আজঃ শনিবার ১৮ মে ২০২৪
শিরোনাম

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ : এক বছর ধরে যেসব সমস্যায় ভুগছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত:রবিবার ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ কাটিয়ে বাংলাদেশ যখন অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টা শুরু করল, ঠিক তখনই শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধযার কঠিন প্রভাব পড়ে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের অর্থনীতির ওপর।

 

যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোর সঙ্গে ইউক্রেনের ঘনিষ্টতার জেরে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেশী এই রাষ্ট্রটিতে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যুদ্ধ বাঁধার অল্প সময়ের মধ্যে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপানসহ আরও কয়েকটি দেশ রাশিয়ার ওপর একরাশ শাস্তিমূলক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

 

ফলে অস্থির হয়ে ওঠে জ্বালানী তেলের বৈশ্বিক বাজার। খাদ্যপণ্য ও সারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের বৈশ্বিক বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। এ সময় বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন হতে থাকে। মূল্যস্ফীতির জেরে জ্বালানিসহ যাবতীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম লাগামহীন ভাবে বাড়তে থাকে। সবমিলিয়ে গত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছরে নানামূখী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেট প্রস্তাবনার শুরুতেই এই যুদ্ধ পরিস্থিতিকে গুরুত্বপূর্ণ সংকট বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।

 

অস্থির হয়ে উঠেছে গমের বাজার: ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষ ক্যালরি গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রায় ৬৮% চালের ওপর নির্ভর করে এবং প্রায় ৭% জোগান আসে গম থেকে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ২০ বছরে দেশে গমের চাহিদা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এই চাহিদার প্রায় সবটুকুই আমদানি করে বাংলাদেশ। ট্রেড ডাটা মনিটরের ইউএসডিএ রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে তার চাহিদার ৮৭% গম আমদানি করে। এই গমের অর্ধেক আসে ইউক্রেন এবং রাশিয়া থেকে।

 

বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্ববাজারে মোট চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ গম সরবরাহ করে রাশিয়া; কিন্তু যুদ্ধের ফলে দেশ দুটি থেকে এই পণ্যটির সরবরাহ ব্যহত হওয়ায় বাংলাদেশে গমের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। ফলে আটা-ময়দার পাশাপাশি বেকারি পণ্যের দামও হু হু করে বেড়ে গেছে বাংলাদেশে। যুদ্ধের আগে যে প্যাকেটজাত আটার দাম কেজি প্রতি ছিল ৩২ থেকে ৩৫ টাকা সেটি এখন বেড়ে হয়েছে ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা।

 

দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে দেশটির সাধারণ মানুষ। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম এ প্রসঙ্গে বিবিসিকে বলেন, গমের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে চালের দামও প্রতিবেশী যেকোনো দেশের তুলনায় অনেক বেশি হারে বেড়েছে। এই দাম বাড়ার কারণ চালের সরবরাহ ঘাটতি নয়। ব্যবসায়ীরা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছে বলেই আমার ধারণা। এদিকে খাবারের দাম বাড়লেও মানুষের আয় বাড়েনি। ফলে মানুষের জন্য জীবন ধারণ ভীষণ কঠিন হয়ে পড়েছে।

 

ঘোলাটে পরিস্থিতি ভোজ্যতেলের বাজারে: যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে বিপর্যয়ে মধ্যে পড়েছে ভোজ্যতেলের বাজারও। বিশ্বে সূর্যমুখী তেলের চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশ সরবরাহ আসে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। বাংলাদেশে সূর্যমুখী তেল তেমন আমদানি করে না; কিন্তু তা সত্ত্বেও সূর্যমূখী তেলের দাম বৃদ্ধির জেরে প অন্য সব ভোজ্যতেলের বাজারও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।

 

ভোজ্য তেল হিসেবে বাংলাদেশে পাম তেল ও সয়াবিন তেলের ব্যবহার বেশি। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে এসব ভোজ্যতেলের কাঁচা তেলবীজ আমদানি করে অভ্যন্তরীণভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে অল্প পরিমাণে তেলের বীজ কেনে, সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত সয়াবিন কেনে আর্জেন্টিনা থেকে, আর সয়াবিনের বীজ কেনে ব্রাজিল থেকে।

 

যুদ্ধের জেরে সূর্যমুখী তেলের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বিশ্বজুড়ে পাম তেল এবং সয়াবিন তেলের চাহিদা ও দাম দুটোই অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়। ২০২২ সালের মাঝামাঝি পাম তেলের সবচেয়ে বড় উৎপাদক ও রপ্তানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে পড়ে। অথচ বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২০ লাখ টন ভোজ্যতেল লাগে।

 

তার মধ্যে দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদন হয় মাত্র দুই থেকে তিন লাখ টন। আর বাকি পুরোটাই, অর্থাৎ চাহিদার ৯০ শতাংশ পূরণ করতে হয় আমদানি থেকে। আন্তর্জাতিক বাজারে পাম ও সয়াবিন তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারেও ভোজ্য তেলের দাম বেড়ে যায়। তার ওপর ভোজ্যতেল রফতানিকারক দেশগুলোর আরোপিত বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা পণ্য সংকটের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়।

 

যুদ্ধের বাজারে কমেছে আমিষ খাওয়া: বাংলাদেশে আমিষের চাহিদার একটি বড় অংশ পূরণ হয়ে থাকে ব্রয়লার মুরগি থেকে, যা সাধারণভাবে ফার্মের মুরগি নামে পরিচিত। এই মুরগির দামও এখন চলে গেছে নাগালের বাইরে। মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা মুরগির খাবারের দাম বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করেছেন।

 

বাংলাদেশে পোল্ট্রি ফিড উৎপাদনের ৬০% উপকরণ আমদানি করতে হয়। এসবের মধ্যে সবচেয়ে বড় উপকরণ হচ্ছে ভুট্টা। বিশ্ববাজারে ইউক্রেন ১৬% ভুট্টা সরবরাহ করে। এরমধ্যে বাংলাদেশও চাহিদার বড় অংশ আমদানি করে ইউক্রেন থেকেই। যুদ্ধের কারণে যেহেতু ইউক্রেন থেকে ভুট্টার সরবরাহ আসতে পারছে না, তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও পোল্ট্রি ফিডের দাম বেড়েছে; যার প্রভাব গিয়ে পড়েছে মুরগি ও ডিমের দামের ওপর।

 

এতে নিম্নবিত্তদের আহারে লাগাম পড়েছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদ খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, খাদ্য-পণ্যের দাম বাড়তে থাকায় মানুষ আমিষ খাওয়া থেকে ক্রমেই সরে যাচ্ছে। পুষ্টিমানকে জলাঞ্জলি দিয়ে ন্যূনতম খেয়ে পড়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে তারা। এই মুহূর্তে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতক করা সরকারের সবচেয়ে জরুরি কাজগুলোর একটি।

 

সার সঙ্কটে ঝুঁকিতে কৃষি: বাংলাদেশের কৃষি, বিশেষ করে ধান উৎপাদন ব্যাপকভাবে রাসায়নিক সারের ওপর নির্ভরশীল এবং প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সারের একটি বড় অংশ আমদানি করা হয় রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে।

 

ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট তথ্যমতে, বাংলাদেশে বছরে প্রতি হেক্টর ফসল চাষে গড় ২৮৬ কেজি সার ব্যবহার করতে হয়, যার বড় অংশ জুড়েই থাকে পটাশ সার। কিন্তু জ্বালানি সংকটের কারণে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সার কারখানাগুলোর উৎপাদন কমে যাওয়ায় গত কয়েক বছর ধরেই সার আমদানি করতে হচ্ছে বাংলাদেশ।

 

ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে প্রতিবছর ১২ লাখ টনেরও বেশি সার আমদানি করে। শতকরা হিসেবে এটি দেশের মোট চাহিদার ৭৫ শতাংশেরও বেশি।

 

কিন্তু যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর রফতানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ হওয়ায় দেশটি থেকে সার আমদানি করা যাচ্ছে না। ফলে সার আমদানি বাবদ অধিক অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে এবং এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে।

