আজঃ শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

অপরাধ আর প্রতারণার প্রাণ পুরুষ আল জাজিরার সামি

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
Image
কৈশোর থেকেই তার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ উঠতে থাকে। ১৪ বছর বয়সে সামি মাকে হারায়। তার দুই বছর পর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎ মায়ের সংসারে তখন থেকেই অন্ধকার জগতে পা বাড়ায় সামি

কখনও তানভীর সাদাত, কখনও সায়ের জুলকারনাইন। আবার কখনও জুলকারনাইন সায়ের খান, এভাবে নাম বদলে প্রতারণাসহ অগণিত অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিটিই আল জাজিরা ফিল্মের মূল চরিত্র সামি। তার প্রকৃত নাম সামিউল আহমেদ খান। অল্প বয়সে মাকে হারানোর পর চুরি ও প্রতারণামূলক অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে বদলে ফেলেন মায়ের রাখা নাম তানভীর মোহাম্মদ সাদাত খান। সেনানিবাস থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার সময় তার নাম ছিল সামিউল আহমেদ খান। মাদক ও অন্ধকার জগতে জড়িয়ে বেছে নেন নতুন নাম সায়ের জুলকারনাইন। গত কয়েক বছর ধরে পাহাড়ি উগ্রবাদীদের সঙ্গে জড়িত সামি।

আল জাজিরা ইস্যুতে তার সহপাঠী ও পরিচিতরাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব অভিযোগ করছে। শিশুকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত যার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তাকে কেন্দ্র করেই আল জাজিরার তদন্ত টিম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনী নিয়ে ফিল্ম তৈরি করেছে।

পিতার ভুয়া নাম দিয়ে পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্সে করেন সামি। দুই যায়গায় তিনি পিতার নাম দিয়েছেন ওয়াসিট খান (Wasit Khan)। কিন্তু তার বাবার প্রকৃত নাম বাসিত খান (Basit Khan)।

শিশুকালেই অপরাধের হাতেখড়ি

সামির বাবা মো. আবদুল বাসেত খান ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা। আবদুল বাসেতের চার সন্তানের মধ্যে সামিউল আহমেদ খান সবার বড়। জন্ম ১৯৮৪ সালে হলেও স্কুলের তথ্য মোতাবেক তার জন্ম তারিখ ৮ অক্টোবর, ১৯৮৬। কৈশোর থেকেই তার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ উঠতে থাকে। ১৪ বছর বয়সে সামি মাকে হারায়। তার দুই বছর পর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎ মায়ের সংসারে তখন থেকেই অন্ধকার জগতে পা বাড়ায় সামি। ক্যাডেট কলেজ থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর ভর্তি হয় কুমিল্লার ইস্পাহানি স্কুলে। ১৫ থেকে ১৬ বছর বয়স থেকে ড্রাগ নেয়া, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাসহ নানা অভিযোগ ওঠে সামির বিরুদ্ধে। মাদকাসক্ত হওয়ার কারণে আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে সহপাঠী বন্ধুরাও তাকে এড়িয়ে চলতো। কৈশোর বয়সে চুরিতে হাত পাকান সামিউল আহমেদ খান ওরফে সায়ের জুলকারনাইন ওরফে সামি। ১৭ বছর বয়সে ২০০০ সালের ৩০ জানুয়ারি ইসিবিতে কর্মরত মেজর ওয়াদুদের বিদেশ থেকে আনা ট্র্যাকস্যুট চুরি করে ধরা পড়েন। ২০০০ সালের জুলাই মাসে টাইগার অফিসার্স মেস থেকে হাতির দাঁত চুরি করে চট্টগ্রামের নিউমার্কেটে অঙ্গনা জুয়েলার্সে বিক্রি করেও ধরা পড়েন।

বাবার চাকরির সুবাদে নিজেকে কখনও সেনাবাহিনীর সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট, কখনও ক্যাপ্টেন হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দিতেন। ২০০১ সালের ২৮ ও ২৯ এপ্রিল ঢাকা সেনানিবাসে নিজেকে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করে সামি। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বন্ধু উৎপলের কাছে নিজেকে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে প্রমাণের জন্য বেল্ট, বুট ও র‍্যাংক ইউনিফর্ম কেনেন। উৎপলের বাসা থেকেই সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরে ট্যাক্সি ক্যাব দিয়ে সেনানিবাসসহ ঢাকার একটি পত্রিকা অফিস, রাপা প্লাজা, ধানমন্ডি ও চিড়িয়াখানা ঘুরে জাহাঙ্গীরগেট হয়ে সিএমএইচে প্রবেশের সময় দুপুর ২টায় মিলিটারি পুলিশের (এমপি) হাতে ধরা পড়ে সামি। এর ঠিক দুদিন পর ২ মে বাবার অঙ্গীকারনামায় আর্মি এমপি ডেস্ক থেকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। 

