স্কুলছাত্রী
ধর্ষণ মামলার ৮ মাস অতিবাহিত হলেও ২নং আসামি রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ঝালকাঠির রাজাপুর
উপজেলার ছোট কৈবর্তখালী গ্রামে ২০২২ সালের ২৯ অক্টোবরের ঘটনায় ১৫ নভেম্বর মামলা দায়ের
করেন ভিকটিমের মা। আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় অব্যাহত হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতা, উদ্বেগ
ও উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন মামলার বাদী ভিকটিমের অসহায় বিধবা মা। তিনি আসামি ফুহাতকে
গ্রেফতারের জোর দাবি জানান। উল্লেখ্য, মামলার প্রধান আসামি আলী হোসেন গ্রেফতার হয়ে
কারাবাস করছে।
মামলার এজাহার
সূত্রে জানা গেছে, রাজাপুর উপজেলার ছোট কৈবর্তখালী এলাকায় স্বামী হারা বিধবা মা তার
স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়য়া ছোট কন্যা ও সাড়ে ৩বছর বয়সী নাতিকে নিয়ে বসবাস করেন। স্কুলে
যাবার পথে প্রায়ই উত্যক্ত ও হুমকি দিত ওই এলাকার মৃত আনেচ মোল্লার ছেলে আলী হোসেন মোল্লা
(২৭) ও ৪নং বড় কৈবর্তখালী ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহ আলম মীরের ছেলে মো.
ফুহাত মীর (২২)।
প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়
সিত্রাংয়ের পরে দীর্ঘদিন বিদ্যুৎবিহীন ছিলো এলাকা। সেই সুযোগে ২৯ অক্টোবর রাত ২টায়
আলী হোসেন মোল্লা ও ফুহাত মীর ঘরের পিছনের জানালার গ্রিল ভেঙে ঘরে ঢুকে মা ও সাড়ে তিন
বছরের শিশুর হাত-পা ও মুখ বেধে গলায় চাকু ধরে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করে আলী হোসেন।
ফুহাত মীর তাকে সার্বিক সহযোগিতা করে। ধর্ষণ শেষে ঘরের দরজা খুলে বের হবার সময় ঘটনাটি
জানা-জানি করলে তিনজনকেই একসঙ্গে জবাই করার হুমকি দেয় তারা। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায়
হুমকিতে ভয় পেয়ে এবং লোকলজ্জায় বাড়ি ছাড়া হয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন। স্বজনদের
সাথে আলাপ করে বিচারের দাবিতে ১৫ নভেম্বর রাজাপুর থানায় আলী হোসেন ও ফুহাতকে আসামী
করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নং-০৫) দায়ের করেন।
মামলার বাদী
বিধবা মা অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে আজকের দর্পণকে বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমাদের উপর নির্যাতন
করা হইছে। থানায় মামলা দিছি, এখন পর্যন্ত একজন গ্রেফতার হয়নি। আসামিরা অত্যান্ত দুর্ধর্ষ,
নির্মম ও চরিত্রহীন লোক। তারা পারে না এমন কোন কু-কর্ম নাই। এলাকায় যাকে তাকে মারধর
করা তাদের নিত্য নৈমিত্তিক কাজ। আসামিরা কাউকে পরোয়া করে না এবং এলাকার সবাই তাদের
ভয় পায়। প্রধান আসামি আলী হোসেন এখনো জেলে আছে। ঝালকাঠি কোর্ট থেকে জামিন না পাওয়ায়
তার ভাই আফজাল মোল্লা ঢাকা হাই কোর্ট থেকে জামিনে বের করে আনবে। তারপর আমাদের সাথে
লড়বে বলেও এলাকার মানুষের কাছে শুনতে পাই। মামলার আট মাস পার হলেও ২নং আসামি ফুহাত
মীরকে এখনো পুলিশ গ্রেফতার করতে পারে নাই। কেন পুলিশ এখনো গ্রেফতার করতে পারে নাই জানি
না।
রাজাপুর থানার
ওসি পুলক চন্দ্র রায় আজকের দর্পণকে বলেন, মামলা দায়েরের পরপরই অভিযান চালিয়ে প্রধান
আসামি আলী হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই খবরে ২নং আসামি ফুহাত মীর আত্মগোপনে চলে
গেছে। তাকেও গ্রেফতার করতে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে।