কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধনে ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের আনোয়ারায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে ব্যানার-ফেস্টুন-তোরণে ছেয়ে গেছে গোটা আনোয়ারা উপজেলা। গুরুত্বপূর্ণস্থানগুলোকে সাজানো হয়েছে বিশেষ ভাবে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি মেগাপ্রজেক্টসহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুনে।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষে নৌকার আদলে মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। ৯৬ ফুট লম্বা ও ৪৮ ফুট প্রশস্ত এ মঞ্চে একসঙ্গে বসতে পারবেন ২৫০ জন। এ ছাড়া আয়োজন ঘিরে আগত দর্শনার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা ক্যাম্প, গণশৌচাগার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।জনসভায় দশ লাখ জনসমাগমের টার্গেট রয়েছে। সমাবেশস্থল ও আশপাশের এলাকায় মাঠ প্রস্তুত করা হচ্ছে। টানেল সংযোগ সড়কে রোড মার্কিং, ডিভাইডারে রং, চাতরী চৌমুহনী বাজার থেকে ক্রসিংসহ বিভিন্ন স্থানে ইউটার্নে চলছে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। চৌমুহনী বাজার থেকে সিইউএফএল পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করা হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন ও প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে জেলার ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আলাদা পরিবহনব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আগামী শনিবার ভোর থেকে এই যাত্রা শুরু হবে। ঢাকার ‘কলরেডি’ কোম্পানি মাইক ও শব্দযন্ত্র নিয়ে আসছে জনসভায়। সভাস্থলে এলইডি মনিটরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যও প্রচার করা হবে।
তবে আগে জনসভার সময় ছিল বেলা ১টায়। এখন সময় পরিবর্তন করে সকাল ১০টায় হওয়ায় জনসমাগম নিয়ে কিছুটা ভাবনায় পড়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তারপরও ১০ লাখ মানুষের জমায়েত হবে বলে আশা করছেন তারা। এ জনসভার আয়োজন করছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি বলেন, 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করতে ২৮ অক্টোবর শনিবার সকাল দশটায় চট্টগ্রাম আসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জনগণ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী-সমর্থকদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। কেইপিজেড মাঠের বাইরে আশাপাশের এলাকাগুলোও লোকে লোকারণ্য হয়ে যাবে আশা করছি। বঙ্গবন্ধু টানেল বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে ভিন্ন আঙ্গিকে তুলে ধরবে।'
তিনি আরও বলেন, '২৮ অক্টোবর আনোয়ারায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভার সময়সূচি দুপুর ২টার পরিবর্তে সকাল ১০টায় শুরু হবে। তিনি তৃণমূলের নেতাকর্মী এবং সর্বস্তরের জনগণকে জনসভা সফল করার আহ্বান জানান ভূমিমন্ত্রী।'
রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন শরীফ বলেন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির প্রচেষ্ঠায় আনোয়ারায় সবচেয়ে বড় বরাদ্দের কাজ উপকূলীয়বাসীর স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মান করেছেন শেখ হাসিনার সরকার। বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের পর রায়পুর ইউনিয়নের উপর দিয়ে মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা। অবহেলিত উপকূল এখন মডেল এলাকায় রূপ দিচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর জনসভা স্মরণ করে রাখবে আনোয়ারাবাসী।'
জানতে চাইলে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, মঞ্চের কাজ চলমান রয়েছে। নৌকার আদলে মঞ্চটিতে ২৫০ জন বসতে পারবেন। তবে কারা বসবেন, তা এখনো ঠিক হয়নি। জনসভার মাইক আসছে ঢাকা থেকে। ঢাকার ‘কলরেডি’ কোম্পানি শব্দযন্ত্র নিয়ে আসবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সভাস্থলে এলইডি মনিটরের মাধ্যমে প্রচারও করা হবে।
মঞ্চের কাজ পেয়েছে চট্টগ্রামের সাহাবউদ্দিন ডেকোরেশন। ৪ হাজার ৬০৮ বর্গফুট আয়তনের মূল মঞ্চের দুই পাশে নৌকার আদল থাকবে বলে জানান এই ডেকোরেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপক খন্দকার মানিক আহমেদ। তিনি বলেন, পাঁচ দিন আগে থেকে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়। মঞ্চ তৈরির জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে শতাধিক লোক কাজ করছেন। কেইপিজেড মাঠটি অনেক ভেতরে। সেখানে যোগাযোগব্যবস্থার জন্য প্রয়োজন হয় নিজস্ব গাড়ি। আশপাশে দোকানপাটও নেই। তাই শ্রমিকেরা সেখানেই খাওয়া দাওয়া এবং রাত যাপন করেন বলে জানান তিনি।