রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে
মলম পার্টির ২৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এ
সময় তাদের কাছ থেকে অজ্ঞান ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত বিষাক্ত মলম, নগদ টাকা ও দেশীয়
অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার (২৮ জুন) দুপুরে র্যাব-৩-এর স্টাফ অফিসার অতিরিক্ত
পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রতিদিন অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারীদের
কবলে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকেন অসংখ্য যাত্রী-পথচারী।
অথচ এসব ভুক্তভোগীর বেশির ভাগই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারস্থ হন না। যে কারণে সংঘবদ্ধ
অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা দিন দিন বেড়েই চলছে।
তারা বাস ও ট্রেনে চড়ে যাত্রীদের পাশে
বসে নাকের কাছে চেতনানাশক ওষুধে ভেজানো রুমাল দিয়ে, বিষাক্ত পানীয় পান করিয়ে বা বিষাক্ত
স্প্রের ঘ্রাণের মাধ্যমে যাত্রীদের অজ্ঞান করে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। এরপর তারা ভিড়ের মধ্যে
মিশে যান।
সম্প্রতি অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের
তৎপরতা বাড়ার বিষয়টি আমলে নিয়ে র্যাব-৩ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এবং বিভিন্ন
স্থানে অভিযান চালিয়ে তদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
তাদের কাছ থেকে তিনটি এন্টিকাটার, ১১টি
ব্লেড, ১০টি বিষাক্ত মলম, একটি চাকু, ৯টি মোবাইল এবং নগদ ৩ হাজার ২৯০ টাকা উদ্ধার করা
হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বাসস্ট্যান্ড,
রেলস্টেশন এলাকায় অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা ঘোরাফেরা করে সহজ-সরল যাত্রীদের টার্গেট করে
ডাব, কোমলপানীয় কিংবা পানির সঙ্গে বিষাক্ত চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করে।এরপর
অজ্ঞান হলে সব কিছু লুট করে নিয়ে যেত।
গ্রেপ্তার অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের
সদস্যরা হলেন পাপ্পু (২৮), জীবন (২২), সজীব (২৬), শহীদ শেখ (৩০), আলাউদ্দিন (৪২), শফিক
(১৮), আবদুল হক হৃদয় (২২), রানা (১৮), অন্তর (২৬), মেহেদী হাসান (২০), শাকিল (২৫),
রাব্বী আপন (২০), আলমগীর (৪৫), ফাইম (২২), মামুন শেখ (৪২), সজল (২৬), ফেরদৌস (৩২),
রুবেল মাতবর (৩৪), হানিফ বেপারী (২৯), জাকির হোসেন (২৪), সোহেল (১৯), মাহাবুব ইসলাম
রিয়ন (৪২), আবদুল মান্নান (১৯), হাবীব মিয়া (২২), হৃদয় ওরফে মুজিবর (১৯) এবং রিফাত
উদ্দিন চৌধুরী ওরফে দুখু (২৪)।
অন্যদিকে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা রাজধানীর
অলি গলিতে ওঁৎ পেতে থাকে। সুযোগ বুঝে তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি,
অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে সর্বস্ব লুটে নেয়।
খিলগাঁও, মালিবাগ রেল গেট, দৈনিক বাংলা
মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালভার্ট রোড, নাসিরের টেক হাতিরঝিল,
শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং পল্টন মোড়, গোলাপ শাহর মাজার ক্রসিং,
হাইকোর্ট ক্রসিং, আবদুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো
ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি থাকে। তাদের বিরুদ্ধে
আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।