ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় পার্কে ঘুরতে এসে
অনৈতিক কাজের অভিযোগ পাঁচ তরুণ-তরুণীকে আটক করছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে
সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের স্বপ্ন জগৎ পার্ক থেকে তাদের আটক করা হয়।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিকেলে
স্বপ্ন জগৎ পার্কে অভিযান চালান পুলিশ সদস্যরা। এ সময় পার্কের ভেতর একটি কক্ষে অনৈতিক
কার্যক্রমের সময় তরুণ সোহান ও তরুণীকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাদের সহযোগিতার অভিযোগে
আরও তিনজনকে আটক করে সদর উপজেলায় নিয়ে আসা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আটক পাঁচজনকে
দুই মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এলাকাবাসী জানান, পার্কে অসামাজিক কাজসহ
অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা দিন দিন বেড়ে চলেছে। পার্কের ভেতরে বেশ কিছু ঘর তৈরি করা হয়েছে
তাতে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকে। এসব কাজ বন্ধ না করা
হলে ভবিষ্যতে এলাকার নতুন প্রজন্ম তথা যুব সমাজ ধ্বংসের মুখে নিমজ্জিত হবে।
আরও পড়ুন: টানা ছুটি শেষে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে আখাউড়া স্থলবন্দরে
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি
জানান, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পার্কে বসে থাকে তরুণ-তরুণীরা। কেউ কেউ প্রকাশ্যে
অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত। এর মধ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রয়েছে। স্কুল চলাকালীন কিংবা
বিকেলে প্রাইভেট পড়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রেমিকার সঙ্গে পার্কে বসে আড্ডা
দেয় প্রেমিকরা। অনৈতিক কাজের জন্য পার্কের পুকুর পাড় কিংবা পার্কের ঘর গুলো ব্যবহার
করছে তারা।
নিয়ন্ত্রণহীন অসংযত কার্যকলাপে একদিকে
যেমন তরুণ-তরুণীদের নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে এলাকার ভাবমূর্তি। ঘটছে
নানা অপ্রীতিকর ঘটনা। তাছাড়া পার্কে ঘুরতে আসা সাধারণ মানুষরা পড়ছেন বিব্রতকর অবস্থায়।
লোকলজ্জার ভয়ে তাদের থাকতে হচ্ছে কোনঠাসা হয়ে। শহরতলীর এমন একটি স্থানে পার্কের সামাজিক
পরিবেশ রক্ষা প্রশাসনের নজরদারির উপর গুরুত্বারোপ করেছেন স্থানীয়রা।
জুয়েল নামে এক ব্যক্তি বলেন, স্বপ্ন জগৎ
পার্কের অবস্থা খুবই খারাপ। পার্কে বসে ছাতার ভেতর লুকিয়ে খারাপ কাজ করে প্রেমিক যুগল।
সবচেয়ে লজ্জার বিদ্যালয়ের ইউনিফর্ম পরে আপত্তিকর কাজ করে ছাত্র-ছাত্রীরা। কিন্তু এ
নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেউ। আব্দুর জব্বার বলেন, পার্ক যেনো প্রেমখানা। এখানে
স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা আসে। প্রকাশ্যে চলে বেহায়াপনা, দেখার কেউ নেই। আমাদের মানসম্মান
নিয়ে বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়েছে।
পার্কে বেড়াতে আসা এক দম্পতি বলেন, একটু
অবসর সময় কাটাতে পরিবার নিয়ে পার্কে আসলে বিপাকে পড়তে হয়। যে দিকেই চোখ যায় উঠতি বয়সী
ছেলেমেয়েদের অসামাজিক কার্যকলা দেখতে হয়।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান জানান, অবৈধ কার্যক্রমে লিপ্ত থাকায় তাদের কারাদণ্ড দেয়া
হয়েছে। তবে পার্কটিতে এমন ঘটনা এর আগে ঘটলেও জরিমানার মাধ্যমে ছাড় পেয়েছে।
তবে এ ঘটনাটি পার্ক মালিক জানেন না দাবি
করলে তাকে শেষবারের মতো সতর্ক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সতর্ক না হলে পার্কটি বন্ধ করে
দেয়ার কথাও জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।