পাকিস্তানের
উত্তরাঞ্চলীয় এলাকা শাউন্টার পাসে তুষারধসে ১১ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে চার বছর বয়সী
এক ছেলে শিশু ও চারজন নারী রয়েছে। স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক
গণমাধ্যম আল জাজিরা।
পাকিস্তানের
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, নিহতরা সবাই যাযাবর উপজাতির বলে জানা গেছে। তারা
গতকাল শনিবার শাউন্টারের পাহাড়ি এলাকা পার হওয়ার সময় তুষারধসে চাপা পড়ে মারা গেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পাকিস্তানে এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে।’ তিনি প্রাকৃতিক দুর্যোগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সাত বিভাগে বৃষ্টির আভাস, বাড়তে পারে দিনের তাপমাত্রা
সম্প্রতি পাকিস্তানে
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়েছে। উত্তরাঞ্চলের পর্বতগুলোর হিমবাগ গলে গত বছরে বন্যায় ১ হাজার
৭০০ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে দেশটিতে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা শীর্ষ ১০টি
দেশের একটি পাকিস্তান।
আল জাজিরার
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শাউন্টার পাসের কাছে গিলগিট-বালতিস্তানে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ
অঞ্চলের ভেতর দিয়ে পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে যাওয়া যায়।
গিলগিট বাল্তিস্তানকে
বলা হয় হিমবাহের অঞ্চল। এখানে গত কয়েক বছর ধরে ঘন ঘন হিমবাহ গলে যাওয়া এবং তুষারধসের
ঘটনা ঘটছে।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা জিয়ারাত আলী বার্তা সংস্থা এপিকে বলেছেন, নিহতদের মধ্যে চারজন নারী ও চার বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। তাঁরা যাযাবর উপজাতি সম্প্রদায়ের। গতকাল সকালের দিকে তাঁরা ছাগলের পাল নিয়ে কাশ্মীরের কেল এলাকা থেকে আস্টোরের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় তাঁরা তুষারধসের কবলে পড়ে মারা যান।
আরও পড়ুন: ডর্টমুন্ডকে হারিয়ে বায়ার্নের টানা ১১তম শিরোপা
এ দুর্ঘটনায়
১৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা। তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয়
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তুষারধসের নিচে চাপা পড়ে ১৫টি ছাগলও মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে
জানা গেছে।
উদ্ধারকারী কর্মকর্তা সুবাহ খান বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, এই দলে মোট ৩৫ জন যাযাবর ছিলেন। শাউন্টার পাস এলাকাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪ হাজার ৪২০ মিটার ওপরে অবস্থিত। এটি গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চলের আস্তোর জেলাকে সীমান্তবর্তী কাশ্মীর উপত্যকার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। গিলগিট বালতিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী খালিদ খুরশিদ এলাকার প্রধান শহর গিলগিট ও স্কারদুতে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন।
আরও পড়ুন: কে হচ্ছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট?
জাতিসংঘ জানিয়েছে,
ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে পাকিস্তানের উত্তর পর্বতশ্রেণির হিমবাহগুলো দ্রুত গলে
যাচ্ছে। ফলে গিলগিট বালতিস্তান ও খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে অন্তত ৩ হাজার ৪৪টি হিমবাহী
হ্রদ তৈরি হয়েছে।