র‌্যাব পরিচয়ে প্রতারণা ও গ্রেপ্তার

২০০৬ সালের ২০ জুলাই র‌্যাব কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে রাজধানীর ফার্মগেটের এজে টেলিকমিউনিকেশন থেকে ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার মোবাইল ফোন কিনে একটি ভুয়া চেক দেন। একইভাবে প্রাইজ ক্লাব নামক একটি কম্পিউটার ফার্ম থেকে ১০টি ল্যাপটপ কেনার কথা বলে, পরে চেক দিয়ে ২টি ল্যাপটপ নিয়ে আসে। চেক ডিজঅনার হলে অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ তাকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনার পর তাকে এনপিজি ঘোষণা করে সব সেনানিবাস ও দপ্তরে অবাঞ্ছিত করা হয়। এ ঘটনার পর অনিয়ন্ত্রিত ও উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের জন্য সামিকে ত্যাজ্য করেছিলেন তার বাবা। পরদিন ২০০৬ সালের ২৩ জুলাই এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন লে. কর্নেল আবদুল বাসেত।

সামির যত নারী কেলেঙ্কারি

সেনাকর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিয়ে করেছিলেন সামি। এন্টেনা ভাঙ্গা ভি.এইচ.এফ (ওয়াকিটকি) নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেয়ার নামে কয়েকজনের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা নেন। ব্যবসার কথা বলেও অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে এক সেনাকর্মকর্তার মেয়েকেও বিয়ে করেন। শ্বশুরের অর্থে হাঙ্গেরিতে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করার পর বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন সামি। ব্যবসা বাণিজ্যের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য অনেকেই তাকে খুঁজছেন। বহুদিন প্রকাশ্যে আসতে পারেন না।

সামির বিরুদ্ধে মামলা

গেল বছর সাইবার ক্রাইম ইউনিট অনলাইনে জাতির পিতা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে কটূক্তি ও আপত্তিকর প্রচারণা এবং করোনা ভাইরাস নিয়ে অপপ্রচারসহ বিভিন্ন গুজব রটিয়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে তাদের মধ্যে অন্যতম শায়ের জুলকারনাইন সামি। উই আর বাংলাদেশি পেইজ থেকে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণার অভিযোগে অভিযুক্তদের ল্যাপটপ ও মোবাইল অনুসন্ধান করে ১১ জনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পায় গোয়েন্দা বাহিনী। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাসনিম খলিল ও সামিসহ উক্ত ১১ জনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের মে মাসে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা হয়। এ মামলার প্রতিবাদে কলাম লিখেছিলেন ডেভিড বার্গম্যান। 

সামির এসব অপরাধের বিষয়ে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে তার বন্ধু সাইফ এম ইশতিয়াক হোসাইন (Saif M Ishtiak Hossain) একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তার স্ট্যাটাসটি পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল

সেনাপ্রধানের ভাইয়েরা এত বড়ই মাফিয়া যে তাদের বিদেশে পালিয়ে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করতে হয়। তারা দেশে আসলেই সরকার, আইন ও বিচারবিভাগ তাদের ঘাড় মটকে দিত। আলজাজিরার ভিডিও প্রমাণ করে দেশে আইনের শাসন কতটা শক্তিশালী যে মাফিয়ারাও দৌঁড়ের উপরে থাকে!! তারা নিরাপদে দেশে থাকতে পারে না, মাফিয়াগিরি করতে পারে না।

তবে আমি এখানে একটু অন্য প্রসঙ্গে কথা বলবো। আমি বরং ভিডিওতে দেখানো হাঙ্গেরির ব্যবসায়ী সামি এর কথা বলব। সে আমার ছোটবেলার স্কুলের ক্লাসমেট। তার বাবা আর্মির ডাক্তার ছিল, এবং আমার বাবার কলিগ ও বন্ধু। সামির একজন ছোট ভাই ছিল, তার নাম মাহি। মাত্র ১৪ বছর বয়সে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় সামি ও তার ছোট ভাই তাদের মাকে হারায়। তার ২ বছর পরই তাদের বাবা ২য় বিয়ে করে। তখন থেকেই সৎ মায়ের সংসারে সামি বখে যেতে শুরু করে। ১৫-১৬ বছর বয়স থেকেই ড্রাগ নেয়া থেকে শুরু করে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাসহ এমন কোনো কাজ নেই যা সে করতো না। তার নামে স্কুলে অনেক ডিসিপ্লিনারি অভিযোগ রয়েছে।

