বাংলাদেশের নামে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের নানা স্থানের নামকরণের খবর শোনা যায়। কোনো সন্দেহ নেই যে এটা বাংলাদেশিদের জন্য গর্বের। এবার বাংলাদেশ নামে একটি দ্বীপ গড়ে তোলার খবর পাওয়া গেছে। পারস্য উপসাগরে এটি নির্মাণ করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। বাংলাদেশ নামের এই দ্বীপকে বলা হচ্ছে 'বাংলাদেশ সিটি অব পিস' বা শান্তির শহর বাংলাদেশ। তবে খুব তাড়াতাড়ি এই দ্বীপে বসবাস কিংবা ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন না কেউ। আগ্রহীদের পুরো নির্মাণকাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
জানা গেছে, মূলত দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের চিন্তাপ্রসূত প্রকল্প এটি। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী বিশ্ব মানচিত্রের আদলে 'দ্য ওয়ার্ল্ড আইল্যান্ডস' নামের এই দ্বীপপুঞ্জ নির্মাণ শুরু করে দুবাই। ২০০৩ সালে নির্মাণ শুরু হয় ছোট ছোট কৃত্রিম দ্বীপের। একশ মিটার গড় দূরত্বের দ্বীপগুলোর আয়তন ১.৪ থেকে ৪.২ হেক্টর পর্যন্ত। ডিম্বাকৃতির দ্বীপপুঞ্জের দৈর্ঘ্য ৯ কিলোমিটার ও ৬ কিলোমিটার প্রস্থ।
এই দ্বীপপুঞ্জ ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়া, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, অ্যান্টার্কটিকা এবং ওশেনিয়া মহাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে সাতটি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। দ্বীপগুলোর নামকরণ করা হয়েছে বিভিন্ন দেশ ও সেসব দেশের ল্যান্ডমার্ক বা অঞ্চলের নামানুসারে। যেমন- ফ্রান্স, ক্যালিফোর্নিয়া, মাউন্ট এভারেস্ট, অস্ট্রেলিয়া, নিউ মেক্সিকো, উর্নাভিক, বুয়েনেস আইরেস, নিউইয়র্ক, মেক্সিকো, সেন্ট পিটার্সবার্গ বা ইন্ডিয়া নামে।
ব্যয়বহুল প্রকল্পটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই উপকূলে অবস্থিত। এটি মূলত দুবাইয়ের অগভীর উপকূলীয় জলাশয় থেকে জলাবদ্ধ বালুর সমন্বয়ে গঠিত। প্রায় দুই দশক আগে কাজ শুরু হলেও ২০০৭-২০০৮ সালে বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের কারণে এর উন্নয়ন স্থগিত হয়ে যায়। ২০০৮ সাল পর্যন্ত ৬০% দ্বীপ বেসরকারি ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করা হয়। তবে বেশিরভাগ দ্বীপের উন্নয়ন এখনও শুরু হয়নি। ২০১২ সাল পর্যন্ত মাত্র লেবানন দ্বীপটি উন্নত হয়েছিল এবং এটিই একমাত্র দ্বীপ এখন পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে যার উন্নয়ন হয়েছে।
ব্যক্তিগত ও করপোরেট ইভেন্ট এবং পাবলিক পার্টির জন্য সেটিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০১৩ সালের শেষের দিকে আরও দুটি দ্বীপের উন্নয়ন করা হয়েছে। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ক্লেইন্ডিয়েনস্ট গ্রুপ 'দ্য হার্ট অব ইউরোপ' প্রকল্প চালু করার ঘোষণা দেয়। এই সিরিজের দ্বীপগুলোর মধ্যে ইউরোপ, সুইডেন এবং জার্মানির উন্নয়নের কাজ করবে ক্লেইন্ডিয়েনস্ট গ্রুপ।
২০২০ সালের জুনে হার্ট অব ইউরোপ প্রকল্পের অংশ হিসেবে রেইনিং স্ট্রিট নামে একটি রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করলেই কৃত্রিম বৃষ্টিপাত তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।