 

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এ সম্পর্কে বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে বাংলাদেশের কর্ণফুলী ও শাহজালাল সার কারখানায় সার উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। এ কারণে বেশি পরিমাণে সার আমদানি করতে হচ্ছে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে এই বাড়তি ব্যয় করতেই হবে।

 

জ্বালানির দাম বেড়েছে হু হু করে: করোনা প্রাথমিক প্রকোপ কেটে যাওয়ার পর, মহামারির দ্বিতীয় বছর অর্থনীতির চাকা ফের সচল করতে লকডাউন-সামাজিক দূরত্ব প্রভৃতি কঠোর সব করোনাবিধি শিথিল করতে থাকে। ফলে একদিকে ধীরে ধীরে অর্থনীতি ফের সচল হওয়া শুরু করে এবং তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই বাড়তে শুরু করে জ্বালানি তেলের দাম।

 

তবে ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযান শুরুর রীতিমতো লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে জ্বালানি তেলের মূল্য। এর প্রধান কারণ যুদ্ধ ও যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ববাজারে রুশ তেলের সরবরাহ কমে যাওয়া।

 

রাশিয়া বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশ। বলা হয়, বিশ্বের প্রতি ১০ ব্যারেল তেলের এক ব্যারেল উৎপাদিত হয় এই দেশটিতে। এ কারণে যুদ্ধের একটি বড় প্রভাব জ্বালানী তেলের বাজারে পড়েছে।

 

মহামারিকালে আন্তর্জাতিক বাজারে যেখানে প্রতি ব্যারেল (১৫৯ লিটার) ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ৫০ ডলারের নিচে। গত বছরের ৫ই মার্চ, অর্থাৎ যুদ্ধ বাঁধার পরপর প্রতি ব্যারেল ব্রেন্টের দাম গিয়ে ঠেকে ১৩৯ ডলারে। তারপর ৬ মাসেরও বেশি সময় তেলের দর ১১০ থেকে ১২০ ডলারের মধ্যেই ওঠানামা করতে থাকে।

 

ঠিক সে সময় বাংলাদেশেও সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে ৪২.৫% থেকে ৫১.৫% বাড়ানো হয়। গত বছরের ৫ই আগস্ট বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সরকারের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী,  ডিজেল ও কেরোসিনের প্রতি লিটারের দাম ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, পেট্রল ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা এবং অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

ওই দিন মধ্যরাত থেকে নতুন দর কার্যকর করা হলে গণ-পরিবহনের ভাড়া সেই সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যও বাড়তে থাকে হু হু করে। এর আগে, গত ৫ই জুন ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয় প্রায় ২৩ শতাংশ। কয়েক দফায় বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দামও।

 

অর্থনীতিবিদ গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ডলারের দাম বাড়ায় সরকারকে উচ্চমূল্যে তেল কিনতে হচ্ছে। তারপরও সরবরাহ নিশ্চিত নয়। বাসাবাড়িতে গ্যাসের সরবরাহ কম, শিল্প কারখানায় সীমিত। গ্রীষ্মকালে গ্যাসের সংকট আরও বাড়বে। তবে এই পরিস্থিতিতেও কৃষি খাতকে গুরুত্ব দিয়ে জ্বালানি আমদানিতে ভর্তুকি দেয়ার ওপর জোর দিয়েছেন এই অর্থনীতিবিদ।

 

কৃষিতে সেচের জন্য যে পরিমাণ জ্বালানি দরকারতার চেয়ে কম জ্বালানি আমদানি করা হচ্ছে। এতে বোরো মৌসুমে প্রভাব পড়তে পারে। জ্বালানির দাম বাড়লে কৃষকের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে, ফলে চালের দামও বাড়বে। তাই অন্তত চালের দাম নাগালে রাখতে সরকারকে ডিজেলের ওপর ভর্তুকি দিতে হবে।

 

