করোনা সঙ্কটের সময় ডেইরি শিল্প, পোল্ট্রি শিল্পকে বাঁচানোর জন্য তার বিভিন্ন উদ্যোগ এবং উদ্যোগ সাড়া জাগিয়েছে। ডিম, দুধ, মৎস্য খামারিদের করোনার প্রথম ওয়েব মোকাবেলার সময় প্রণোদনা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন
প্রথমবার মন্ত্রী হয়েই অনেকে দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন, ভালো কাজ করছেন। তাদের ইতিবাচক কর্মকাণ্ড প্রশংসিত হচ্ছে বিভিন্ন মহলে। টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার। তিন দফায় তিনরকম মন্ত্রীসভা গঠন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমবারের মন্ত্রীসভা ছিলো নবীন ও প্রবীণের মিশেলে। দ্বিতীয় দফার মন্ত্রীসভায় হেভীওয়েটদের প্রাধান্য ছিলো। আর তৃতীয় দফায় একেবারে নতুন মুখদের প্রাধান্য দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এবারের মন্ত্রীসভায় বেশ কয়েকজন মন্ত্রী আছেন, যারা প্রথমবারই পূর্ণমন্ত্রী হয়েছেন। এদের কয়েকজন দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভালো কাজের জন্য। এরকম কয়েকজন হলেন:
১. শ ম রেজাউল করিম: অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম এবারই প্রথম সংসদ সদস্য হন। প্রথমবারই তাকে পূর্ণমন্ত্রী করা হয়। প্রচন্ড চাপ ও প্রলোভন উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালন করতে পারেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। প্রথমবার গৃহায়ণ এবং গণপূর্ত মন্ত্রাণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে সেই মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি দমনে তাঁর কঠোর পদক্ষেপের কারণে আলোচিত হয়েছিলেন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বালিশ দুর্নীতির ঘটনা তদন্ত করে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং সংবাদ সম্মেলন করে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের বিরল নজিরও স্থাপন করেছিলেন। সেবা খাতকে ভোগান্তিমুক্ত এবং সেবা সহজ করতে রাজউক’র নকশা অনুমোদনের ১৬ স্তরের ছাড়পত্রের সংস্কার করে ৪ স্তরে আনা এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নকশা অনুমোদনের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত প্রদান করেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ওঠে আসেন।
করোনা সঙ্কটের সময় ডেইরি শিল্প, পোল্ট্রি শিল্পকে বাঁচানোর জন্য তার বিভিন্ন উদ্যোগ এবং উদ্যোগ সাড়া জাগিয়েছে। ডিম, দুধ, মৎস্য খামারিদের করোনার প্রথম ওয়েব মোকাবেলার সময় প্রণোদনা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এবার আর্থিক প্রণোদনার পরিবর্তে ভিন্নভাবে মৎস্য ও পোল্ট্রি খামারিদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় খামারিদের রক্ষায় মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম দেশজুড়ে চালু করেছেন ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্র।
দেশের প্রতিটি জেলা উপজেলায় কর্মরত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্র। এসব ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে সারাদেশের খামারিরা তাদের মৎস্য ও প্রাণিজ পণ্য ন্যায্যমূল্যেই বিক্রি করছেন। মন্ত্রীর উদ্যোগে প্রান্তিক খামারিরা উপকৃত হচ্ছেন। হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন করোনায় জীবন-জীবিকা থমকে দাঁড়ানো স্বল্প আয়ের মানুষেরাও।
২. তাজুল ইসলাম: এবারের মন্ত্রীসভায় সবচেয়ে বড় চমক ছিলো তাজুল ইসলামের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী হওয়াটা। দীর্ঘদিন ধরে ঐতিহ্য ছিলো যে ক্ষমতাশালী দলের সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই গত মেয়াদে এই প্রথা ভাঙ্গেন। দলের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশারফ হোসেনকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী করেন। এবার আওয়ামী লীগে গুরুত্বপূর্ণ নেতা না হয়েও তাজুল ইসলাম এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। মন্ত্রী হিসেবে প্রথম দিকে আড়ষ্ট হলেও আস্তে আস্তে নিজেকে মেলে ধরেছেন। তার কর্মতৎপরতা সকলের নজর কেড়েছে।
৩. ড. আবদুল মোমেন: ড. মোমেনও প্রথমবার এমপি, প্রথমবারেই পূর্ণ মন্ত্রী। কঠিন সময়ে স্পর্শকাতর ইস্যু বেশ সাফল্যের সংগেই মোকাবেলা করছেন এই ফাস্ট মিনিস্টার। বিশেষ করে টিকা কূটনীতিতে তার উদ্যোগ সব মহলে প্রশংসিত হয়েছে।
৪. টিপু মুন্সী: টিপু মুন্সী দীর্ঘদিন আওয়ামী রাজনীতির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে থাকলেও এবারই প্রথম মন্ত্রী হন। মন্ত্রিত্বের শুরুটা ছিলো বেশ খারাপ। কিন্তু দ্রুত শিখে, ভুল সংশোধনের জন্য তিনি আলোচিত এবং প্রশংসিত।
৫. নুরুল ইসলাম সুজন: নুরুল ইসলাম সুজনও প্রথম মন্ত্রী। তার দপ্তরে সাফল্য ব্যর্থতা দুটোই আছে। কিন্তু একজন পরিশ্রমী মন্ত্রী হিসেবে তিনি আদৃত হচ্ছেন সব মহলে।