সাভারে নিখোঁজের পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও
খোঁজ মেলেনি এক কিশোরীর। এতে দিশাহারা হয়ে পরেছে ঐ কিশোরীর মা। মেয়ের খোঁজে আশুলিয়া
থানায় বারবার যোগাযোগ করলে লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে এক এস আই এর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায়
ভীত সন্ত্রস্ত নিখোঁজ কিশোরীর মা থানা বিমুখ হয়ে মেয়েকে খুঁজে পেতে র্যাবকে লিখিত
অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, গত ১৩ মে শনিবার আশুলিয়ার কাঠালতলা
এলাকার ভাড়াটিয়া আলমগীর হোসেনের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস আঁখি কাউকে কিছু না বলে বাসা
থেকে বের হয়ে যায়। বিভিন্ন স্থানে ১মাস খোঁজাখুঁজি করে ১২ই জুন থানায় একটি সাধারণ
ডায়েরি করে ওই কিশোরীর মা সুফিয়া বেগম(৩৬)। জিডির চার মাস পার হলেও মেয়ের সন্ধান
না পেয়ে আশুলিয়া থানার এসআই এমদাদুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার সাথে খারাপ ব্যবহার
করেন ওই এসআই।
কিশোরীর মা সুফিয়া আজকের দর্পণকে বলেন,
'দায়িত্বপ্রাপ্ত এস আই এমদাদুল হক উল্টো আমাকে দোষারোপ করেন মেয়ে হারানোর বিষয়ে।
একদিন রাতের বেলা এক হাজার টাকা নিয়ে দেখা করতে বলেন। এসময় রাতের বেলায় আসতে অপারগতা
জানিয়ে দিনে দেখা করবো বললে। এসআই এমদাদ খুব খারাপ ব্যবহার করেন। দুই দিন পর থানায়
ওসি স্যারের সাথে দেখা করতে গেলে, এস আই এমদাদ আমার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নেন এবং
অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। বলেন মেয়ে কোথায় আছে তুই জানোস, মেয়ে বিয়ে দিয়ে
জামাইয়ের কাছ থেকে বসে বসে টাকা খাস, আর জামাই ঠেলা দিলে থানায় আসোছ এ ছাড়া থানায়
আসো না। এসব বলে আমাকে লাঞ্ছিত করে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখে থানায়। ওসি স্যারের সাথে দেখা
করতে চাইলে আমাকে দেখা করতে দেয়নি। ঐদিন আমি অনেক কান্নাকাটি করেছি এবং আর কখনো থানায়
আসবো না বলে প্রতিজ্ঞা করেছি। পরে নিরুপায় হয়ে র্যাব-৪ এ একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
র্যাবের স্যারেরা আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেনি, তারা বলেছে মেয়ের খোঁজ পেলে জানাবে।
'আমি চাই আমার মেয়েকে দয়া করে জীবিত
অথবা মৃত উদ্ধার করে দেন আপনারা। আমি আর পারছিনা পাঁচ মাস ধরে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজছি
মেয়েকে। মেয়ে হারানোর বিষয়ে যদি আমি জড়িত থাকি আমার বিচার করুন, তারপরও আমার মেয়েকে
উদ্ধার করে দিন।
অভিযোগের ব্যাপারে আশুলিয়া থানার এস আই
এমদাদ আজকের দর্পণকে বলেন, 'আমি ধারণা করতেছি মেয়েটা হয়তো কারো সাথে সম্পর্ক করে
চলে গেছে। যার সাথে গিয়েছে ওই ছেলেটাকে শনাক্ত করতে পারিনি। মেয়ের মা জড়িত থাকতে
পারে এ বিষয়ে। খারাপ ব্যবহারের বিষয়টি মিথ্যা।'
মেয়েটি কারো সাথে সম্পর্ক করে গিয়েছে
বা মেয়ের মা জড়িত আছে, এ বিষয়ে কি নিশ্চিত হতে পেরেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে এস আই
এমদাদ বলেন, 'তার প্রবাসী মেয়ের জামাই তাদের খরচ দিচ্ছে, আর আমার কেন যেন মনে হচ্ছে
মেয়ের মা যানে তার মেয়ে কোথায় আছে। মেয়ের স্বামী থাকে বিদেশে। সন্ধেহ হয়েছে সে
(কিশোরীর মা) হয়তোবা জানে। আমি তাকে সন্দেহ করে (থানায়) এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি, তার
কাছে জানতে চাই যে আপনার মেয়ে কোথায় আছে? এতে সে (কিশোরীর মা) উত্তেজিত হয়েছে। তার
( মেয়ের) মা অবশ্যই কিছু না কিছু জানে আমাদের কাছে হাইড করতেছে। প্রবাসী স্বামীর কাছ
থেকে অনেক টাকা পয়সা নিছে তারা, প্রত্যেক মাসে টাকা পাঠায়। মেয়ের মা স্বীকার করেছে
তার মেয়ের জামাই টাকা পাঠায় সেই টাকা দিয়ে তাদের সংসার চলে। তার মেয়ে জামাই প্রবাসে
থাকে তার মেয়ে বিবাহিত, যতটুকু ধারণা করছি কোন একটা ছেলের সাথে গেছে।'