ডলার সংকটে বেড়েছে বাণিজ্য ঘাটতি: তেলের কারণে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় একই পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের বাড়তি ডলার খরচ করতে হচ্ছে, অর্থাৎ আমদানি ব্যয় বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় রপ্তানি না বাড়ায় বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এমনিতেই বাংলাদেশ রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি করে। আবার রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় ব্যালান্স অব পেমেন্টের ঘাটতিও চূড়ায় উঠেছে। যার ফলাফল ডলার সংকট।

 

ডলার প্রাইস ইনডেক্সের তথ্যানুসারে, চলতি বছর ডলারের দর ২০% বৃদ্ধি পেয়েছে। এর কারণে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান কমে গিয়েছে। যুদ্ধের আগে ডলারের দাম যেখানে ৮৫ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে ছিল সেটি এখন বেড়ে ১০৭ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ডলারের দর বাড়লে আমদানি মূল্য বেড়ে যায়।

 

কারণ বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম দুর্বল মুদ্রা বিনিময় হার দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং জনসাধারণের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করে। এসব কারণে মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জানুয়ারিতে অর্থাৎ যুদ্ধের আগে যেখানে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫.৮৬ শতাংশ, সেটি অক্টোবরে পৌঁছায় ৮.৯১ শতাংশে।

 

অর্থাৎ ১০০ টাকার পণ্যটি কিনতে ভোক্তাকে খরচ করতে হয়েছে ১০৯ টাকার মতো। যদিও অর্থনীতিবিদরা মনে করেন মূল্যস্ফীতির প্রকৃত হার এর চাইতেও অনেক বেশি। তবে সম্প্রতি মূল্যস্ফীতি সামান্য হলেও কমে আসায়, রেমিট্যান্সের প্রবাহ স্বাভাবিক হতে শুরু করায় সেইসাথে রপ্তানি আয় ধীরে ধীরে বাড়তে থাকায় বৈদেশিক বাণিজ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরতে দেখা যাচ্ছে।

 

অর্থনীতিবিদ গোলাম মোয়াজ্জেম এক্ষেত্রে রপ্তানিমুখী খাতে প্রণোদনা দেয়ার ওপর জোর দেন সেইসাথে রেমিটেন্সের প্রবাহ যেন ফরমাল চ্যানেলে হয় সেজন্য সরকারকে নানামুখী উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেন।

 

মন্দার ঝুঁকিতে তৈরি পোশাক খাত: রাশিয়া যে পরিমাণ গম, সার, স্টিল বা অ্যালুমিনিয়াম বাংলাদেশে পাঠায়, তারচেয়ে বেশি বা প্রায় সমপরিমাণের তৈরি পোশাক বাংলাদেশ থেকে নেয়। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ইউক্রেনের মিত্রগোষ্ঠী রাশিয়ান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক একাউন্টগুলো জব্দ করায় সেইসাথে রাশিয়ার প্রথম সারির কয়েকটি ব্যাংকের ওপর সুইফট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় পোশাক রপ্তানি হুমকির মধ্যে পড়েছে।

 

এই সুইফট বা সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ইন্টার-ব্যাংক ফিনানশিয়াল টেলিকমিউনিকেশন হলো ২০০টি দেশে ব্যবহৃত একটি আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ম্যাসেজিং সিস্টেম, যা কোনও আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের তথ্য ওই অর্থের প্রেরক এবং প্রাপককে ক্ষুদে বার্তা বা মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়। এতে অর্থ লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

 

রাশিয়া প্রতিদিন এই সুইফটের মাধ্যমে লাখ লাখ লেনদেন সম্পন্ন করতো। কিন্তু এই সুইফটে নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশের যেসব পোশাকের অর্ডার শিপমেন্টের জন্য প্রস্তুত রয়েছে, তার মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া সুইফটকে অনুসরণ ও অনুকরণ করে ভিসা এবং মাস্টারকার্ডও রাশিয়ান অর্থনৈতিক লেনদেন করা বন্ধ করে দিয়েছে।

 

বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাতের অর্ধেকের বেশি বা ৬৪% তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। কিন্তু যুদ্ধের প্রভাবে ইউরোপের অর্থনীতিতে মন্দাভাব চলে আসায় ইউরোপীয়দের ক্রয়ক্ষমতায় লাগাম পড়েছে। ফলে বাংলাদেশে নতুন অর্ডারের হারও কমেছে।

