আজঃ রবিবার ০৫ মে ২০২৪
শিরোনাম

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বছরপূর্তি

প্রকাশিত:বুধবার ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

এক বছর আগে ইউক্রেনের সীমান্ত এবং রাজধানী কিয়েভের দোরগোড়ায় সর্বাত্মক আক্রমণের জন্য রুশ সেনারা প্রবেশ করে। মস্কো আশা করেছিল দ্রুত জয় পাওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু এই যুদ্ধের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ইউক্রেনের পতন হয়নি, হার মানেনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে প্রাণঘাতী এই যুদ্ধে ইউক্রেনীয়দের প্রতিরোধ প্রশংসিত হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে অনেকেই কিয়েভের পতন আশঙ্কা করলেও পরিকল্পনা, সাহস, কৌশল, বিদেশি সামরিক ও আর্থিক সহযোগিতা এবং রণক্ষেত্রে রাশিয়ার ব্যর্থতা মিলে এখন পর্যন্ত ইউক্রেন শত্রুদের ঠেকিয়ে রাখতে পেরেছে।

 

বলা হচ্ছে, ২০২২ সালের শেষ দিকে একাধিক ব্যর্থতার পর ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণে রাশিয়া অবস্থান শক্তিশালী করেছে। সম্প্রতি এসব অঞ্চলে আরও সামান্য অগ্রগতি অর্জন করেছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেন ও পশ্চিমারা বলছে, আরেকটি বড় আক্রমণের অংশ এসব অভিযান। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত করতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ বলে মনে হচ্ছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় রুশ অর্থনীতি বিপর্যয়ে পড়েনি এবং সংঘাতে মোতায়েন করার মতো লোকবল ও অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে রুশ সেনাবাহিনীর।

 

এখন পর্যন্ত রাশিয়া প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নেতৃত্বাধীন ছোট শক্তির ইউক্রেনকে আক্রমণ করে যাচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধের মুখ হয়ে উঠেছেন জেলেনস্কি। নিজ দেশের জনগণের পক্ষে বিশ্বনেতাদের কাছে আর্জি জানাচ্ছেন তিনি। আর ইউক্রেনীয় সেনাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন লৌহ জেনারেল হিসেবে পরিচয় পাওয়া ভ্যালেরি জালুঝনি।

 

কিয়েভে কোনও আত্মতুষ্টি নেই। যুক্তরাষ্ট্র ধারণা করছে, চলমান যুদ্ধে উভয় পক্ষের প্রায় ১ লাখ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। পূর্বাঞ্চলে পরিখা যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি ভয়াবহ হচ্ছে। শীতকালে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এর ফলে শীতে লাখো ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎহীন বা উষ্ণতা ছাড়াই কাটিয়েছেন। বেসামরিক ভবনে আঘাত হেনেছে ক্ষেপণাস্ত্র। এর মধ্যে গত মাসে ডনিপ্রোর একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৪৪ জন নিহত হয়েছে।  ফেব্রুয়ারির মাসের শুরুতে জেলেনস্কি এক ভিডিও বার্তায় বলেছিলে, পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়েছে।

 

ইউক্রেন আশঙ্কা করছে, রাশিয়া আক্রমণ জোরদার করতে পারে। এই আশঙ্কা মাথায় রেখে হুমকি মোকাবিলার জন্য বিদেশিদের কাছ থেকে ট্যাংক, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দ্রুত পাওয়ার জন্য তদবির করছে কিয়েভ। এগুলো পেয়ে গেলে জেলেনস্কি ও ইউক্রেনের চাওয়ার তালিকায় রয়েছে যুদ্ধবিমান। কয়েকটি মিত্র দেশ যুদ্ধবিমান সরবরাহে রাজি আছে। কিন্তু মূল অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন না বলে দিয়েছেন।

 

