পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘেষেই গড়ে তোলা হয়েছে দি প্যাথোলজী সেন্টার এবং পপুলার প্যাথোলজি সেন্টার । প্রতিষ্ঠান দুটির লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে গত দু বছর আগে। এছাড়াও জেলার প্রতিটি উপজেলায় নামে বেনামে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে অনেক ডায়াগনস্টিক সেন্টার ।
সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য মতে জেলায় মোট ১১৯টি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে ৪৭টি প্রতিষ্ঠানের কোন কাগজপত্রই নেই। বাকী যেসকল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে তাদের অধিকাংশেরই লাইসেন্স নবায়ন নেই। রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। এ নিয়ে সংবাদ সংগ্রহে গেলে সাংবাদিকদের ২০২০-২০২১ সালের কাগজপত্রের বাইরে আপডেট কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা বলেন, তাদের ক্লিনিকের লাইসেন্স নেই, এটা সম্পূর্ণ সত্য নয়। লাইসেন্স নবায়ন ব্যাতিত আমাদের সবকিছুই আছে।আবার অনেকে পালিয়ে গেছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জেলার প্রতিটি সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ঘেঁষেই গড়ে উঠছে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টার। নির্দেশনা অনুযায়ী যেসব শর্ত মেনে লাইসেন্স পাওয়ার কথা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেরই তা নেই। অদক্ষ নার্স এবং টেকনিশিয়ান দিয়ে চলে পরীক্ষা নিরীক্ষা। অনেক সময় দেয়া হচ্ছে ভুল রিপোর্ট। ভুল চিকিৎসার কারণে ঘটছে প্রাণহানি।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা হাসপাতালের চেয়ে ক্লিনিকের ব্যক্তিগত চেম্বারেই বেশি সময় দেন। আর স্বাস্থ্যগত নানা পরীক্ষার জন্য বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই পাঠানো হয়। এছাড়াও সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষার করার সব ধরনের মেশিন নষ্ট করে রেখে পরীক্ষা করতে পাঠানো হয় বেসরকারি ক্লিনিকে।
সারা দেশের সব অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করার নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই সময়ের পর নিবন্ধনহীন কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু থাকলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বাস্থ্য বিভাগ। এর উল্টো দেখা গেছে পটুয়াখালী জেলায়। শুরুতে দু একটি অভিযান চালালেও বর্তমানে অবৈধ ক্লিনিক মালিকদের পক্ষে নানা সাফাই গাইছেন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
গত ২৮ জুলাই বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয়ে বেসরকারি ক্লিনিক নিবন্ধন ও নবায়ন ফাইলের ঘুষ বাণিজ্য নিয়ে সহকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে একই অফিসের সহকর্মীর আঘাতে জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর (ডিএসআই) গুরুত্বর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মত ঘটনা ঘটেছে।
পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. এস এম কবির হাসান জানান, নিবন্ধনহীন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু রেখে কিভাবে তাদের নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসা যায় সেই চেষ্টা করছি।