 

এই যুদ্ধের কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২সহ যেসব প্রকল্পে রাশিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, সেগুলো দীর্ঘসূত্রতার কবলে পড়তে পারে বলে শঙ্কার কথা জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি, এই যুদ্ধের ফলে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তা কমে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। , যুদ্ধের বহুমাত্রিক প্রভাব খুব সহসা কাটছে না। এক্ষেত্রে তারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে সমন্বিতভাবে দীর্ঘমেয়াদী কৌশল হাতে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

 

বিবিসিকে খন্দকার মোয়াজ্জেম বলেন, বেসরকারি কোম্পানিগুলো যেন বড় ছাঁটাইয়ে না যায়। সরকার কর্মসংস্থান অব্যাহত রাখতে প্রণোদনা দিতে পারে। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা সেটা নজরদারি করা প্রয়োজন যেন কেউ এর থেকে রাজনৈতিক সুবিধা না নেয়।


আরও খবর



হর্ন বাজানো নিয়ে বরিশাল বাসস্ট্যান্ডে লঙ্কাকাণ্ড

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোঃ মোছাদ্দেক হাওলাদার, বরিশাল প্রতিনিধি

Image

হর্ন বাজানো নিয়ে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ এলাকায় লঙ্কাকাণ্ড ঘটছে। গত শনিবার দুপুরে হর্ন বাজানো নিয়ে বাস চালক ও হেলপারকে মারধরের ঘটনা ঘটে। সহকর্মীদের মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে দফায় দফায় বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ করে সেখানকার বাস শ্রমিকরা। রাতে সেই সংঘর্ষ বেধেছে বাস-থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে।

এরপর দফায় দফায় মারামারি, হামলা-পাল্টা হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। ইতোমধ্যে একাধিক যানবাহন ভাংচুর করেছে দুই পক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে নথুল্লাবাদ থেকে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আলী আশরাফ ভুঞা জানান, জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস-কোচ-মাইক্রবাস শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটি নিয়ে বেলা ১২টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়। এরপর সন্ধ্যার দিকে বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে ফের সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।

ঘটনাস্থলে থাকা মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক লোকমান হোসেন জানান, সন্ধ্যার পর বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ১৫/২০ থ্রি-হুইলার (মাহেন্দ্র টেম্পো) ও ৩/৪টি বাস ভাংচুর করা হয়েছে। তারা এক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছাড়েনি। তবে ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর থেকে এসে আটকে পড়া যাত্রীবাহী বাসসহ সকল যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

থ্রি-হুইলার চালক সোহেল বলেন, বাস শ্রমিকরা নিজেরা মারামারি কইর‌্যা বাস বন্ধ করেছে। মোরা পাবলিক সার্ভিস দেতেয়াসেলাম। এর ফিন্নে (এ সময়) বাস শ্রমিকরা আইয়্যা মোগো উপারে হামলা করছে। পঞ্চাশটার বেশি থ্রি-হুইলার ভাইঙ্গ্যা হালাইসে।

গৌতম রায় নামে আরেক থ্রি-হুইলার চালক বলেন, অহেতুক তারা আইস্যা আমাদের উপারে হামলা করসে। বাস শ্রমিকরা তারা গাড়ি ভাঙছে, শ্রমিকদের মারছে, খাবার হোটেলও লুট কইর‌্যা লইয়্যে গেসে।

তিনিসহ থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের দাবি, তাদের গাড়ি যখন ভাংচুর করে বাস শ্রমিকরা, পুলিশ কিছু বলেনি। উল্টো পুলিশ এসে থ্রি-হুইলার চালক শ্রমিকদের পিটিয়েছে। এ সময় তাদের বেশকিছু শ্রমিক আহত হয়। তাদের বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে।

গৌতম আরও বলেন, তারা নথুল্লাবাদ থেকে ৭টি রুটে থ্রি-হুইলার চালান। ক্ষতিপূরণ না পেলে গাড়ি চালানো বন্ধ রাখাসহ কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেবেন।