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে লাখো রুশ সেনা ইউক্রেনে প্রবেশ করে। প্রথম দিনে দক্ষিণে খেরসন এবং খারকিভের দিকে সহজেই অগ্রসর হয়। তবে তাদের মূল্য টার্গেট ছিল রাজধানী কিয়েভ। শহরটির ৩০ লাখ মানুষকে অবরোধ, জেলেনস্কিকে বন্দি বা হত্যা করে দ্রুত ইউক্রেনের আত্মসমর্পণের প্রত্যাশা ছিল রাশিয়ার। কিন্তু কিয়েভে রুখে দাঁড়ায় ইউক্রেনীয় ন্যাশনাল গার্ড। শহরের প্রবেশ পথগুলোতে ট্যাংক-বিধ্বংসী ব্যারিকেড তৈরি করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের বলা হয় পেট্রোলবোমা দিয়ে রুশদের ওপর হামলা চালানোর জন্য। প্রথম দিকে কিয়েভের ভেতরে অনিশ্চয়তা ছিল। ছিল আতঙ্কও। বাইরে ছিল রাশিয়ার বিশাল ও দীর্ঘ সামরিক বহর। যা ছিল ৪০ মাইল দীর্ঘ। মনে হচ্ছিল কিয়েভের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

 

কিন্তু সব প্রতিকূলতার পরও রুশবাহিনী কিয়েভের বাইরেই আটকে যায়। রুশ সেনারা ইরপিন ও বুচা শহরে পৌঁছায় ঠিকই। কিয়েভের পূর্ব দিকে ব্রোভারিতেও লড়াই হয়েছে। এই তিনটি শহর এখন রুশ নৃশংসতার সাক্ষী হয়ে আছে। শহরের বাইরে রাশিয়া এমন হত্যাযজ্ঞ চালালেও কিয়েভের পতন হয়নি। ইউক্রেনীয় সেনারা প্রস্তুতি নেয় এবং রাশিয়ার রসদ সরবরাহ ব্যবস্থায় আঘাত হানতে সক্ষম হয়। এর ফলে উড়োজাহাজে রুশ সেনারা অবতরণ করতে ব্যর্থ হয়, ধ্বংস হয় রাশিয়ার সাঁজোয়া যান এবং রণাঙ্গন কখনও শহরের ভেতরে আসেনি।

 

জেলেনস্কি, অনুপ্রেরণাদায়ী নেতা: একদা অভিনেতা, এখন প্রেসিডেন্ট, ইউক্রেনের দৃঢ় প্রতিরোধের মুখ হয়ে উঠেছেন তিনি। গত বছরজুড়ে খুব কম সময় মুখে হাসি ছিল সাবেক এই টেলিভিশন তারকার। পশ্চিমা কর্মকর্তাদের ধারণা, কয়েক হাজার সামরিক ও বেসামরিক প্রাণহানি হয়েছে, লাখো মানুষ ইউক্রেন ছেড়েছেন। পূর্বাঞ্চল বলা যায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

 

এমন সংকটকালীন সময়েও কিয়েভ ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় নেননি তিনি। প্রতিদিন রাতে আইফোনের মাধ্যমে ভিডিও বক্তব্য প্রচার করেছেন। লড়াইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সহযোগিতার জন্য বিশ্বনেতাদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। নিশ্চিত করেছেন যাতে করে ইউক্রেনীয়দের দুর্ভোগ থেকে বিশ্বের মনোযোগ চলে না যায়। ইউক্রেন যে যুদ্ধে লিপ্ত তা মনে করিয়ে দিতে সব সময় খাকি পোশাক পরছেন ৪৫ বছর বয়সী জেলেনস্কি। ২০২২ সালে টাইম সাময়িকীর পারসন অব দ্য ইয়ার তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। বিশ্বনেতাদের সমর্থন ও সহযোগিতা নিশ্চিত করার ফলে সক্ষমতা বাড়ে। আর তাতে আসতে শুরু করে সাফল্য।

 