তার বাবা ঢাকায় পোস্টিং হবার পর সে ঢাকায় থাকতে তার বাবার সেনা ইউনিফর্ম পরে নিজেকে সেনা অফিসার পরিচয় দিয়ে একটি মেয়েকে পটায় এবং পরে পালিয়ে বিয়েও করে। পরে জানাজানি হলে তাকে তার বাবা বাসা থেকে বের করে দেয়। ইতিমধ্যে আমার সাথে তার এরপর আর কোনো রকম যোগাযোগ হয় না। তার কয়েক বছর পরে তারা বাবাও সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। সামি এসএসসি পাস করলেও ইন্টার পাস করতে পারে নাই শুনেছিলাম। পরে কমন বন্ধুর কাছে শুনেছিলাম যে ১ম বউকে ডিভোর্স দিয়ে (ডিভোর্স দিয়েছিল কিনা সিওর না) সে সেনাবাহিনীর আরো একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মেয়েকে পটায় এবং শ্বশুরের সহায়তায় হাঙ্গেরিতে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা শুরু করে। (এইটা সে কিভাবে করে সে ব্যাপারে তদন্ত করা যেতে পারে)

এত ডিস্টার্বড ব্যাকগ্রাউন্ডের একটি এডিক্টেড ছেলে টাকার জন্য অনেক কিছুই করতে পারে। এবং তখন থেকেই টাকার জন্য সে চুরি করা থেকে শুরু করে অনেক কিছুই করতো। তার মত ছেলের রেফারেন্স দিয়ে আলজাজিরা একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী ও আর্মি চিফকে দুর্নীতিবাজ ও মাফিয়া বানায় দিল, সেটা দেখে ছাগুরা লাফাইতে পারে, তবে আমি পারলাম না। ইন্টার ফেল সামিও কিভাবে হাঙ্গেরিতে ব্যবসা শুরু করলো সেটা ধরে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা টান দিলেই আরো তথ্য বেরিয়ে আসবে।

সামির ব্যাপারে যা বললাম তার সত্যতা আমার তখনকার স্কুলের বন্ধুরাও ভেরিফাই করতে পারে। তাদেরকেও ট্যাগ করলাম। (এখানে দুইজনকে ট্যাগ করা হয় যারা হলেন, Tawsif Rahman Mishu ও  Nazmus Saqeb)।

সংযুক্তি: সামি এক্স ক্যাডেট। ক্লাস এইটে তাকে ক্যাডেট থেকে বের করে দেয়া হইছিল ডিসিপ্লিনের কারণে। পরে আমাদের সাথে কুমিল্লার ইস্পাহানি পাবলিক স্কুলে ভর্তি হয়।

https://www.facebook.com/hossain.saifuddin16/posts/10158313586174864

সামির অপর পরিচিত বন্ধু ওমর শরিফ আরেফিনও সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে সামির সম্পর্কে নানা তথ্য উল্লেখ করেছেন। আরেফিনের স্ট্যাটাসটিও পাঠকের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হল;

সে প্রায় আঠারো বছর আগের কথা, আই আই এম টি তে কোর্স করছি, বন্ধু প্রদ্বীপ একটা ছেলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল, এক্স ক্যাডেট, সুন্দর মতো চেহারা স্মার্ট আর স্মাইলিং ফেস। ছেলেটার বাবা নাকি কর্নেল, বাসায় সৎ মা, মিলিটারি একাডেমি থেকে বার করে দিয়েছে আবার প্রেম করে একটা বিয়েও করেছে, আর এসব কারণে নাকি তার নিষ্ঠুর বাবা সৎ মায়ের ষড়যন্ত্রে তাকে ত্যায্য করেছে। আমার কাছে তার দুঃখের কাহিনী বলতো প্রায়ঃশই, যতোদুর মনে পড়ে আই আই এমটিতে কিছুদিন চাকরিও করেছিল।

