শারদীয় দুর্গোৎসবের আজ অষ্টমী। অষ্টমীর দিনে পাবনায় শ্রী রাম কৃষ্ণ সেবাশ্রম মন্দিরে প্রথমবারের মত কুমারী পূঁজা উদযাপন করা হয়েছে। রবিবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে উৎসব মুখোর পরিবেশে এই কুমারী পূজা উদযাপন করা হয়।
জানা যায়, এদিন সর্বকামনা সিদ্ধির জন্য ব্রাহ্মণ কন্যাকে কুমারী হিসেবে পূজা করা হয় দেবী দুর্গার অঙ্গরূপে। পূজার আগে কুমারীকে স্নান করিয়ে পরানো হয় নতুন কাপড়। হাতে দেয়া হয় ফুল, কপালে সিঁদুরের তিলক, আর পায়ে আলতা। এরপর সুসজ্জিত আসনে বসিয়ে ষোড়শোপচারে পূজা করা হয় কুমারী মাকে। চারদিক মুখরিত শঙ্খ, উলুধ্বনি আর মায়ের স্তব-স্তুতিতে। পাবনা পাথরতলা শ্রীরাম কৃষ্ণ সেবাশ্রম মন্দিরে কুমারী পূঁজা দেখতে সকাল থেকেই ভিড় করেন শত শত পূণ্যার্থী।
মহাষ্টমীতে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুর্গাপূজার বিশেষ পর্ব এ কুমারী পূজা। সনাতন শাস্ত্রমতে, মাতৃভাবে কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা কল্পনা করে জগৎমাতার উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদনই কুমারী পূজার উদ্দেশ্য। এ পূজার মাধ্যমে নারী হয়ে উঠবে পবিত্র ও মাতৃভাবাপন্ন। প্রত্যেকে নারীর প্রতি হবে শ্রদ্ধাশীল।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, কুমারী কন্যার পূজা একাধারে সৃষ্টিকর্তার উপাসনা, মানবের বন্দনা আর পৃথিবীতে নারীর মর্যাদার প্রতিষ্ঠা। নারীর সম্মান, মানুষের সম্মান আর সৃষ্টিকর্তার আরাধনাই কুমারী পূজার শিক্ষা।
পাবনা সেবাশ্রম মন্দিরে রোববার দুপুর ১২ থেকে শুরু হয় এই কুমারী পূজা। পূজার চারদিনের মধ্যে মহাষ্টমীর অঞ্জলি ও কুমারী পূজা সর্বাধিক তাৎপর্যপূর্ণ। মহাষ্টমীর পূজা অনুষ্ঠিত হয় সকাল থেকে, দুপুর ১২ টা থেকে শুরু হয় কুমারী পূজা। এই সময় কুমারী রূপে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন পুণ্যার্থীরা।
১৬টি উপকরণ দিয়ে মহাষ্টমী পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর অগ্নি, জল, বস্ত্র, পুষ্প ও বাতাস এই পাঁচ উপকরণে দেয়া হয় ‘কুমারী’ মায়ের পূজা। অর্ঘ্য প্রদানের পর দেবীর গলায় পরানো হয় পুষ্পমাল্য। কুমারী পূজা শেষে ভক্তরা মহাষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি দেন।
মন্দিরে পূজো দেখতে আসা তিষ্ণা বিশ্বাস এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, পাবনা সেবাশ্রম মন্দিরে এই প্রথমবারের মত কুমারী পূজার আয়োজন করা হয়েছে। কুমারী পূজো দেখবো বলে সকাল থেকেই বসে আছি।
তপতি পদ্দার সাথে কথা হলে তিনি জানান, এই প্রথমবার আমাদের মন্দিরে কুমারী পূজো হওয়ায় আমার খুব ভালো লাগছে। কুমারী পূজো দেখতে আমার মত অনেকই আসছেন মন্দিরে। এই পূজোর মাধ্যমে সারাদেশের মানুষের মঙ্গল কামনা করেন তিনি।
কথা হয় পূঁজা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অচিন্ত কুমার ঘোষের সাথে তিনি বলেন, প্রথমবারের মত আমরা আমাদের মন্দিরে কুমারী পূজোর আয়োজন করেছি। এরপর থেকে প্রতিবছরই এই কুমারী পূজোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখবো।