আজঃ বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

পদ্মায় ১১ যাত্রী নিয়ে স্পিডবোট ডুবি

প্রকাশিত:শনিবার ৩০ এপ্রিল ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ৩০ এপ্রিল ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুট থেকে একটি স্পিডবোট বাংলাবাজার ঘাটে আসার পথে ১১ জন যাত্রী নিয়ে ডুবে গেছে। শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে আটটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, শনিবার সকালে শিমুলিয়া থেকে একটি স্পিডবোট শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশে রওনা হয়। বোটটি পদ্মা সেতুর কাছে এলে ঢেউয়ের ধাক্কায় উল্টে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় জেলেনৌকা ও নৌপুলিশের টিম গিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করে।

বিআইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার ঘাট সূত্র জানিয়েছে, পদ্মা সেতুর কাছে আসার পর স্পিডবোটটির তলা ফুটো হয়ে যায়। এতে এটি ডুবে যায়। স্পিডবোটটিতে ১১ যাত্রী ছিল। সব যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি নৌপুলিশের। তবে স্থানীয়রা মনে করছেন, এখনো কয়েকজন নিখোঁজ থাকতে পারে।

সূত্র আরও জানায়, শিমুলিয়া থেকে ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী নিয়ে রওনা হয় বাবু নামের ওই স্পিডবোট। এর চালক ছিলেন মো. উজ্জ্বল। সেতু অতিক্রমের সময় প্রচণ্ড ঢেউয়ের ধাক্কায় বোট উল্টে যায়।

কাঁঠালবাড়ী নৌপুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. জাহানুর আলী বলেন, বোটটি তলা ফেটে ডুবে যায়। তবে সব যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। কোনো হতাহত ও নিখোঁজ নেই।

নিউজ ট্যাগ: স্পিডবোট

আরও খবর



ইসরায়েলের সাত শতাধিক এলাকায় বাজছে বিমান হামলার সাইরেন

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা শুরু করেছে ইরান। হামলার পর পর তেল আবিব ও পশ্চিম জেরুজালেমসহ ইসরায়েলি শহরগুলোতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের ৭২০টির বেশি জায়গায় বিমান হামলার সাইরেন বাজানোর শব্দ শোনা গেছে। খবর আলজাজিরার।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) গভীর রাতে ইসরায়েলের দিকে লক্ষ্য করে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে ইরান। মূলত চলতি মাসের শুরুর দিকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের দূতাবাসে ইসরায়েলি বোমা হামলার জবাবে এই পাল্টা হামলা শুরু করেছে তেহরান।

ইরানের হামলার পরপর ইসরায়েলি ভূখণ্ডের ভেতর ব্যাপক বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। ইরানি হামলায় সাত বছর বয়সী একটি মেয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। যদিও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, ইরানের ছোড়া অধিকাংশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশসীমার বাইরেই ভূপাতিত করা হয়েছে।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ক্রুজ মিসাইলসহ বেশ কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। তাদের হামলায় ২০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এদের বেশিরভাগ ইসরায়েলি সীমার বাইরে প্রতিহত করা হয়েছে। তবে ইরানের এই সমন্বিত আক্রমণে একটি ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনার সামান্য ক্ষতি হয়েছে।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে দেশটির কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে একের পর এক হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিল ইরান।

যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকেও দাবি করা হয়, ইসরায়েলে হামলায় ব্যবহারের জন্য শতাধিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত করেছে ইরান। যে কোনো সময় এ অস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানায় ইসরায়েল।


আরও খবর



অস্ট্রেলিয়ায় ঈদুল ফিতরের তারিখ ঘোষণা

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

অস্ট্রেলিয়ায় ঈদুল ফিতরের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটিতে আগামী ১০ এপ্রিল ঈদ উদযাপন করা হবে। সোমবার (৮ মার্চ) এক বিবৃতিতে এই নির্দেশনা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান ফতোয়া কাউন্সিল।

বিবৃতিতে বলা হয়, যদিও এখনো শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। তবে স্থানীয় ও বৈশ্বিক জ্যোর্তিবিজ্ঞানিদের সঙ্গে আলোচনা ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ফতোয়া কাউন্সিল এটি নিশ্চিত হয়েছে যে, অস্ট্রেলিয়ার টাইমজোন অনুযায়ী সিডনি ও দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় আগামী ৯ এপ্রিল ভোর ৪টা ২০ মিনিটে নতুন চাঁদ উদয় হবে। ওই দিন সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫টা ৩৯ মিনিটে এবং সূর্যাস্তের ১২ মিনিট পর, ৫ টা ৫১ মিনিটে দেখা মিলবে নতুন চাঁদের। আর পার্থসহ পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় নতুন চাঁদের জন্ম হবে স্থানীয় সময় ৯ এপ্রিল দুপুর ২ টা ২০ মিনিটে। এদিন সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৬ টা ২ মিনিটে এবং সূর্যাস্তের ১৬ মিনিট পর, সন্ধ্যা ৬ টা ১৮ মিনিটে উদয় হবে শাওয়াল মাসের চাঁদ।

এর ফলে, আগামী ৯ এপ্রিল অস্ট্রেলিয়ায় বিদায় নিচ্ছে ১৪৪৫ হিজরি বর্ষের রমজান। এতে আগামী ১০ এপ্রিল পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।


আরও খবর



বাঁচানো গেল না সোনিয়াকেও, শেষ হয়ে গেল পুরো পরিবার

প্রকাশিত:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

Image

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দগ্ধ শিশু সোনিয়া আক্তারের (১২) মৃত্যু হয়েছে। মা-বাবা ও তিন ভাই-বোনের পর সেও মারা গেল।

বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে সোনিয়ার মামা আবদুল আজিজ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

সোনিয়া উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালবাড়ী গ্রামের বাক প্রতিবন্ধী ফয়জুর রহমানের মেয়ে। সে স্থানীয় উত্তর গোয়ালবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত।

উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট থেকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়ার পর মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সোনিয়ার মা-বাবা ও তিন ভাই-বোনেরও মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একমাত্র সে বেঁচে ছিল।

মামা আবদুল আজিজ বলেন, গুরুতর দগ্ধ সোনিয়াকে প্রথমে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তার শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পৌঁছানোর কিছু সময় পরই সে মারা যায়। মরদেহ নিয়ে আমি বাড়ি ফিরছি।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ভোরে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ি এলাকার ভাঙারপার গ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনা ঘটে। এতে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়।

ওই ঘরের ওপর দিয়ে উচ্চ ভোল্টেজের ক্ষমতা সম্পন্ন পল্লী বিদ্যুতের লাইন ছিল। সেহরির পরে ঝড়-বৃষ্টি হলে বিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে বসতঘরের চালের ওপর পড়ে ঘরটি বিদ্যুতায়িত হয় এবং আগুন লেগে যায়। এ সময় ঘরের ভেতরে থাকা ফয়জুর রহমান, স্ত্রী শিরিন বেগম, মেয়ে সামিয়া, মেঝ মেয়ে সাবিনা ও ছেলে সায়েমের মৃত্যু হয় ও আহত সোনিয়াকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।


আরও খবর



স্কুলে বন্দুক নিয়ে যেতে পারবেন শিক্ষকরা

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যে মঙ্গলবার শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষকরা স্কুলে বন্দুক নিয়ে যেতে পারবেন। তবে তা প্রকাশ্যে দেখাবেন না। বিলটি এবার যাবে রিপাবলিকান গভর্নর বিল লি-র কাছে অনুমোদনের জন্য। এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে।

একবছর আগে ন্যাশভিলের স্কুলে গুলিচালানোর ঘটনায় তিন শিশু-সহ ছয়জনের মৃত্যু হয়। তারপর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।

বিলে বলা হয়েছে, স্কুলের ভেতরে কেউ যদি বন্দুক নিয়ে যেতে চান, তাহলে তাকে প্রতি বছর ৪০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ নিতে হবে। তিনি প্রকাশ্যে বন্দুক নিয়ে যেতে পারবেন না। বন্দুক গোপন রাখতে হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই বন্দুক নিয়ে আসার অনুমতি দেবেন। তার আগে পুলিশকে বিষয়টি জানাতে হবে এবং বন্দুকধারীর পরিচয় দিতে হবে।

রিপাবলিকানদের সংখ্যাধিক্য থাকা টেনেসি হাউসে বিলটি ৬৮-২৮ ভোটে পাস হয়েছে। বিলটি যখন পাস হয়, তখন দর্শক গ্যালারি থেকে স্লোগান দেয়া হয়, আপনাদের হাতে রক্ত লেগে থাকবে।

রিপাবলিকান নেতা রিয়ান উইলিয়ামস বলেছেন, একটি প্রতিরোধক তৈরি করার চেষ্টা হয়েছে। অঙ্গরাজ্যজুড়ে গুলির ঘটনা থামানোর চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সব ডেমোক্র্যাট সদস্য ও চারজন রিপাবলিকান বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেন।

ডেমোক্র্যাট নেতা জাস্টিন জোনস বলেন, রিপাবলিকান সহকর্মীরা আমাদের রাজ্যকে বন্দুকের নলের সামনে রাখছেন। তারা বন্দুক প্রস্তুতকারকদের সাহায্য করছেন। নৈতিক দিক থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।

জিফোর্ড ল সেন্টারের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেক অঙ্গরাজ্যে স্কুলের কর্মী ও শিক্ষকরা স্কুলের মাঠে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে যেতে পারেন।

গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলে বন্দুকধারীদের তাণ্ডবে অনেক শিশু ও শিক্ষকের প্রাণ গেছে। টেনেসি অঙ্গরাজ্যের নাশভিল শহরে গোলাগুলির এক বছর পর বিলটি পাস হলো।