এ সুবাদে আলাপচারিতা বাড়লো, টুকটাক চা সিগারেট, নাস্তা পানি এক্স ক্যাডেট হিসেবে তার আমার কাছে দাবি-ই ছিল, আমিও সেটাতে কার্পন্য করতাম না। তারপর একদিন সে ফোন দিল তার স্ত্রী নাকি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত, কিছু টাকা দরকার, আমার কেমন যেন সন্দেহ হলো, ঘটনা চক্রে তার স্ত্রীর স্কুলের বান্ধবী তখন আমার বাগদত্তা। কি মনে করে তাকে ফোন দিলাম ভাবলাম তার বান্ধবী মূমুর্ষু সেটা জানাই। তাকে ফোন করে তো আমি থ হয়ে গেলাম, ছেলেটার স্ত্রী নাকি এইমাত্র তার বাসা থেকে বের হলো, সম্পূর্ণ সুস্থ!!

এরপর থেকে আমি আর সেই ছেলেকে খুব একটা লাই দিতাম না। এরপর দিন গেল, একদিন শুনলাম সেই ছেলে অফিস থেকে টেলিফোন সেট চুরি করে ধরা খেয়েছে, কিছুদিন পর জানলাম তার স্ত্রী সন্তান সম্ভবা। এভাবেই চলছিল তারপর আবার দেখা হলো হিরোর সাথে, সাদা পাঞ্জাবি আর জিন্স পড়ে সে হাতে একটা এন্টেনা ভাঙ্গা ভিএইচএফ (ওয়াকি টকি) সেট নিয়ে ঘুরছে। ভি এইচ এফ দেখে জিজ্ঞেস করলাম কি ব্যাপার ভাঙ্গা রেডিও নিয়ে কি কর, সে বল্লো সে নাকি ইউ এস এম্বেসীতে সিকিউরিটির কাজ করে তাই রেডিও রাখতে হয়! সাধারনতঃ এই সব রেডিও এর রেঞ্জ হয় কয়েকশ মিটার! অথচ আমরা তখন শান্তিনগরে বসে বিয়ে খাচ্ছি, বুঝলাম এটাও তার একটা ভেল্কি! তার কিছুদিন পর সে তার স্ত্রী সন্তান রেখে হাওয়া হয়ে গেল, এর ভেতর পালিয়ে বিয়ে করার কারনে তার স্ত্রীকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছিল তার বাবা মা, মেয়েটা তখন বিশাল একটা দুর্বিপাকে পড়লো। স্বামী নিরুদ্দেশ, ছোট বাচ্চা, বিয়ে বাচ্চা নিয়ে পড়াশুনাতেও বাধা পড়েছে, কোন মতে একটা চাকরি করে সে তখন তার এই দুঃসময় পার করেছিল। তার বেশ কিছুদিন পর একটা রেস্তরায় বসে আছি, দেখি সেনাবাহিনীর একটা জ্বীপ থেকে নামছে হিরো, এর ভেতর তার স্বাস্থ্য প্রায় মাশাল্লাহ তিনগুন হয়েছে, সাথে একটা মেয়ে।

আমার সাথে দেখা হওয়ায় সে হতচকি্‌ত কিন্তু চাল্লু ছেলে ঘাবড়ালো না, বলে নতুন বিয়ে করেছে, জেনারেলের মেয়ে আলহামদুলিল্লাহ! আমার স্ত্রী সাথে সাথে তার বান্ধবীকে ফোন দিয়ে সব কথা জানালো, তার বান্ধবী মানে হিরোর প্রথম স্ত্রী তো আকাশ থেকে পড়লো এই কথা শুনে, সে কিছু জানেই না এ সম্পর্কে! এনিয়ে নারী মহলে নাকি ব্যপক কাল বৈশাখীর তান্ডব লীলা চলেছিল বলে শুনেছি, আমি মনে মনে বলেছিলাম লাকী ম্যান! তারপর দিন গেল, আমরা ড. কামালের ঘর জামাই তথাকথিত সাম্বাদেক জনৈক বার্গ্ম্যানের সাথে পরিচিত হলাম, রাজাকার গু আ জেলের চাক্কি পিষতে পিষতে অক্কা গেল, বাকী শুয়োরগুলা জাহান্নামবাসী হলো আলহামদুলিল্লাহ! পদ্মা সেতুও হয়ে গেল প্রায়, হঠাত আজকে ইউটিউবে দেখি সেই হিরোর চেহারা, আলহামদুলিল্লাহ তার স্বাস্থ্য এখন আরো ভালো, ভিডিও দেখে চিনতে পাড়লেও একটু দ্বিধা হলো, নানা সূত্রে শিওর হলাম যে হ্যা এটাই সেই হিরো, আলজাজিরার সামী!

