বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় দায়ের হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সংস্থাটির ঢাকা অফিসের ডেপুটেশনে থাকা ডিজিএম মেজর তাইজ ইবনে আনোয়ারসহ ত্রিশ জনের নামে চার্জশিট দাখিল করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। মেজর তাইজ ইবনে আনোয়ার নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্যও ছিলেন।
গত ২২ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. আলমগীর হোসেন পাটোয়ারী চার্জশিটটি জমা দেন। পরে ২ জুলাই সিএমএম আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় এটি জমা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩১/৩২/৩৩/৩৫ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
সিএমএম আদালতে বিমানবন্দর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মো. ফরিদ মিয়া এ তথ্য জানান।
চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ২৬ কর্মচারী রয়েছেন। উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- এমটি অপারেটর জাহাঙ্গীর আলম, মো. মাসুদ, মো. মাহবুব আলী, এমএলএসএস মো. জাহিদ হাসান, অফিস সহায়ক আওলাদ হোসেন, এমটি অপারেটর এনামুল হক, এমএলএসএস হারুন অর রশিদ, এমটি অপারেটর মাহফুজুল আলম, এমএলএসএস সমাজু ওরফে সোবাহান, এমএলএসএস জাকির হোসেন ও হেলপার জাবেদ হোসেন।
কার্গো হেলপার কামরুজ্জমান, ক্লিনার আমির ও পরীক্ষার্থী আরাফাতের নাম আসামিদের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিতে আসে। তবে কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় এবং অন্য দুজনের সঠিক নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় তাদের নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আসামিদের মধ্যে মেজর তাইজ ইবনে আনোয়ারসহ ১৯ জন পলাতক। বাকিরা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ২১ অক্টোবর বিকেল ৩টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১০০ চালকসহ বেশ কয়েকটি পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল।
পদগুলো হচ্ছে- জুনিয়র টেইলর কাম আপহোলস্টার, প্রি-প্রেস অ্যাসিস্ট্যান্ট, জুনিয়র এমটি মেকানিক, জুনিয়র এয়ারকন মেকানিক, জুনিয়র ওয়েল্ডার জিএসই, জুনিয়র পেইন্টার জিএসই, জুনিয়র মেকানিক (টায়ার) জিএসই, জুনিয়র মেকানিক জিএই (ক্যাজুয়াল), জুনিয়র ইলেকট্রিশিয়ান জিএসই (ক্যাজুয়াল) ও জুনিয়র অপারেটর জিএসই (ক্যাজুয়াল)।
পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। তাই পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে তা স্থগিত করা হয়। পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণায় তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন চাকরিপ্রার্থীরা। বিক্ষোভের কারণে রাস্তায় যান চলাচল বিঘ্ন ঘটে ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে।
অন্যদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইটে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনিবার্য কারণে কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে শুক্রবার (২১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিতব্য ১০ পদের পরীক্ষা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
প্রশ্ন ফাঁসের এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় ২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়।