পৃথিবীর সবচেয়ে অসুখী মানুষরা বসবাস করেন- অর্থাৎ, এই ৬ সূচকে ডিসটোপিয়ার চেয়ে কোনো দেশ খারাপ অবস্থায় থাকতে পারে না। এটি মূলত মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ, এই ডিসটোপিয়ার চেয়ে অন্য দেশগুলো কতটুকু ভালো অবস্থায় আছে, তার সঙ্গে তুলনায় সূচক থেকে প্রাপ্ত পয়েন্ট গণনা করা হয়।

এশিয়ার দেশগুলোর মাঝে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে কুয়েত (১৩)। এছাড়াও তালিকায় রয়েছে আরব আমিরাত (২২), সৌদি আরব (২৮), সিঙ্গাপুর (৩০), তাইওয়ান (৩১), জাপান (৫১), দক্ষিণ কোরিয়া (৫২), ফিলিপাইন (৫৩), থাইল্যান্ড (৫৮), মালয়েশিয়া (৫৯), চীন (৬০) ও বাহরাইন (৬২)।

প্রতিবেশী দেশগুলোর মাঝে তালিকায় স্থান পেয়েছে নেপাল (৯৩), পাকিস্তান (১০৮), ভারত (১২৬), মিয়ানমার (১১৮) ও শ্রীলঙ্কা (১২৮)। তালিকায় সবচেয়ে নিচে আছে আফগানিস্তান (১৪৩)। এর এক ধাপ ওপরে লেবানন (১৪২)।

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানি ২০টি সুখী দেশের মধ্যে নেই। তারা যথাক্রমে ২৩তম এবং ২৪তম অবস্থানে রয়েছে৷ প্রতিবেদনে লক্ষণীয় যে, সবচেয়ে সুখী দেশগুলোর তালিকায় বিশ্বের কোনো বড় দেশ নেই।

এই বছরের প্রতিবেদনে প্রথম বয়সের ভিত্তিতে আলাদা র‍্যাঙ্কিং অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যা থেকে দেখা যায়, বিশ্বের কিছু অংশে তরুণদের মধ্যে জীবনে সন্তুষ্টি নেই। উত্তর আমেরিকার তরুণদের মধ্যে সুখ এতটাই দ্রুত কমে গেছে যে সেখানকার তরুণরা এখন বয়স্কদের তুলনায় কম খুশি। এই কম স্কোরের রিপোর্টটি ২০১২ সালে প্রথম প্রকাশিত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো সামগ্রিক তালিকার শীর্ষ ২০ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ন্মিয়ে দিয়েছে।

ইউরোপ ব্যতীত প্রতিটি অঞ্চলে সুখের বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যাকে এই প্রতিবেদনের লেখকরা একটি 'উদ্বেগজনক' হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবচেয়ে অসুখী দেশ যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তান। এরপরই রয়েছে লেবানন।


আরও খবর
মিঠুনকে বিশ্বাসঘাতক বললেন মমতা

বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪




পতাকার আদলে ধানক্ষেত, প্রশংসায় ভাসছেন স্কুলশিক্ষক

প্রকাশিত:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোঃ মাসুদ রানা, কুড়িগ্রাম

Image

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকার আদলে ধান ক্ষেত সাজিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন মোঃ আবু জাফর (৩৫) নামের এক স্কুল শিক্ষক।

ওই স্কুল শিক্ষক উলিপুর পৌর এলাকার নাওডাঙা বাকরের হাট গ্রামের মোঃ আবু বক্করের ছেলে। তিনি উলিপুর মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বলে জানা গেছে। স্বাধীনতার মাসে ধান ক্ষেতের মাঝে চারা গাছ দিয়ে ফুটে উঠা জাতীয় পতাকার প্রতিচ্ছবি দেখতে উৎসুক জনতা ভীড় করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আবু জাফরের এক একর ৩০ শতক জমিতে ধান চাষ করেছেন। এর মধ্যে ক্ষেতের এক শতক জমি জুড়ে ফুটে উঠেছে সবুজ রঙের চারা দিয়ে জাতীয় পতাকার প্রতিচ্ছবি জমির আইলের পাশ দিয়ে বেগুনি ধান গাছের চারা রোপন করে ফুটিয়ে তুলেছেন পতাকার খুঁটি। বিরি-১০৪ জাতের ধানের সবুজ চারাকে পতাকার জমিন ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ বেগুনি ধানের চারাকে বৃত্ত ও পতাকার খুঁটি স্বরুপ সারিবদ্ধ ভাবে রোপন করেছেন তিনি। প্রথমের দিকে ধান গাছের পাতায় সমৃদ্ধ রঙ না আসায় স্পষ্ট চিত্র বুঝা না গেলেও বর্তমানে ধান গাছের পরিপক্বতার কারণে দৃশ্যমান হয়েছে ক্ষেতটি। এমন ব্যতিক্রমি পতাকার আদলে ধান ক্ষেত দেখতে প্রতিদিন লোকজন ছুটে আসছেন সেখানে।

আবু জাফর বলেন,আমি শিক্ষকতার পাশাপাশি কৃষি চাষাবাদ করে থাকি। দেশের প্রতি ভালোবাসা ও মমত্ব প্রকাশে মানুষজন বিভিন্নভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে চায়। তেমনি আমিও চেষ্টা করছিলাম মাত্র। স্বাধীনতার মাসে জাতীয় পতাকার আদলে করা ধানক্ষেতটি দৃশ্যমান হওয়ায় মানুষজনের দেখার আগ্রহ বেড়েছে।

ধান ক্ষেত দেখতে আসা লিটন মিয়া বলেন, মানুষজন দেশের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ থেকেই মুলত ব্যতিক্রমী কাজ করে থাকে। আবু জাফর ভাইয়ের জাতীয় পতাকার আদলে করা ধানক্ষেতটি সত্যি প্রশংসনীয়। এমন দৃশ্য দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। এটি দেখে অনেকের মাঝে দেশপ্রেম জাগ্রত হবে বলে জানান তিনি।

শিক্ষার্থী মোঃ রাজু মিয়া বলেন, আমি বিভিন্ন কারুকার্য যেমন বইয়ের পাতা ও কাপড়ের তৈরি, পাথরের তৈরি সাজানো পতাকা দেখেছি। তবে ধানের চারা লাগিয়ে যে জাতীয় পতাকার প্রতিচ্ছবি বানানো যায় তা প্রথম দেখলাম সত্যি ভালো লাগলো।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, একজন কৃষক দেশের প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে জমিতে জাতীয় পতাকার আদলে যে শস্যচিত্র ফুটিয়ে তুলেছে সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতায়

কৃষি বিভাগ সব সময় পাশে থাকবে বলে তিনি জানান।


আরও খবর