বিঃদ্রঃ এইমাত্র এই সামীজ্বীর আরেক স্কুল বন্ধুর পোস্ট থেকে জানতে পারলাম যে সামীজ্বী আসলে এক্স ক্যাডেট নন।

বিঃ বিঃ দ্রঃ এইমাত্র আবার জানলাম যে সামীজ্বী আসলে এক্স ক্যাডেট কিন্তু ক্লাস এইটে তাকে বার করে দেওয়া হয়!! যাক যতটা ৪২০ ওকে ভাবছিলাম ও মনে হয় ততোটা ৪২০ না...।

https://www.facebook.com/arefeen.emon/posts/3948998071829387

নিউজ ট্যাগ: আল জাজিরা

আরও খবর



সুপারসনিক মিসাইল নিয়ে ভূমধ্যসাগরে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইসরাইলের ভূখণ্ডে ইরানের কয়েকশ ড্রোন এবং মিসাইল হামলার জেরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ভূমধ্যসাগরে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে রাশিয়া।

রবিবার (১৪ এপ্রিল) রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে আলজাজিরা জানিয়েছে, মার্শাল শাপোশনিকভ নামে রাশিয়ার ফ্রিগেটটি মিশরের সুয়েজ খাল হয়ে ভূমধ্যসাগরে প্রবেশ করেছে। এই ফ্রিগেট কিনঝাল সুপারসনিক মিসাইল দিয়ে সজ্জিত।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, পরিকল্পিত নৌ মহড়ার অংশ হিসাবে কিনঝাল সুপারসনিক মিসাইল সজ্জিত রাশিয়ান নৌবাহিনীর একটি ফ্রিগেট ভূমধ্যসাগরে প্রবেশ করেছে।

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মার্শাল শাপোশনিকভ তার ওপর অর্পিত কাজগুলি সম্পাদন করে যাবে বলেও বিবৃতিতে জানিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এর বাইরে আর বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়নি।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেটে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরাইল। এতে বিপ্লবী গার্ডের দুই কমান্ডারসহ ৭ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নিহত হন।

ওই ঘটনার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজন বিরাজ করছে। এই ইস্যুতে আঞ্চলিক বিশৃঙ্খলা এড়াতে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল ক্রেমলিন।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‌এই অঞ্চলের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ অস্থিতিশীলতার দিকে যাতে চলে না যায় সেজন্য এখনই সব পক্ষের সংযম বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে দামেস্কের কনস্যুলেটে হামলার উপযুক্ত জবাব দেয়ার যে হুঁশিয়ারি ইরানের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছিল তা রোববার (১৪ এপ্রিল) বাস্তবায়ন করেছে দেশটি। ইসরাইলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান।

ইরানের এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ পশ্চিমা দেশগুলো। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সসহ অনেক দেশ ইরানের হামলা ঠেকাতে ইসরাইলকে সহায়তা করেছে। ইসরাইলের নিরাপত্তার জন্য সবকিছু করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

এক বিবৃতিতে ইসরাইলে ইরানি হামলার শক্ত ভাষায় নিন্দা জানিয়েছেন বাইডেন। বিবৃতিতে তেল আবিবকে ওয়াশিংটনের লোহবর্মের মতো সুরক্ষা দেয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যাক্ত করেন বাইডেন।

এই অঞ্চলে মার্কিন বাহিনী এবং তাদের কোনো স্থাপনা ইরানের লক্ষ্যবস্তু না হলেও সমস্ত হুমকির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক রয়েছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।

বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের দিক থেকে আসা সব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে ইসরাইলকে সহায়তা করেছে।

এদিকে ইসরাইলে ইরানের এ হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ সলজের মুখপাত্র ইরানকে সতর্ক করে বলেছেন, এটি আঞ্চলিক যুদ্ধের ঝুঁকিতে রয়েছে।

জার্মানি ইসরাইলের পাশে থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, এই দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অযৌক্তিক হামলার মাধ্যমে ইরান একটি আঞ্চলিক সংঘর্ষের ঝুঁকিতে পড়ল।

