দ্বাদশ জাতীয়
সংসদ নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো জয়লাভ করায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কেসি।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ অভিনন্দন
জানান।
প্যাট্রিসিয়া
লেখেন, নির্বাচনে জয়ের জন্য আমার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন।
তিনি বলেন,
জাতীয় অগ্রাধিকার অর্জনে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বের জন্য কমনওয়েলথ প্রস্তুত। বাংলাদেশের
জনগণ এবং আমাদের কমনওয়েলথ পরিবারের সদস্যদের জন্য কমনওয়েলথ আপনার সঙ্গে কাজ করতে উন্মুখ।
তবে, বাংলাদেশের
ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মানদণ্ড অনুযায়ী হয়নি বলে অভিমত জানিয়েছে যুক্তরাজ্য।
একই সঙ্গে জনগণের স্বার্থে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অভিন্ন পথ বের করার আহ্বান জানিয়েছে
দেশটি।
এক বিবৃতিতে
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচন নির্ভর করে গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতার
ওপর। মানবাধিকার, আইনের শাসন ও যথাযথ প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার
অপরিহার্য উপাদান। নির্বাচনের সময় এসব মানদণ্ড ধারাবাহিকভাবে মেনে চলা হয়নি। ভোটের
আগে বিরোধী দলের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’
নির্বাচন সামনে
রেখে এবং নির্বাচনের প্রচার চলাকালে সহিংসতা ও ভয়ভীতি দেখানোর কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাজনীতিতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কোনো স্থান নেই।’
যুক্তরাজ্য
ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা
হয়, একটি টেকসই রাজনৈতিক সমঝোতা ও সক্রিয় নাগরিক সমাজের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি
হলে দীর্ঘমেয়াদে দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে।
বাংলাদেশের
সব রাজনৈতিক দলের প্রতি মতভিন্নতা দূর করে জনগণের স্বার্থে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অভিন্ন
পথ বের করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। এই প্রক্রিয়ায় সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা
দিয়েছে দেশটি।
নির্বাচন নিয়ে
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘সব দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। সে কারণে বাংলাদেশের মানুষের ভোট দেওয়ার
যথেষ্ট বিকল্প ছিল না।’
অন্যদিকে বাংলাদেশের
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রও।
দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর সোমবার এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা
হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণ এবং গণতন্ত্র, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা
ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি তাদের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে। যুক্তরাষ্ট্র লক্ষ করেছে,
৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিরোধী দলের হাজার হাজার সদস্যকে গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনের দিন
অনিয়মের খবরে উদ্বিগ্ন।
দেশটির পররাষ্ট্র
দপ্তর বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে একমত যে, এই নির্বাচন অবাধ
বা সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ না করায় আমরা হতাশ।’
এর আগে, গত
৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৯৯ আসনে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ২৯৮ আসনের ফল
ঘোষণা করে আজ মঙ্গলবার গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। ২৯৮ আসনের মধ্যে
আওয়ামী লীগ ২২২ আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে। নির্বাচনে জাতীয় পার্টি
১১ এবং ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও কল্যাণ পার্টি একটি করে আসনে নির্বাচিত হয়েছে। এছাড়া
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে বিজয়ী হয়েছেন।
এদিকে, আগামী
বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে বলে জানা গেছে। ওইদিন সন্ধ্যা
৭টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেবেন। তাদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।