
“বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবেনা” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নের পথে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি ( নেছারাবাদ) উপজেলা। সারাদেশে আশ্রয়ণ- ২ প্রকল্পের আওতায় সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে গ্রাম বাংলার প্রান্তিক ভূমিহীন পরিবারকে ২ শতাংশ করে খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদানপূর্বক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে একক গৃহ নির্মাণের মাধ্যমে বরাদ্দ প্রদান করা হচ্ছে।
এছাড়া প্রতিটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে সমবায়ভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষে রেজিষ্ট্রেশনের কাজ চলছে। আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের সুপেয় খাবার পানি ও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থাসহ সম্ভাব্য সকল সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে ভূমিহীন-গৃহহীন ছিন্নমূল মানুষকে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের আওতায় এনেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অন্যান্য উপজেলার মত পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি (নেছারাবাদ) উপজেলায়ও ভূমিহীন ও গৃহহীনদের তালিকা করা হয়। এই তালিকায় সংযোজন-বিয়োজন উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির তত্ত্বাবধানে একটি চলমান প্রক্রিয়া। ‘ক শ্রেণি’র এই তালিকা উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটি কর্তৃক দফায় দফায় যাচাই-বাছাই করা হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্দেশনা অনুযায়ী নেছারাবাদ উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করার উদ্দেশ্যে গত ১২ই মার্চ তারিখে উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, শিক্ষক ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তালিকা অনুযায়ী ‘ক শ্রেণি’র ভূমিহীন ও গৃহহীন ৫৯৭ পরিবারকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রকল্পের ১ম, ২য় ও ৩য় পর্যায়ে যথাক্রমে ১২০, ২০৪ ও ১৭৩ টি এই মোট ৪৯৭টি গৃহ তৈরী করে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে সনদপত্র ও দলিলসহ হস্তান্তরের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হয়েছে। চতুর্থ পর্যায়ে বরাদ্দ পাওয়া ১০০টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। নির্মাণাধীন ঘরগুলোতে তালিকাভুক্ত ১০০টি ‘ক শ্রেণি’র ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের মাধ্যমে নেছারাবাদ উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের এ প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের নির্দেশনা ও ‘মুজিববর্ষ উপলক্ষে একক গৃহ নির্মাণ ও পরিকল্পনা সংক্রান্ত ম্যানুয়েল’ অনুসারে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। গৃহসমূহ নির্মাণ কার্যক্রম পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ আমীনুল ইসলাম, নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হক, নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মানষ কুমার দাস সহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নিয়মিত পরিদর্শন করে চলছেন।
চতুর্থ পর্যায়ে অনুমোদিত সেমিপাকা ঘরগুলোর প্রাক্কলিত ব্যয় ২ লক্ষ ৮৪ হাজার ৫ শত টাকা। চতুর্থ পর্যায়ের বরাদ্দ প্রাপ্ত ১০০টি গৃহ আগামী ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে নেছারাবাদ উপজেলা ‘ক শ্রেণির’ ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হবে। পরবর্তীতে নদী ভাঙনের ফলে, দূরারোগ্য ব্যাধিতে চিকিৎসা করতে গিয়ে সর্বশান্ত হলে, বিভিন্ন দুর্যোগে এবং পরিবার বিভাজনের ফলে বসবাসের পর্যাপ্ত জায়গা না থাকলে তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হবে।