এদিকে বাস শ্রমিকরা জানিয়েছেন, মাহিন্দ্রা শ্রমিকরা আকস্মিক তাদের ওপর সন্ধ্যার পর হামলা চালায়। যা প্রতিহত করতে গেলে টার্মিনাল সংলগ্ন এলাকায় থাকা ১০-১২ টি বাস ভাংচুর করে মাহিন্দ্রা শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস-কোচ-মাইক্রবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী কবির বলেন, সন্ধ্যার দিকে দুপুরের ঘটনা সমাধান করে বাস চলাচলের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ সময় আবার বাস ও থ্রি হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে ঝামেলায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি অসীম দেওয়ান বলেন, শ্রমিকদের একটি গ্রুপ প্ররোচনা দিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করছে। তাই এখনও বাস চলাচল শুরু করা সম্ভব হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস চলাচল শুরু করার চেষ্টা চলছে।

বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষে শেবাচিমে ২৬ জন শ্রমিক ভর্তি হয়েছে বলে উভয় পক্ষ জানিয়েছে। এদিকে দুই পক্ষের সংঘর্ষের কারণে বরিশাল নগরের বৈদ্যপাড়ার প্রবেশ মুখ থেকে আমতলার মোড় পর্যন্ত সড়কে বিপুল সংখ্যক বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান আটকা পড়ে। রাত পৌনে ১০টার দিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের সামনের যানবাহন চলাচল শুরু হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।


আরও খবর



জয়পুরহাটে ট্রাক্টরের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
সুজন কুমার মন্ডল, জয়পুরহাট

Image

জয়পুরহাটের বালুবোঝাই ট্রাক্টরের ধাক্কায় মাহবুব হোসেন (৩৫) এক মোটরসাইকেল আরোহী মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে পাঁচবিবি  উপজেলার দানেজপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত মাহবুব হোসেন পাঁচবিবি উপজেলার দানেজপুর গ্রামের মোজাহার আলীর ছেলে।

পাঁচবিবি থানার ওসি হাবিবুর রহমান জানান, মাহবুব হোসেন একজন দুধ ব্যবসায়ী। তিনি বিভিন্ন এলাকার গরুর খামার থেকে দুধ সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি উদ্দেশ্য নিয়ে যাচ্ছিলেন পথে একটি বালুবোঝাই ট্রাক্টর মোটরসাইকেলেটিকে সামনের থেকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

ওসি আরও জানান, স্থানীয়রা ট্রাক্টরটি আটক করলেও চালক পালিয়ে যান। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


আরও খবর



ওয়ালটন-বিএসপিএ স্পোর্টস কার্নিভাল মঙ্গলবার শুরু

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

গেল ১০ বছর ধরে বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) সদস্যদের জন্য আয়োজন করছে স্পোর্টস কার্নিভাল। আর গেল ৭ বছর ধরে এই আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করছে দেশের স্বনামধন্য শিল্পগোষ্ঠী ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ, পিএলসি। আগামী মঙ্গলবার (১৪ মে) থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ওয়ালটন-বিএসপিএ স্পোর্টস কার্নিভাল-২০২৪।

এবার ৭টি ডিসিপ্লিনে মোট ১০টি ইভেন্টে অংশ নেবেন বিএসপিএর শতাধিক সদস্য। ইভেন্টগুলো হলো- ক্যারম একক ও দ্বৈত, টেবিল টেনিস একক ও দ্বৈত, দাবা, শুটিং, আরচারি, সাঁতার, কল ব্রিজ ও টোয়েন্টি নাইন। সবকটি খেলাই অনুষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম ও এর সংলগ্ন বিভিন্ন ভেন্যুতে।

মঙ্গলবার (১৪ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় বিএসপিএ কার্যালয়ে ক্যারম ডিসিপ্লিনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে এই আসর। প্রধান অতিথি হিসেবে স্পোর্টস কার্নিভালের উদ্বোধন করবেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ, পিএলসির জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন) ও সিনিয়র ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রবিউল ইসলাম মিলটন।

