ভোটবিরোধী সভা-সমাবেশ করার উপর নিষেধাজ্ঞা
দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো নির্দেশনা রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি পালনের অধিকার
ক্ষুণ্ন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মোঃ আলমগীর।
তিনি বলেন, কোন দল যদি বলে ভোটে আসবো না,
শান্তিপূর্ণভাবে ভোটারদের ভোটে না আসতে অনুরোধ করে সেক্ষেত্রে আমাদের কোন নিষেধাজ্ঞা
নেই। কিন্তু যদি সন্ত্রাসীমূলক কাজ করে। যেমন: ভোট দিতে যেতে বাধা সৃষ্টি, জ্বালাও-পোড়াও
করে, মারধর করে, রেললাইন কেটে ফেলে- এ ধরনের কাজ যাতে না হয় সেজন্য চিঠি দিয়েছি। বুধবার
সন্ধ্যায় নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোঃ আলমগীর এসব কথা বলেন।
এর আগের দিন মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে চিঠি দেয়। ওই চিঠিতে আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে ভোটগ্রহণ
শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা ছাড়া নির্বাচনি কাজে বাধা হতে পারে বা ভোটাররা নিরুৎসাহিত
হতে পারে এমন কোনো প্রকার সভা, সমাবেশ বা অন্য সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ ও
বাস্তবায়ন করা থেকে সবাইকে বিরত রাখার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়।
ওই চিঠির প্রেক্ষিতে গতকাল এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের আইজিকে চিঠি দিয়েছে জননিরাপত্তা
বিভাগ।
ইসির ওই চিঠিতে রাজনৈতিক দলের অধিকার ক্ষুণ্ন
হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মোঃ আলমগীর বলেন, না। শান্তিপূর্ণ
কোন কর্মসূচিতে আমাদের বাধা নেই। সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার অনুমতি নিয়ে তারা এ ধরনের
কর্মসূচি পালন করতে পারবে। তবে, সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টি করে, হুমকি ধমকি
দেয়, জ্বালাও-পোড়াও করে- এ ধরনের কর্মসূচি বন্ধ করতে চিঠিতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন,
নির্বাচনী আইন ও আচরণ বিধিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে যেউ যদি বাধা দেয় বা প্রতিহত করে
সেটা অপরাধ। নির্বাচন করতে হলে একটি সুষ্ঠু পবিবেশ লাগে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ লাগে।
কিন্তু নির্বাচন বাধাগ্রস্থ করতে যদি কোনো রাজনৈতিক দল কর্মসূচি দিয়ে থাকে সেটা করা
যাবে না। সেই বিষযে পদক্ষেপ নিতে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি।
নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি ছাড়া অন্য কোনো
কর্মসূচিতে বাধা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে কোনো কর্মসূচী পালন করতে গেলে বা সভা-সমাবেশ
করতে হলে সরকারের অনুমতি নিতে হয়। সেক্ষেত্রে সরকার যেখানে তাদের অনুমতি দেবে তারা
সেখানে সেই কর্মসূচি পালন করবে। সে বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। আমাদের বক্তব্য
হলো নির্বাচনে বাধা সংক্রান্ত কোন সভা-সমাবেশ আন্দোলন কর্মসূচি থাকলে সেটা করতে দেওয়া
যাবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, যে সব ধরনের কর্মসূচিতে নির্বাচনের পথে বাধা, হুমকি
বা সন্ত্রাসীমুলক এ ধরনের কোন কার্যক্রম থাকে বা ভয় দেখায় সেক্ষেত্রে আমরা নিষেধ করেছি-
এ সমন্ত সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু যে কোনো দেশের যে লোক শান্তিপূর্ণ সমাবেশ
বা বক্তব্য বা সংগঠন করার অধিকার তাদের আছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থার অনুমোদন নিয়ে করতে পারবে।
সেখানে আমাদের কোন নিষেধাজ্ঞা নেই।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইসির চিঠিতে
কোনো রাজনৈতিক দলের নাম উল্লেখ করা হয়নি। কোনো দলকে লক্ষ্য করে এ চিঠি দেওয়া হয়নি।
আমরা বলেছি, আইনে যেটা আছে, নির্বাচনের বিরোধী কোনো কাজ করলে, নির্বাচন বিরোধী কোন
আন্দোলন করে বা বাধা দেয়, হুমকি দেয়, ভয় দেখায় সেক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ব্যবস্থা
নেবে। আর কোন দলের যেটা রাজনৈতিক কর্মসূচি সেটা শান্তিপূর্ণ যেসব কর্মসূচি আছে সেটা
রাষ্ট্রের প্রচলিত নিয়ম আছে, সেই অনুযায়ী অনুমতি পেলে করবে।