এদিকে এই ঘটনায় তৃতীয় কোনো পক্ষ নাক গলাতে এলে কিংবা ইসরাইলের পাল্টা পদক্ষেপে সহায়তা করলে তার বিরুদ্ধেও হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। ওয়াশিংটন ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর পদক্ষেপে সমর্থন জানালে মার্কিন ঘাঁটিও লক্ষ্যবস্তু করা হবে বলে জানিয়েছে ইরান।

এদিকে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরাইলের ওপর ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার প্রতিক্রিয়ায় জারি করা এক বিবৃতিতে সব পক্ষকে শান্ত ও ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্রের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলমান পরিস্থিতিতে গাজা সংঘাত আরও দীর্ঘ হবে। সংঘাত এখনই শেষ হওয়া উচিত।

মুখপাত্র আরও বলেন, গত ২৫ মার্চ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে তা বাস্তবায়নে আর বিলম্ব করা উচিত নয়। ওই অঞ্চলে শান্তি এবং গঠনমূলক ভূমিকা পালন করার জন্য প্রভাবশালী দেশগুলোর প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে।


আরও খবর



এফডিসিতে সাংবাদিকের ওপর হামলা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন বা এফডিসিতে সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়েছেন শিল্পীরা। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। হামলায় ২৭ এর বেশি সাংবাদিক আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সাতজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা গেছে, এ হামলার মূল হোতা খল অভিনেতা শিবা শানু। এর পর জয় চৌধুরী ও আলেকজান্ডার বো হামলা চালান। হামলার একপর্যায়ে পুরো এফডিসির ফাইট ডিরেক্টরাও হামলায় অংশ নেন।

তবে ঠিক কী কারণে সাংবাদিকদের ওপর শিল্পীরা হামলা চালান, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি।

এদিন বিকেলে ২০২৪-২৬ এর শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটি শপথ গ্রহণ করে। সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগরকে শপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু। এরপর বাকি সদস্যরা মিশা সওদাগরের নেতৃত্বে শপথ গ্রহণ করেন।

শিল্পী সমিতির ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে মিশা-ডিপজল পরিষদ। সভাপতি পদে মিশা সওদাগর পেয়েছেন ২৬৫ ভোট। নিকটতম প্রার্থী মাহমুদ কলি পেয়েছেন ১৭০ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে মনোয়ার হোসেন ডিপজল পেয়েছেন ২২৫ ভোট। একই পদে ২০৯ ভোট পেয়েছেন নিপুণ আক্তার। মাত্র ১৭ ভোটে পরাজিত হয়েছেন গতবারের এই সাধারণ সম্পাদক।


আরও খবর
নতুন খবর দিলেন বিদ্যা সিনহা মিম

বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪

নিজেকে দেখে নিজেই মুগ্ধ পরীমণি

বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪




বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস আজ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সচতেনতা-স্বীকৃতি-মূল্যায়ন: শুধু বেঁচে থাকা থেকে সমৃদ্ধরি পথে যাত্রা প্রতিপাদ্য নিয়ে মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) পালিত হচ্ছে ১৭তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস।

বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে সোমবার (১ এপ্রিল) আলাদা বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি বলেন, অটিজম ও নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিসএ্যাবিলিটি (এনডিডি) বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু ও ব্যক্তিদের যথাযথ পুনর্বাসনে সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বেসরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর মানসিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধ জীবন গঠনের পথ আরো প্রসারিত হবে- এটাই সকলের প্রত্যাশা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে সকলের সঙ্গে অটিজম ও প্রতিবন্ধীতার শিকার ব্যক্তিদেরকেও সম্পৃক্ত করতে হবে।

এ লক্ষ্যে আরও বেশি প্রযুক্তিবান্ধব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে তিনি নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী (এনডিডি) সুরক্ষা ট্রাস্টকে আহ্বান জানান।

দিবসটি পালন উপলক্ষে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা রয়েছে। এ ছাড়া সভায় সভাপতিত্ব করবেন সমাজকল্যাণ সচিব মো. খায়রুল আলম সেখ।

অনুষ্ঠানে ৫ ক্যাটাগরিতে ১৩টি পুরস্কার দেয়া হবে। অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সফল ব্যক্তি ক্যাটাগরিতে মনোনীত হয়েছেন মুইদ হাসান; অটিজম নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মনোনীত হয়েছে প্রয়াস, অরুনোদয়, কল্যাণী ইনক্লুসিভ স্কুল; প্রতিবন্ধিতা উত্তরণে কাজ করে এমন ব্যক্তি হিসেবে অধ্যাপক ডা. মাহমুদ আহমেদ চৌধুরী আরজু, মো: সুমন মজুমদার, আলমগীর হোসাইন; সফল পিতা মাতা হিসেবে আশরাফুন নাহার ও মো. আশরার বিল্লাহ খান এবং সফল কেয়ার গিভার হিসেবে মনোনীত হয়েছেন মারজাহান বেগম ও সাজেদা আক্তার।