প্রতিবারের মতো এবারও স্পোর্টস কার্নিভালের সেরা ক্রীড়াবিদের হাতে তুলে দেয়া হবে আব্দুল মান্নান লাডু ট্রফি ও অর্থ পুরস্কার। ট্রফি ও অর্থ পুরস্কার থাকছে সেরা দুই রানার্সআপের জন্যও। এছাড়া প্রতিটি ইভেন্টের সেরাদের জন্য ক্রেস্ট ও অর্থ পুরস্কার।

ওয়ালটন-বিএসপিএ স্পোর্টস কার্নিভাল সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর জন্য আজ রোববার (১২ মে) বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএসপিএর সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিব, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ, পিএলসির জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন) ও সিনিয়র ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রবিউল ইসলাম মিল্টন, বিএসপিএ সাধারণ সম্পাদক মো. সামন হোসেন ও ক্রীড়া উপ-কমিটির চেয়ারম্যান কাজী শহীদুল আলম।

সংবাদ সম্মেলনে ওয়ালটনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএসপিএর সভাপতি বলেন, বরাবরের মতো এবারও আমাদের আয়োজনে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ওয়ালটন গ্রুপ। কেবল বিএসপিএ নয়, এই সময়কালে একমাত্র ওয়ালটন গ্রুপকেই ক্রীড়াঙ্গনে বিভিন্ন আয়োজনে সহায়তা করতে দেখা যাচ্ছে। আজকের এই সংবাদ সম্মেলনে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই ওয়ালটন গ্রুপকে। আমরা আশা করবো, ওয়ালটন আর বিএসপিএর বন্ধুত্ব ভবিষ্যতেও অটুট থাকবে।


আরও খবর



গাংনীতে জমি দখল পেতে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আব্দুল আলিম, মেহেরপুর

Image

মেহেরপুর আদালত কর্তৃক রায় পাবার পরও জমি দখল পাচ্ছেন না আফতাব উদ্দীন নামের এক ভুক্তভোগি। রায় প্রাপ্ত জমি দখল পেতে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহকারী কমিশনার(ভুমি)সহ বিভিন্ন স্থানে আবেদন করেও কোন সুরাহা পাননি তিনি। অবশেষে আজ বিকেলে গাংনী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই ভুক্তভোগি।

আফতাব উদ্দীন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর বর্ডার পাড়ার মৃত সাত্তার আলীর ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিতভাবে তিনি জানান, অত্র উপজেলার দেবীপুর গ্রামের মোঃ ফজলুর রহমানের ছেলে মোঃ মামনুর রশিদ, মৃত পিয়ার বক্সের ছেলে মোঃ ফজলুর রহমান, মৃত রহমত উল্লাহর ছেলে মোঃ ইউসুফ আলী, মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে মোঃ ছাবদার, কাজিপুর গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে খবির উদ্দীন ও খড়মপুর গ্রামের দলিল লেখক ওমর আলী জাল জালিয়াতির মাধ্যমে গাংনী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল সম্পাদিত ও রেজিস্ট্রি করেন। যার নং- ১২৬৫, তাং- ০৪/০২/২০১০ ইং।

এ দলিল বাতিলের জন্য আদালতে একটা মোকদ্দমা করা হয়। যার নং- দেং ১২৬/২০১০। উক্ত দলিল হস্তরেখা বিশারদ দ্বারা পরীক্ষাতে দলিল জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্ট বলিয়া প্রমানিত হয় এবং তদমর্মে হস্তরেখা বিশারদ রিপোর্ট দাখিল করেন। উক্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে ও উভয় পক্ষের সাক্ষ্য প্রমানাদি গ্রহণে  যথাক্রমে ১৬ জানুয়ারী ২০২০, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০, ৩০ নভেম্বর ২১, ২০ জুন ২২, ২৭ সেপ্টেম্বর ২২, ২৪ অক্টোবর ২২, ১৩ সেপ্টেম্বর ২৩, ২২ অক্টোবর ২৩, ২১ নভেম্বর ২৩ ও ২৯ জানুয়ারী ২০২৪ ইং তারিখে চুড়ান্ত শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ইং তারিখে আমার পক্ষে রায় প্রদান করেন।

