পেস্ট্রি খেতে যারা ভালোবাসেন, তাদের জন্য
আজকের দিনটি আরও সুস্বাদু হতে চলেছে! কারণ, আজ পেস্ট্রি দিবস। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি
বছরের ৯ ডিসেম্বর পেস্ট্রি দিবস উদযাপন করা হয়। খাবারের যেহেতু কোনো নির্দিষ্ট দেশ
নেই, তাই চাইলে আপনিও দিবসটি উদযাপন করতে পারেন।
ডেজ অব দ্য ইয়ারের তথ্য মতে, প্রাচীনকাল
থেকেই পেস্ট্রির দেখা পাওয়া যায়। যখন প্রাচীন রোমান গ্রিকরা খাবারের পাশাপাশি ট্রিট
হিসেবে ফিলো-স্টাইলের পেস্ট্রি তৈরি করত। তখন থেকেই পেস্ট্রি তৈরি হতে থাকে। তখনকার
পেস্ট্রির প্রধান উপাদানগুলো ছিল—ময়দা, তেল ও মধু।
মধ্যযুগে পেস্ট্রির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।
এর পর থেকে পেস্ট্রি শেফদের গুরুত্বও বাড়তে শুরু করে। ফলে পেস্ট্রি ব্যবসা জমে উঠতে
থাকে। রাজা থেকে কৃষক—সবার মাঝে এই খাবারটির চাহিদা ছিল।
এরপর অনেক দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে পেস্ট্রি
মিশে গেছে এবং খাবারের পাশাপাশি পেস্ট্রি পরিবেশনের চল গড়ে উঠেছে।
পৃথিবীতে নানা ধরনের পেস্ট্রি পাওয়া যায়।
তবে সবচেয়ে সুপরিচিত একটি হলো তুর্কির বাকলাভা ফিলো-টাইপ পেস্ট্রি। এটি বাদাম ও মধুর
ফোঁটা থেকে তৈরি একটি মিষ্টি পেস্ট্রি।
অবশ্য পেস্ট্রি দিবস উদযাপন নিয়ে বিস্তারিত
ইতিহাস জানা যায় না। কে বা কারা দিবসটির প্রচলন করেছিলেন, তা অজানা। কবে থেকে শুরু
হয়েছিল, তাও জানা যায় না। কিন্তু তাতে কী, দিবস যেহেতু আছে তাই উদযাপন করা যেতেই পারে।
১৮২৮ সালে মেক্সিকোতে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল।
ওই সময় কতিপয় লুটেরা রেমোঁতেলের পেস্ট্রির দোকানে হামলা চালায়। ভাঙচুর করে, সব পেস্ট্রি
খেয়ে ফেলে, ক্যাশবাক্স লুট করে। রেমোঁতেল মেক্সিকো সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
সুরাহা করতে না পেয়ে তিনি ফরাসি সরকারের কাছে অভিযোগ করেন। এক দশক পর সেই অভিযোগ নজরে
আসে ফরাসি রাজা লুই ফিলিপের।
ফরাসি সরকারের কাছে এমনিতেও মেক্সিকোর
অনেক দেনা ছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হয় পেস্ট্রি দোকান–সংশ্লিষ্ট নতুন যন্ত্রণা।
মেক্সিকান সরকার দেনা পরিশোধে অস্বীকৃতি
জানাতেই ১৮৩৮ সালে রাজা ফিলিপ বিশাল নৌবহর পাঠিয়ে দিলেন। ব্যস, শুরু হয়ে গেল যুদ্ধ।
ইতিহাসে যুদ্ধটি পেস্ট্রি যুদ্ধ নামে পরিচিত।
তুমুল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে মেক্সিকো ও ফ্রান্স।
এর পর তিন মাসের বেশি সময় ধরে চলে সেই যুদ্ধ। মেক্সিকো পিছু হটলে সেই যুদ্ধে জিতে যায়
ফ্রান্স। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, জিতে গেলেন রেমোঁতেল নামের ফরাসি একজন পেস্ট্রি দোকানদার!
পেস্ট্রির মতো সুস্বাদু খাবারের সঙ্গে
যুদ্ধের মতো ধ্বংসাত্মক বিষয়ের নাম জড়িত থাকাটা দুঃখজনক। তবে এতে মানবসভ্যতার কিছুটা
ক্ষতি হলেও পেস্ট্রির কিন্তু হয়নি। বরং এর পরিচিতি বেড়েছে। প্রাচীন মিসর, গ্রিস, রোমান—তথা ভূমধ্যসাগরীয়
অঞ্চলে প্রথম এই খাবারের প্রচলন হয়।
মুসলিম শাসকদের হাত ধরে ইউরোপে আসে এটি।
ফ্রান্স ও ইতালির রেনেসাঁর সময় দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে মুখরোচক পেস্ট্রি। ধীরে ধীরে
সারা পৃথিবীতেই ছড়িয়ে যায় দারুণ এই খাবার। বর্তমানে খুব কম মানুষই আছেন, যাঁরা পেস্ট্রি
অপছন্দ করেন।
পেস্ট্রি দিবস উদযাপনের করতে চাইলে এখনই
একটি পেস্ট্রির স্বাদ নিন। দিবসটি আরও সামাজিক করে তুলতে বন্ধুদের দাওয়াত দিতে পারেন।
তারপর তাদের সঙ্গে পেস্ট্রি খেতে পারেন। এতে তাদের সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে, আবার দীর্ঘদিনের
জমে থাকা আড্ডাও হয়ে যাবে।