কেবল ডায়েট অনুসরণ
করার জন্য নয়, ছোট থেকে বড় বড় বিভিন্ন অসুখ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যও রান্নার সঠিক
পদ্ধতি জানা দরকার। রান্নার ছোট ছোট ভুল থেকেই মৃত্যুর দিকে ধেয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো রোগের
সৃষ্টি হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে কোন তেল, ভাজা-পোড়ায় কত তাপমাত্রা, কতক্ষণ খাবার
গরম রাখা উচিতসহ অন্যান্য যাবতীয় রান্নায় কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চলা উচিত। সে সবের
উপর নির্ভর করে সুস্বাস্থ্য।
রান্নার নিয়ম যেমন হওয়া উচিত : সেদ্ধ খাবার
ক্রমশ খেতে থাকলে মুখে উঠবে না। আবার ভুল পদ্ধতিতে রান্না করার জন্য খাবারে কোনো পুষ্টি
থাকবে না। শাক-সবজি ও মাংস রান্নার ক্ষেত্রে প্রথমে সেদ্ধ করে তারপর কষানো হলে এতে
খাদ্যগুণ বজায় থাকে। এছাড়া কম সময় নিয়ে ঢেকে রান্না করলে পুষ্টি বজায় থাকে। তবে সাবধান,
কষানোর সময় খাবারের পানি ফেলে দিলে ভিটামিন-বি, সি ও অন্যান্য উপকারী খনিজ উপাদানের
প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ বেরিয়ে যাবে। ভাতের ক্ষেত্রে একই রকম এই বিষয়টি। ভাতের মাড় বা ফ্যান
ফেলে দিলে এর সঙ্গে পুষ্টি বের হয়ে যায়। তাই ভাত রান্নার সময় পরিমাণ করে পানি দিতে
হয় যেন রান্না শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানিও শেষ হয়। এছাড়া সবজি-মাংস তরকারির ঝুলে ব্যবহার
করুন।
কম আঁচে রান্না : কম আঁচে রান্না
করতে হয়। ভাপে রান্নার ফলে পুষ্টির প্রায় সবটুকু বজায় থাকে। এতে স্বাদও ঠিক থাকে। কখনো
কখনো ভাপের সময় স্বাদ বৃদ্ধি করতে ঢাকনা দিয়ে হালকা করে ঢেকে কষিয়ে নিতে পারেন। এছাড়া
যারা মাছ প্রিয় তারা ডিম পোচের মতো মাছও পোচ করে খেতে পারেন। এজন্য গরম কড়াইতে অল্প
পানি দিয়ে হালকা লবণ, মরিচ ও লেবু দিয়ে ঢেকে রান্না করলে পুষ্টি বজায় থাকে।
ভাজার সমস্যা ও সমাধান : ছাঁকা তেলে কিছু
ভাজলে খাবারের ভিটামিন ও প্রোটিন কমে যায়। এতে অপুষ্টি, ক্যালোরি বৃদ্ধি পায়, ওজন বেড়ে
যায় ও ট্রান্স ফ্যাটের সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও অ্যালডিহাইড নামে জৈব রাসায়নিকের জন্য
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও পার্কিনসনিজমের আশঙ্কাও থাকে।
গ্রিলের নিয়ম : গ্রিল করা খাবার খাওয়া ভালো। এই খাবার পুষ্টিকর ও এতে ক্যালোরিও কম। তবে সাবধান, গ্রিলের পোড়া খাবার খাওয়ার ফলে প্যানক্রিয়াস ও ব্রেস্ট ক্যানসারের শঙ্কা থাকে। এছাড়া উচ্চ তাপের জন্য মাংসের ফ্যাট ও প্রোটিনে রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়ে বিষাক্ত পদার্থ তৈরির সম্ভাবনা থাকে। যা থেকে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।