রায়ে উল্লেখ করেন যে, মোকদ্দমাটি ১/২ নং বিবাদীর বিরুদ্ধে দোতরফা সূত্রে এবং অন্যান্য বিবাদীর বিরুদ্ধে বিনা খরচায় ডিক্রী হইল। এতদ্বারা নালিশী 'ক' তপশীল বর্ণিত ৬৩ শতক জমির দখল বাদীর বরাবর বুঝিয়ে দেয়ার জন্য বিবাদীপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করা হলো। পাশাপাশি বিগত ০৪/০২/২০১০ তারিখের ১২৬৫ নং দলিল বাতিল করা হলো।

নালিশী দলিলটি বাতিল করণের নোট সংশ্লিষ্ট ভলিয়মে প্রদান করার নিমিত্তে ডিক্রীর অনুলিপি সাব-রেজিস্ট্রার গাংনী, মেহেরপুর বরাবর প্রদান করেন। এমতে আদেশ হওয়ার আমি দরখাস্তকারী প্রতিপক্ষগণকে নিম্ন তপশীল বর্ণিত জমির দখল ছেড়ে দেয়ার জন্য বারংবার অনুরোধ করলেও প্রতিপক্ষগণ মাননীয় আদালতের রায় ডিক্রী থাকা সত্বেও জমির দখল ছেড়ে দিচ্ছেন না এবং ছেড়ে দিবে না বলে স্পষ্ট ভাবে জানান।

প্রতিপক্ষগণ অর্থাবলে ও জনবলে বলিয়ান ক্ষমতাধর ব্যক্তি। তারা আরো হুমকি দিচ্ছেন যে, যদি নালিশী নিম্ন তপশীল বর্ণিত জমির দখলে যাওয়ার চেষ্টা করা হয় তাহলে ভুক্তভোগিকে খুন গুম করে ফেলবে। ভয়ে ওই জমিতে যেতে পারেন না তিনি।  এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভুমি) বরাবর আবেদন করেও কোথাও কোন সুরাহা পান নি বলে অভিযোগ করেছেন ওই ভুক্তভোগি। শেষ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের উচ্চ মহলে বিষয়টি অবগত এবং আমি যাতে উক্ত জমি দখল পেতে পারেন তার সুষ্ঠু সমাধানে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয় যে, জাতীয় পরিচয় পত্র যাচাই বাছাই ছাড়া কিভাবে জমি রেজিস্ট্রি ও সনাক্ত এবং খারিজ হয় তা সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবেন বলে তিনি আশাবাদী। জমি জালিয়াতিতে জড়িতদের মধ্যে সনাক্ত করেছেন কাজিপুরের খবির উদ্দীন যার প্রকৃত পিতার ফহিম হাসলানা অথচ পিতার নাম দেয়া হয়েছে আয়নাল হক। যা সম্পুর্ণ অবৈধ ও আইন বিরোধী বলেও দাবী করেন তিনি।

নিউজ ট্যাগ: মেহেরপুর

আরও খবর



চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রাহুল সরকার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

Image

চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত করেছেন গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। রবিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামানের সঙ্গে বৈঠকের পর ধর্মঘট স্থগিত করেন নেতারা।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মুছা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীদের দেওয়া আগুনে পুড়ে যাওয়া বাসের ক্ষতিপূরণ এবং বাসে অগ্নিসংযোগকারীদের গ্রেপ্তারসহ চার দফা দাবিতে শনিবার (২৭ এপ্রিল) এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।

আজ সকালে ধর্মঘট শুরু হলেও বিকেলে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকের পর গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকদের নেতা মঞ্জুর আলম চৌধুরী ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা দেন।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মুছা বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয় দাবি দাওয়ার ব্যাপারে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদের ওপর যেন হামলা না হয়, সেটির ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন। সবকিছু বিবেচনায় আমরা ধর্মঘট স্থগিত করেছি।


আরও খবর