নিউজ ট্যাগ: যুক্তরাষ্ট্র

আরও খবর



মর্গ থেকে মরদেহ বাড়িতে নেওয়ার টাকাও নেই ইকবালের পরিবারের

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে ষাটোর্ধ্ব মা সুফিয়া বেগম এখন নির্বাক। ঢাকায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া শ্রমিক ইকবাল হোসেনের মৃত্যুতে শুধু কাঁদছেন আর বুক চাপড়াচ্ছেন মা। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) ঘটনাটি জানার পর থেকেই কোনো দানাপানি মুখে নেননি তিনি। ছেলে যে আর ফিরবে না এটা বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না তিনি। কথা ছিল ঈদের ছুটিতে ছেলে বাড়িতে আসবে। সেই আসা আসবেই। কিন্তু জীবিত নয়, লাশ হয়ে।

সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ইউটার্ন নির্মাণের জন্য সড়কে রাখা সিমেন্টের পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় একটি তেলবোঝাই লরি। এ সময় তেল বোঝাই লরিটিতে আগুন জ্বলে উঠে। এ সময় পাশে এবং পেছনে থাকা একটি প্রাইভেটকারসহ আরও চারটি গাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান সিমেন্টবোঝাই ট্রাকের লেবার ইকবাল হোসেন। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ৮ জনকে উদ্ধার করে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।

নিহত ইকবালের বাড়ি যশোরের চৌগাছা উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে। বর্তমানের ইকবালের নিথর দেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের হিমঘরে রাখা হয়েছে।

হতদরিদ্র পরিবারের ইকবাল বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। গ্রামে দীর্ঘদিন ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন তিনি। কিন্তু ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় বছর খানেক আগে বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে পাড়ি দেন রাজধানী ঢাকার সাভারে। সেখানে বিভিন্ন পরিবহনে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। স্ত্রী মঞ্জুয়ারাও স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন।

১০ দিন আগে পাঁচ বছর বয়সী ইকবালের ছোট মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি চৌগাছায় আসেন মা সুফিয়া বেগম। কথা ছিল ঈদের দুইদিন আগে ছুটি নিয়ে স্ত্রী ও বড় মেয়েকে নিয়ে গ্রামে আসবেন। কিন্তু ঈদের ছুটিতে নয়, জীবনের মতো ছুটি নিয়ে ফিরছে ইকবালের নিথর দেহ।

ইকবালের মা সুফিয়া বেগম আহাজারি করতে করতে বলেন, আমার ছেলেটা জন্ম থেকেই কষ্ট করেছে। অনেক দেনাদায়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। তাই বছর খানিক আগে তার উপার্জনের ভ্যানটা বিক্রি করে সবাইরে নিয়ে ঢাকায় গেছিল। সেখানে একটা বস্তিতে বাসা ভাড়া নিয়ে সবাই একসঙ্গে থাকছিলাম। আমিও সেখানে থাকি। ঈদে আমাদের সবার গ্রামে আসার কথা ছিল, কিন্তু ঈদের সময় গাড়ি পাওয়া যায় না। তাই ইকবালের ছোট মেয়েডারে নিয়ে আমি ১০ দিন আগে গ্রামে এসেছি। ঈদের দুইদিন আগে ইকবাল তার বউ মেয়েরে নিয়ে গ্রামে আসার কথা ছিল।

ইকবালের ছোট মেয়েকে কোলে নিয়ে বুক চাপড়াতে চাপড়াতে তিনি বলেন, ও আল্লাহ আমরা ইকবালরে কই নিয়ে গেলা। ইকবালের বদলে আমারে নিতে পারতা। এখন আমাদের কী হবে। তার বউ বাচ্চাদের কী হবে। এই তোমার বিচার?

মঙ্গলবার বিকেলে ইকবালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে আত্মীয়-স্বজনের মাতম চলছে। তাদের কান্নায় প্রতিবেশী ও উপস্থিত কেউই কান্না ধরে রাখতে পারছিলেন না। সবাই তার ছোট মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছেন। তাকে ঘিরেই নানা সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন ইকবালের প্রতিবেশী স্বজনেরা।

ইকবালের প্রতিবেশী স্থানীয় স্কুলশিক্ষক আরিফুজ্জান বলেন, ইকবালরা দুই ভাইবোন। তার একটা বোন, বিয়ে হয়ে গেছে। হতদরিদ্র পরিবারে ইকবালই উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। দেনার কারণে সপরিবারে ঢাকায় গেছিলেন। কিন্তু তার সেই দেনা পরিশোধ হওয়ার আগেই মৃত্যু হলো। এখন তার পরিবারের কী হবে?

তিনি জানান, ইকবালের মরদেহ বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রয়েছে। বুধবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ চৌগাছায় আসবে। তার মরদেহ আসার প্রেক্ষিতে জানাজার সময় চূড়ান্ত হবে। তবে এত টাকা খরচ করে ইকবালের মরদেহ গ্রামে আনার সক্ষমতাও নেই তার পরিবারের।

স্থানীয় সুখপুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, পরিবারটি নিঃসন্দেহে অসহায়। একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে ছিল ইকবাল। এখন পরিবারটি আরও অসহায় হয়ে পড়লো। পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছি। আমরা তাদের পরিবারের পাশে থাকবো। স্থানীয় বিত্তবান মানুষদের ইকবালের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি।


আরও খবর