রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে
বকেয়া বেতন পরিশোধ না করায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা দিতে দেয়নি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
ওই ছাত্রীর নাম রোজিনা আক্তার। সে স্থানীয় মুনস্টার কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্রী। ডিটারজেন্ট পাউডার খেয়ে সে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। রোববার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। রোজিনা গোয়ালন্দ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের নছরউদ্দিন সরদারপাড়ার নিজাম উদ্দিন শেখের মেয়ে।
স্কুলছাত্রীর
বাবা নিজাম উদ্দিন শেখ জানান, তার মেয়ের ক্লাস রোল ৩। চলতি মাসসহ স্কুলের বিভিন্ন ফি
বাবদ ১৯০০ টাকা পাওনা হয়। সপ্তাহখানেক আগে ১৫০০ টাকা পরিশোধ করে দিই। রোববার স্কুলে
পরীক্ষা চলাকালে চলতি মাসের বেতন বকেয়া থাকায় তার মেয়েকে অপমান করে পরীক্ষার হল থেকে
বের করে দেন প্রধান শিক্ষক মো. আজিম। অপমান সইতে না পেরে বাড়িতে এসে সবার অজান্তে ডিটারজেন্ট
পাউডার খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। বিষয়টি টের পেয়ে দ্রুত তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ তার মেয়েকে এভাবে অপমান না করে আমাকে বলতে পারত। আমি বেতনের ৪০০ টাকা পরিশোধ করে দিতাম। স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক জানান, শেষ পরীক্ষার দিন শুধু রোজিনা আক্তারই নয়, বেতন বকেয়া থাকায় প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি। রোজিনা এ ধরনের ঘটনা ঘটাবে তা তারা বুঝতে পারেননি।
বিদ্যালয়ের প্রধান
শিক্ষক মো. আজিম জানান, মুনস্টার কলেজিয়েট স্কুল একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের
বেতনেই শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন হয়। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছে অন্তত ৪-৫ লাখ টাকা
বেতন বকেয়া হয়ে আছে। বকেয়া বেতন আদায়ের জন্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি।
তবে কোনো শিক্ষার্থীকে অপমান করা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। বকেয়া বেতন পরিশোধ করলে
পরবর্তীতে এ পরীক্ষা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আঁখি বিশ্বাস জানান, ডিটারজেন্ট পাওডার খেয়ে অসুস্থ হওয়া ওই রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল, তবে ঝুঁকিমুক্ত বলতে পারছি না।