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র দিয়ে এবং রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইউক্রেনের পাশে থেকেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্রুত ইউক্রেনের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালে ইউক্রেন ৩২ বিলিয়ন ডলার বিদেশি সহযোগিতা পেয়েছে বাজেট ঘাটতি দূর করার জন্য। জানুয়ারি মাসের শেষ দিক পর্যন্ত শুধু যুক্তরাষ্ট্রই ২৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি নিরাপত্তা সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। মার্কিন নিরাপত্তা সহযোগিতার মধ্যে ছিল অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, হিমার্স রকেট লঞ্চার ব্যবস্থা। এগুলো দিয়ে রাশিয়ার অস্ত্র গুদাম, সেনা ও রসদে দূর থেকে হামলা চালাতে পেরেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।

 

অত্যাধুনিক যুদ্ধের ট্যাংকের জন্য ইউক্রেনের তদবিরও সফল হয়েছে। যদিও রণাঙ্গনে এগুলো মোতায়েনে কিছুটা সময় লাগবে। অবশ্য কয়েকজন বিশেষজ্ঞ যুদ্ধের এগুলোর বড় প্রভাব ফেলার বিষয়ে সন্দিহান। পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে ব্রিটেন, জার্মানি ও পোল্যান্ড বড় ধরনের সহযোগিতা করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অনেক কম।

 

আক্রমণ ও পাল্টা-আক্রমণ: রুশবাহিনীর কৌশলগত ভুল এবং নৈতিক দুর্বলতা কিয়েভকে পাল্টা-আক্রমণের সুযোগ দিয়েছে। পশ্চিমা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেনকে খাটো করে এবং নিজেদের সেনাবাহিনীর সামর্থ্যকে বড় দেখেছে মস্কো। রাশিয়ার সেনাবাহিনীর তুলনায় ইউক্রেনের বাহিনী অনেক ছোট। কিন্তু তারা সর্বাত্মক হামলার আশঙ্কা করছিল। দক্ষিণ ও উত্তর-পূর্ব দিকে দ্রুত এগোলেও মূল লক্ষ্য কিয়েভ দখলে ব্যর্থ হয় তারা।

 

ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষাবাহিনী কিয়েভের কাছাকাছি হস্তোমেল বিমানঘাঁটি বন্ধ করে দেয়। এর ফলে রাশিয়া আকাশপথে সেনা ও সরঞ্জাম আনতে পারেনি। সড়ক পথে হাজারো সাঁজোয়া যান নিয়ে কিয়েভের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে তা জটিলতায় পড়ে। ইউক্রেন এই বহরে হামলা চালিয়ে রুশবাহিনীকে কিয়েভ দখলের লক্ষ্য বাদ দিয়ে ফেরত আসতে বাধ্য করে।

 

পশ্চিমা কর্মকর্তারা বলছেন, যেসব জায়গায় রাশিয়া অগ্রগতি অর্জন করেছে সেগুলোও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। এর ফলে শরতের পাল্টা আক্রমণে বিশাল ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে তারা। মার্কিন হিমার্সসহ পশ্চিমাদের পাঠানো রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায় থাকা রুশ গুদাম ও ব্যারাক ঝুঁকিতে পড়ে যায়। ইউক্রেন ও রাশিয়া এখন পূর্বাঞ্চলে ক্ষয়যুদ্ধে লিপ্ত। ভারী লড়াইয়ের মধ্যে রাশিয়া নিয়মিত ছোট ছোট সাফল্য পাওয়ার দাবি করে যাচ্ছে। সম্প্রতি সেখানে যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে। ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয়েই বসন্তকালীন বড় অভিযান শুরু করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

স্বাধীন থাকার জন্য ইউক্রেনীয় জনগণের আকাঙ্ক্ষা অব্যাহত রয়েছে। মাসের পর মাস ধরে অবিরাম ও ভয়াবহ হামলার পরও রাশিয়ার বিরুদ্ধে সহনশীলতায় অটল ছিলেন ইউক্রেনীয়রা। ২০২২ সালের অক্টোবরে কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব সোসিওলজির জরিপের তথ্য অনুসারে, ৮৬ শতাংশ ইউক্রেনীয় রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান প্রতিরোধকে সমর্থন করেন।

