নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় নবাব সলিমুল্লাহ রোডের আঙ্গুরা শপিং কমপ্লেক্সের নিচ তলায় ‘সুলতান ভাই কাচ্চি রেস্টুরেন্টে’র ম্যানেজারের সাথে বাড়িওয়ালার বিদ্যুৎ বিল ও পানি বেশি অপচয় নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে প্রকাশ্যে গুলি ছোঁড়ার ঘটনায় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ ৫ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ‘সুলতান ভাই কাচ্চি’ নামে রেস্টুরেন্টে এই ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয় তার পরে নিজের লাইসেন্সকৃত শটগান ও পিস্তল দিয়ে দোকানের ভিতরে ও বাহিরে এলোপাথালি গুলি করে দোকানের ম্যানেজার ও পথচারীসহ প্রায় ৫ জন গুলিবিদ্ধ হন।
আহতরা হলেন, সুলতান ভাই কাচ্চি রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার কাজল (৫০), পথচারী মো রাসেল (২২) এবং ভবন মালিক আজহার তালুকদার এর মেয়ে লাকী আক্তার। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে আজহার তালুকদারকে (৫০) তার বাড়ি থেকে শটগান ও পিস্তলসহ আটক করেন। প্রকাশ্যে গুলি ছোঁড়ার ঘটনায় শত শত উৎসুক জনতা ভীড় করে ঘটনাস্থলে। লোকজন ভয়ে দিক-বিদিক ছুটোছুটি শুরু করে। আহতদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে।
‘সুলতান ভাই কাচ্চি’র মালিক শুক্কুর জানান, ভবন মালিক আজহার তালুকদার এসে বলেন, পানির বিল বাবদ আপনাকে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। আমরা ১০ লাখ টাকা ঋণ হয়ে গেছি। আমি বললাম ১০ টাকা কেনো দিবো? আমি তো আপনার কাছ থেকে দোকার নেই নাই। আর আমি তো পানির বিল প্রতিমাসে দিয়েই যাই। পানিসহ আমার ৮০ হাজার টাকা ভাড়া। পানির জন্য ৫ হাজার, আর ভাড়া ৭৫ হাজার।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার সাথে পূর্ব কোন শত্রুতা ছিল না। শত্রুতা ছিল তারা ভাইয়ে ভাইয়ে। তিনি আরও জানান, আমার বাড়িওয়ালা আজিজুল হক তার কাছ থেকে আমি দোকান ভাড়া নিয়েছি। কিন্তু আজাহার তালুকদার তো আমার কাছে পানির বিল নিয়ে আসতে পারেন না। তিনি তার ভাইয়ের সাথে বুঝবে।
শুক্কুর আরও জানান, পানির বিল নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে আজাহার আমাকে খারাপ ভাষায় গালমন্দ করে। পরে আমিও গালি দেই। এরপর সে বলে দাড়া আসতাছি। একথা বলে সে চলে যায়। পরক্ষণে এসে সে গুলি করে। এতে আমার ম্যানেজারসহ দুইজন আহত হয়েছে।
তবে গুলি ছোঁড়া আজাহারের ভাই আজিজুল হকের স্ত্রী শারমিন আক্তার ডলি বলেন, বাড়ির মালিকসহ দুই ভাইয়ের মধ্যে অনেক সমস্যা ছিলো কিন্তু সেটা এখন আর নেই। আমরা তো সকলে উপরে নিজ থেকে শুক্কুর ভাই ফোন দিয়েছে তাড়াতাড়ি নিচে আসেন, পরে এসে দেখি সে নাকি গুলি করেছে তারে, তার (আজহার) মেয়ের পায়েও গুলি লেগেছে।
এবিষয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা বলেন, ঘটনা খবর পেয়ে আমরা সাথে সাথে আসি। পরে তাকে আটক করি। প্রাথমিকভাবে জানতে পারি, তারা দুই ভাই বাড়ির মালিক। তার বাড়ির বিদ্যুৎ বিল ও পানি নাকি অপচয় হয় এটা নিয়ে তাদের (রেস্টুরেন্টের লোকজন) সাথে কথা কাটাকাটি হয় পরে তার বাসায় থাকা অস্ত্র দিয়ে গুলি করে। তার ম্যানেজার কাজল এর পেটে গুলি লাগে তিনি এখন ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন আছে।