কুড়িগ্রামের রৌমারীতে এসএসসি পরীক্ষায়
সৃজনশীল প্রশ্নপত্র ২৫ মিনিট দেরিতে বিতরণ করার অভিযোগ উঠেছে দুই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় তাঁদেরকে কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আজ রোববার উপজেলার শৌলমারী
এম আর স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের এক নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রৌমারী উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও-ভারপ্রাপ্ত) এ বি এম সরোয়ার রাব্বী। তিনি বলেন, ‘অব্যাহত পাওয়া
দুই শিক্ষক চলতি এসএসসি পরীক্ষার কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না।’
অব্যাহতি পাওয়া দুই শিক্ষক হলেন রৌমারী
উপজেলার দাঁতভাঙ্গা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ইদ্রিস আলী ও কুটিরচর স্কুল অ্যান্ড
কলেজের শিক্ষক নবিন উদ্দিন।
আরও পড়ুন: ভাঙ্গায় স্বামীর নির্যাতনে প্রবাসী গৃবধুর আত্মহত্যা
পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে জানা গেছে, এসএসসি
পরীক্ষার প্রথম দিনে শৌলমারী এমআর স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে ৪৬৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে
৪৫৫জন উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ১ নং কক্ষে ৩২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের
অভিযোগ, প্রশ্নপত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট দেরিতে দেওয়া হলেও বাড়তি সময় না দিয়ে উত্তরপত্র
নির্ধারিত সময়ে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি কেন্দ্রের দায়িত্বশীলদের জানালেও অতিরিক্ত সময়
দেওয়া হয়নি। তবে ওই কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিবের দাবি, সামান্য কিছু বিলম্বে প্রশ্নপত্র
দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি তাকে অবহিত করা হয়নি। তিনি জানলে অতিরিক্ত সময় দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া
হতো।
কেন্দ্রের ১ নং কক্ষে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া
পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, সকাল ১০টায় বহুনির্বাচনী (এমসিকিউ) পরীক্ষার প্রশ্নপত্র
বিতরণ করা হয়। ঠিক সাড়ে ১০টায় উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) জমা নেওয়া হয়। একই সময়ে (সাড়ে
১০টায়) সৃজনশীল অংশের লিখিত অংশের প্রশ্নপত্র বিতরণ না করে তা ১৫ থেকে ২০ মিনিট বিলম্বে
বিতরণ করা হয়। দেরিতে প্রশ্নপত্র দিলেও অতিরিক্ত সময় না দিয়ে দুপুর ১টার নির্ধারিত
সময়ে উত্তরপত্র জমা নেন কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা। এতে করে তারা শতভাগ
প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যর্থ হন।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে ট্রলারডুবি: বরসহ পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার
পরীক্ষা শেষের আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
(ভারপ্রাপ্ত) এবিএম সরোয়ার রাব্বী উপস্থিত হন। পরীক্ষা শেষে বিষয়টি নিয়ে তাকে অভিযোগ
করেন ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা এ নিয়ে হৈচৈ শুরু
করে। খবর পেয়ে রৌমারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ও থানার ওসিসহ পুলিশের একটি দল
ঘটনাস্থলে যান। বিকেল পৌনে ৩টা পর্যন্ত ইউএনও, পরীক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষা
কর্মকর্তাদের মধ্যে দফায় দফায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলে। পরে এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে
চলমান এসএসসি পরীক্ষার সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
ওই কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব ও উপজেলা একাডেমিক
সুপারভাইজার মুক্তার হোসেন বলেন, ‘ওএমআর শিট নেওয়ার
আগে লিখিত অংশের প্রশ্নপত্র দেওয়ার নিয়ম থাকলেও ওই কক্ষের শিক্ষকরা আগে ওএমআর শিট তুলে
নিয়ে পরে লিখিত অংশের প্রশ্নপত্র দিয়েছেন। এতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। কিছুটা সময় বাড়িয়ে
দেওয়ার উচিৎ ছিল। কিন্ত কক্ষ পরিদর্শক বিষয়টি আমাকে জানাননি। পরীক্ষার্থীরা এটি নিয়ে
আপত্তি করেছে। পরে ওই কক্ষের দায়িত্বে থাকা দুই শিক্ষককের লিখিত বক্তব্য নেওয়া হয়েছে।
তাদেরকে পরবর্তী পরীক্ষার সকল দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
‘দুই শিক্ষককে মৌখিকভাবে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি
দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে লিখিত পত্র দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে,’ যোগ করেন কেন্দ্র
সচিব।