 

রুশ আক্রমণের পর ৮০ লাখের বেশি ইউক্রেনীয় নিজেদের মাতৃভূমি ছেড়েছেন। জাতিসংঘের লিপিবদ্ধ তথ্য অনুসারে, যুদ্ধের উভয়পক্ষের ৮ হাজারের বেশি বেসামরিক নিহত হয়েছে। যারা দেশ ছেড়ে যাননি তাদের জীবন ছিল বিপর্যস্ত। লুকিয়ে রাখা মাইন ছিল নাগরিকদের জীবনের জন্য হুমকি। জাতিসংঘের তদন্তে উঠে এসেছে, বাড়ি-ঘর, স্কুল ও হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংস হয়েছে। রুশ দখলকৃত এলাকায় ধর্ষণ, নির্যাতন, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ও শিশুদের বন্দি করার মতো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অবকাঠামোতে রুশ হামলা যুদ্ধাপরাধ কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ক্রেমলিন অবশ্য বেসামরিকদের টার্গেট করার অস্বীকার করে আসছে।

 

সহনশীলতার জন্য ইউক্রেনীয়দের প্রশংসা করে যাচ্ছেন বিশ্বনেতারা। এই সাহসিকতার আড়ালে ১ কোটি মানুষ, প্রতি চারজন ইউক্রেনীয়ের একজন, সংঘাতের কারণে মানসিক স্বাস্থ্যজনিত জটিলতায় পড়েছেন বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যে বলা হয়েছে। ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের এক বছর প্রায় পূর্ণ হতে চললেও এর সমাধান দৃশ্যমান হচ্ছে না। ইউক্রেনে যারা রয়ে গেছেন তাদেরকেই যুদ্ধের বেশিরভাগ বোঝা বহন করতে হচ্ছে, দৈনন্দিন জীবন চালিয়ে যেতে হচ্ছে। রণক্ষেত্র থেকে দূরের শহরের মানুষেরা এখনও বিমানহামলার সংকেত শুনতে শুনতে দোকানপাট খুলছেন। বড়দিনের বাজার খুলেছে। রেস্তোরাঁগুলোতে নিজেরা রান্না করা শিখছেন, বিদ্যুৎ না থাকলেও অতিথিদের আপ্যায়ন করা হচ্ছে।

 

যারা লড়াইয়ের খুব কাছাকাছি থাকে তারা বেঁচে থাকার জন্য অনেক দূরে নতুন জীবন চায়। লাখ লাখ ইউক্রেনীয়ও বিদেশে শরণার্থী হিসেবে তাদের জীবন পুনরায় গড়ে তুলছে। কিন্তু জনগণ যত দিন দেশকে রক্ষা করছে তত দিন ইউক্রেন টিকে থাকবে।

নিউজ ট্যাগ: রাশিয়া-ইউক্রেন

আরও খবর



চতুর্থ ধাপের উপজেলা ভোটের তফসিল হতে পারে মঙ্গলবার

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চতুর্থ ধাপের তফসিল মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) হতে পারে।

এ বিষয়ে ইসি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন কমিশনের ৩২তম সভা শেষে এই ঘোষণা হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে ঢাকার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে বিকেল সাড়ে ৩টায় এই কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হবে।

জানা গেছে, সভার আলোচ্যসূচিতে উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের তফসিলের বিষয়টি রাখা হয়েছে। বৈঠকে কমিশন যদি সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে।

এর আগে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে, আর দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলার ভোটগ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলার নির্বাচন আগামী ২৯ মে হবে।

এবারের উপজেলা নির্বাচনে বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিধান রেখে নতুন বিধিমালা করেছে ইসি। সেই অনুযায়ী প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ২২ এপ্রিল।