আরও খবর



ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ চলছে

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ভারতে চলছে ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। স্থানীয় সময় সকাল সাতটা থেকে এই ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সাত দফার এই নির্বাচনে আজ প্রথম দফায় ২১টি রাজ্য এবং‌ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে দেশের ১০২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

এই রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে অরুণাচল, আসাম, বিহার, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, রাজস্থান, সিকিম, তামিলনাড়ু, ত্রিপুরা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গ।

নির্বাচন কমিশন ১ লাখ ৮৭ হাজার ভোটকেন্দ্র জুড়ে ১৮ লাখেরও বেশি ভোটকর্মী মোতায়েন করেছে। নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৬ কোটি ৬৩ লাখ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে ৮ কোটি ৪০ লাখ পুরুষ, ৮ কোটি ২৩ লাখ নারী এবং ১১ হাজার ৩৭১ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।

২০ থেকে ২৯ বছর বয়সী ৩ কোটি ৫১ লাখ তরুণ ভোটার ছাড়াও প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন ৩৫ লাখ ৬৭ হাজার ভোটার।


আরও খবর



উপজেলা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতাদের ‘হস্তক্ষেপ’ নিয়ে চিন্তিত প্রার্থীরা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ মে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রথম অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনের দিকে নজর সবার। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত বেশ তৎপর। যেহেতু দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে না, তাই এবার দল থেকে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।

প্রথম ধাপের নির্বাচনে বেশিরভাগ উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগই। তাই-তো তৃতীয় কোনো প্রার্থী থাকলে সেদিকেও নজর দিতে হচ্ছে তাদের। অন্যদিকে, স্থানীয় সংসদ সদস্যরা (এমপি) তাদের নিজস্ব বলয়ে রাখতে চাইছেন উপজেলাগুলো। আবার ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও চাচ্ছেন, তাদের বলয়ের মধ্যে থাকুক উপজেলার চেয়ার। এমন এক বা একাধিক বলয়ের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে প্রার্থীদের।

তবে, একাধিক প্রার্থী জানিয়েছেন, তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রী কিংবা কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ চান না। কোনো রকম প্রভাব ছাড়াই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন প্রত্যাশা তাদের।

বর্তমান সংসদ সদস্যরা উপজেলার চেয়ারম্যান পদটিও অনেক স্থানে ভাগিয়ে নিতে চাচ্ছেন। নিজের পছন্দ মতো প্রার্থী দিচ্ছেন। যদিও ক্ষমতাসীনরা এবার দলীয় প্রতীক দেয়নি। সেই সুযোগ নিতে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র এমপিরা। এতে তৃণমূল রাজনীতিতে গ্রুপিংটা আরও প্রকাশ পাচ্ছে।

জানা গেছে, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এসব উপজেলার চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মোট ৬৯৬ জন। তার মধ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অন্তত ৪৬৬ জন নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বাকিরা বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য দলের প্রার্থী। তবে, বিএনপি ও জামায়াত দলীয়ভাবে নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের অনেক প্রার্থী এখনও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার দৌড়ে আছেন। এ নিয়ে চিন্তিত ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা। তাদের এক পক্ষ হস্তক্ষেপ চান, অপর পক্ষ হস্তক্ষেপ চান না বলে জানা গেছে।

দলীয় সূত্র মতে, উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে থাকার রেষ কাটতে না কাটতে উপজেলা নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের সব জের যেন উপজেলা নির্বাচনে প্রকাশ পাচ্ছে। অনেকের মতে, তৃণমূলে আরও বড় হচ্ছে বিভেদের দেয়াল। গেল সংসদ নির্বাচনে নেতাকর্মীদের মধ্যে মনোমালিন্যের যে বাঁক-বদল হয়েছিল, আসছে উপজেলার ভোটে তা আরও নতুন মাত্রা পাচ্ছে। বর্তমান সংসদ সদস্যরা উপজেলার চেয়ারম্যান পদটিও অনেক স্থানে ভাগিয়ে নিতে চাচ্ছেন। নিজের পছন্দ মতো প্রার্থী দিচ্ছেন। যদিও ক্ষমতাসীনরা এবার দলীয় প্রতীক দেয়নি। সেই সুযোগ নিতে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র এমপিরা। এতে তৃণমূল রাজনীতিতে গ্রুপিংটা আরও প্রকাশ পাচ্ছে।

আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে বিভিন্ন জায়গায় নিকটাত্মীয়দের মনোনয়ন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন উন্মুক্ত মানে উন্মুক্ত পরিবেশে নির্বাচন করার ইচ্ছা-বাসনা অনেকেরই থাকতে পারে। আমাদের বক্তব্য হলো, এমপি সাহেবরা বা মন্ত্রী-মহোদয়রা কোথাও কোনো প্রভাব বিস্তার করবেন না। প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকবে। প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কেউ হস্তক্ষেপ করলে তা যেন সফল করতে না পারে। আর প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর কেউ দলীয় নির্দেশ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নিকটাত্মীয়ের মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে উপজেলা আওয়ামী লীগের অভিযোগ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, আমরা এগুলো জানি। তদন্ত করে খোঁজখবর নিচ্ছি।’

“প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, মন্ত্রী-এমপিরা যেন প্রভাব বিস্তার না করেন। নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে হয়, কেউ কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। প্রশাসন কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বিঘ্নে ভোটদানের ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন।

আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন নেতাকর্মীরা। কারণ, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দল থেকে প্রতীক ও কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হচ্ছে না। এতে যে যার মতো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না। এজন্য নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়ছে। আবার কেন্দ্র থেকেও পছন্দের প্রার্থী সমর্থনের ইশারা দিচ্ছেন কেউ কেউ। এতে সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

বর্তমান সংসদ সদস্য ও তার আশেপাশের নেতাকর্মীরা উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে পারে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী ব্যারিস্টার সোহরাব খান চৌধুরী বলেন, তারা (ক্ষমতাসীন দল) একশ ভাগ প্রভাব বিস্তার করবে। আমি নিরপেক্ষ নির্বাচন চাচ্ছি, প্রভাবমুক্ত নির্বাচন চাচ্ছি, যেখানে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। ভোট দিতে পারে।”

২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এখনও আইনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান আছে। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনও বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। তাদের অনুপস্থিতিতে নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করতে আওয়ামী লীগ এবার উপজেলায় দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দিচ্ছে না।

এদিকে, মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, মন্ত্রী-এমপিরা যেন প্রভাব বিস্তার না করেন। নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে হয়, কেউ কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। প্রশাসন কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বিঘ্নে ভোটদানের ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। বিএনপি প্রকাশ্যে উপজেলা নির্বাচনের বিরোধিতা করলেও আমাদের জানা মতে তাদের অনেকেই অংশগ্রহণ করবেন।”

জানা গেছে, ২০১৫ সালে আইন সংশোধন করে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দেওয়ার বিধান যুক্ত করা হয়। ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এখনও আইনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান আছে। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনও বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। তাদের অনুপস্থিতিতে নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করতে আওয়ামী লীগ এবার উপজেলায় দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দিচ্ছে না। দলটির নেতারা প্রার্থী হচ্ছেন। অন্যদিকে, শুরুতে এ নির্বাচনে কিছু জায়গায় প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে সরে এসেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির যেসব নেতা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন, তাদের তা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা মহানগরের পাশের এক উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জাতীয় নির্বাচনে যে সমস্যা হয়েছিল, উপজেলাতেও সেটা হচ্ছে। স্বতন্ত্র এমপিরা মাঠ দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় নেতারাও বসে নেই। তারাও নিজেদের বলয় টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছেন। এতে অন্যান্য প্রার্থীরা বিপদের মুখে পড়েছেন। কেউ দেখাচ্ছেন সাংগঠনিক ভয়, আবার কেউ দেখাচ্ছেন এমপির ভয়। কেউ ঢাকায় বসে, আবার কেউ এলাকায় বসে রাজত্ব চাচ্ছেন। ভোট সুষ্ঠু করতে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে। কারও ইশারায় কাজ করা যাবে না। সবাই হস্তক্ষেপ করতে চাইবে, কিন্তু প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে।

নিউজ ট্যাগ: উপজেলা নির্বাচন

আরও খবর