আরও খবর



পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিলো বিজিপির আরও ১২ সদস্য

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ১২ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপির আষাঢ়তলী, জামছড়ি ও ঘুমধুম ইউপির রেজু সীমান্ত দিয়ে তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এ নিয়ে তিন দিনে দেশটির মোট ২৮ সেনা ও বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় ‍নিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সরকারি জান্তা বাহিনীর সদস্যরা সংঘাতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে টিকতে না পেরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে বিজিবির তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন বলেন, ৮ নম্বর ওয়ার্ড জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে ১০ বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের বিজিবির তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।

ঘুমধুম ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য বাবুল কান্তি চাকমা জানান, ওয়ার্ডের ফাত্রাঝিরি রেজু আমতলী পাড়া সীমান্ত দিয়ে দুই বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিজিবির গণসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম আজ সকালে ১২ বিজিপি সদস্য আশ্রয় নেওয়ার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

নতুন করে আসা ২৮ জনই নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে ১১ বিজিবি হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওখানে আগে থেকে ১৮০ জন আশ্রয়ে রয়েছে। ফলে সেখানে এখন মিয়ানমারের মোট ২০৮ জন সেনা ও বিজিপি সদস্য রয়েছেন।

আগে থেকে থাকা ১৮০ জনের মধ্যে গত ৩০ মার্চ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তিনজন সদস্য নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এর আগে ১১ মার্চ আশ্রয় নেন আরও ১৭৭ জন বিজিপি ও সেনাসদস্য।

তারও আগে কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরও ৩৩০ জন। যাদের গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩৩০ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।


আরও খবর



ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে নিহত ৯

প্রকাশিত:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ভূমধ্যসাগরের ল্যাম্পেডুসা দ্বীপে চোরাকারবারিদের নৌকা ডুবে ৯ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ওই দুর্ঘটনার কবলে পড়া ২২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইতালীয় উপকূলরক্ষী। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এপি এ খবর জানিয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখনও ১৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

জীবিতদের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, স্টিল-বটম বোটটি গিনি, বুর্কিনা ফাসো, মালি ও আইভরি কোস্ট থেকে ৪৬ জন মানুষকে নিয়ে রোববার রাতে তিউনিসিয়ার স্ফ্যাক্স থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। তারা বলেন, বুধবার সকালে নৌকাটি ডুবে যায়।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে একটি ৬ মাস বয়সি শিশু ও আটজন পুরুষ রয়েছেন। বেঁচে থাকা ছয়জনকে গুরুতর হাইপোথার্মিয়া ও ডিহাইড্রেশনের জন্য চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। আর দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সাধারণত গ্রীষ্মের কাছাকাছি সময় আফ্রিকা থেকে ইউরোপে আসার প্রবণতা বেড়ে যায়। তখন নৌকাডুবির উদ্বেগও বাড়ে। তাই ইতালীয় বন্দরের নিয়ম অনুযায়ী দাতব্য সংস্থার উদ্ধারকারী নৌকার  কার্যক্রম সীমাবদ্ধ করে দেয়।

ইতালির অতি-ডান-নেতৃত্বাধীন সরকার সম্প্রতি দাতব্য নৌকাগুলোকে উদ্ধারের পর উত্তর বন্দরে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। তাদের কার্যক্রম কমিয়েছে। নিয়ম লঙ্ঘন করার অভিযোগে নৌকাগুলোকে আটক করছে।

ইউএনএইচসিআর-এর মুখপাত্র ফেদেরিকো ফসি বলেন, গ্রীষ্মকাল আসার সঙ্গে সঙ্গে এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে। কারণ এ সময় আরও বেশি সংখ্যক মানুষ সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত নৌকা নিয়ে ইতালি যাচ্ছে।

ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন জানিয়েছে, এই বছর এ পর্যন্ত উত্তর আফ্রিকা থেকে ইতালিতে আসার পথে ভূমধ্যসাগরে ৩৮৫ জন নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৪ সালে নিখোঁজ অভিবাসী প্রকল্প চালু করার পর থেকে ২৩ হাজার ১০৯ জন নিখোঁজ হয়েছে।


আরও খবর



শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্ব যখন প্রশংসা করছে তখন কিছু মানুষ সমালোচনা করছে৷ যে যাই বলুক, শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার শুরুতে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগকে সবসময় ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই পথ চলতে হয়েছে৷ আওয়ামী লীগ দেশ ও মানুষের ওপর আস্থা রেখেই দেশ চালায়৷ কিছু রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবী অনবরত দেশবিরোধী অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে৷ তাদের চোখে কিছুই ভালো লাগে না৷ বাংলাদেশ তো পেছাচ্ছে না৷ এগিয়ে যাচ্ছে৷ তাহলে সমস্যাটা কোথায়?

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ক্ষমতায় বসে লুটপাট করতে পারছে না বলেই সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় নেমেছে বিএনপি৷ বিএনপি এমন একটি দল, যাদের কোনো মাথামুণ্ডু নেই৷ তারা শুধু পারে অনলাইনে নির্দেশনা দিতে৷ ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে অপকর্ম করেছে, তা মানুষের ভুলে যাওয়া উচিত না৷

ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসা দলের কাছে আজ গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা ভোট নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, তারা কেনো বুঝছে না দেশবাসী এই নির্বাচনে ভোট দিতে পেরে খুশি৷ জনগণের আস্থা আওয়ামী লীগ পেয়েছে, কারণ মানুষ বিশ্বাস করে আওয়ামী লীগ তাদের উপকার করে৷

জনগণের আস্থা-বিশ্বাসই আওয়ামী লীগের মূল শক্তি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ দেশের মানুষের দিন বদল হয়েছে৷ দারিদ্র্যের হার এখন গ্রামে নয় শহরে দেখা যাচ্ছে৷ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গড়া যাবে৷ পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এক বছর না পেরোতেই দেড় হাজার কোটি টাকা উপার্জন হয়েছে দেশের৷ এটাই তো প্রাপ্তি, বলেন তিনি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিজের চেহারা আয়নায় না দেখে, মানবাধিকার নিয়ে সবক দেয় বাংলাদেশকে৷ মার্কিন কোনো পুলিশের গায়ে কোনো রাজনৈতিক দল হাত তুললে, কী করতো সেখানতার পুলিশ? কদিন আগে যুদ্ধের বিরোধীতা করায় সাধারণ মানুষের আন্দোলনে কি জুলুমটাই না করলো আমেরিকার পুলিশ। এটা তো মানবাধিকার লঙ্ঘন৷ এর জবাব কী?

প্রচণ্ড গরমে দেশবাসীকে সাবধানে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় গরম ছড়িয়ে পড়ছে৷ শিগগিরই বৃষ্টি হবে বলে আশা করছি৷ পহেলা আষাড় থেকে পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ চালিয়ে যেতে হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা৷


আরও খবর



নাফ নদীতে বিজিপির গুলিতে দুই বাংলাদেশি জেলে আহত

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোহাম্মদ ফারুক, কক্সবাজার

Image

কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) গুলিতে বাংলাদেশি দুই জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। রোববার (২১ এপ্রিল) সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের নাইক্ষ্যংদিয়া সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধরা হলেন- শাহপরীর দ্বীপের মাঝেরপাড়ার মোহাম্মদ ইসমাইল ও মোহাম্মদ ফারুক। এর মধ্যে ফারুকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রোববার দুপুর ১টার দিকে আহতদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

টেকনাফের সাবারাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসেন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা প্রণয় রুদ্র জানান, আহতদের মধ্যে ফারুকের শরীরে তিনটি গুলি লেগেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিউজ ট্যাগ: বিজিপি নাফ নদী

আরও খবর