আজঃ বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিরোনাম

রাশিয়া থেকে আসবে ১ লাখ ৮০ হাজার টন সার

প্রকাশিত:শুক্রবার ০২ জুন 2০২3 | হালনাগাদ:শুক্রবার ০২ জুন 2০২3 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাশিয়া থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টন এমওপি সার আসবে। এ সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ও রাশিয়ার স্টেট কর্পোরেশন পোডিনটর্গের মধ্যে এই চুক্তি সই হয়।

আরও পড়ুন: যারাই অন্যায় করে, তাদেরই গ্রেপ্তার করা হয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

চুক্তিতে বিএডিসির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ ও পোডিনটর্গের মহাপরিচালক আন্দ্রেই সের্গেইভিচ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

আরও পড়ুন: ইউক্রেনে রাশিয়ার জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী পুতিন

এসময় কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, বিএডিসির সদস্য পরিচালক আব্দুস সামাদ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান বদিউল আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

নিউজ ট্যাগ: রাশিয়া

আরও খবর



গোপালগঞ্জে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মুছে ফেলা হলো শেখ হাসিনার নাম

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৩ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৩ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

সরাকারি নির্দেশনা আসার আগেই নিজ নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তালিমপুর তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মুছে ফেলা হলো সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নাম। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে মুছে ফেলা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক ভবন থেকে শেখ কামাল ও পাঠাগার থেকে শেখ রাসেলের নাম।

বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, সরকারি নির্দেশনা আসার আগেই এভাবে সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ কামাল এবং শেখ রাসেলের নাম মুছে ফেলার সাথে যারা জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটালীপাড়া উপজেলার তালিমপুর তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্মিত শেখ রাসেল গাঠাগারের উদ্বোধন করেন।  চলতি বছরের ৫ আগস্ট দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের সাথে সাথে তালিমপুর তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠাগার থেকে শেখ রাসেলের নামটি মুছে ফেলা হয়। একই সঙ্গে পাঠাগারটির উদ্বোধনী ফলক থেকে মুছে ফেলা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম।

এছাড়াও বিদ্যালয়টির একাডেমিক ভবন থেকে শেখ কামালের নামটিও মুছে ফেলেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি স্থানীয় জনগণ ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের মাঝে জানাজানি হলে উপজেলাব্যাপী আলোচনার ঝড় ওঠে।

উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হাজরা বলেন, সরকারি কোন নির্দেশনা আসার আগেই আমাদের প্রিয় নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম মুছে ফেলায় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানাই।

এ বিষয়ে তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক পরিমল বিশ্বাস বলেন, কে বা কারা বিদ্যালয়ের শেখ রাসেল পাঠাগার থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রাসেল ও একাডেমিক ভবন থেকে শেখ কামালের নাম মুছে ফেলেছে তা আমাদের জানা নেই।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, আমাদের নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ এলাকায় এই ঘটনায় আমরা লজ্জিত। আমরা দ্রুত সাংগঠনিকভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহীনুর আক্তার বলেন, আমরা কোন প্রতিষ্ঠান থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম মুছে ফেলার কোন নির্দেশনা এখন পর্যন্ত পাইনি। যদি কেউ কোন প্রতিষ্ঠান থেকে শেখ হাসিনার নাম মুছে ফেলে সেটা একান্তই তাদের বিষয়।

নিউজ ট্যাগ: গোপালগঞ্জ

আরও খবর



সাভারে সাবেক ২ এমপিসহ ১১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

প্রকাশিত:শনিবার ১৭ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৭ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সাভার প্রতিনিধি

Image

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আন্দোলনকারী ও জনতাকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যার দায়ে ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও তৌহিদ জং মুরাদসহ ১১৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মামলাটি দায়ের করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আস-সাবুরের প্রতিবেশী চাচাতো ভাই সাহিদ হাসান ওরফে মিঠু।

আশুলিয়া থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, শুক্রবার রাতে ১১৯ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামরা দায়ের হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

নিহত আস-সাবুর (১৬) নওগাঁর মহাদেবপুর থানার মহাদেবপুর গ্রামের নায়েদ ওরফে জাকিরের ছেলে। সে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়ার শিমুলতলা এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থেকে জামগড়া শাহীন স্কুলে ১০ দশম শ্রেণিতে পড়তো।

মামলার আসামিরা হলেন- ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডেন্ডাবর এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৫৫), আওয়ামী লীগের আরেক সাবেক সংসদ সদস্য টংগাবাড়ি এলাকার মৃত আনোয়ার জংয়ের ছেলে তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন (৫৪) ও তার বাবা সাভার পৌরসভার মেয়র আব্দুল গনি কুলু, পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান (৬১), আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাবউদ্দিন মাদবর (৫৮), ইয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ ভূইয়া (৫০), সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার (৭০) ও আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকারসহ (৫২) ১১৯ জন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে আস-সাবুর নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করার জন্য তার ভাড়া বাসা শিমুলতলা থেকে বাইপাইলে যায়। পরে দুপুর ২টার দিকে মামলার বাদী খবর পান তার ভাই আস-সাবুর মৃত অবস্থায় বাইপাইল মোড়ে পড়ে আছে। খবর পেয়ে লোকজন নিয়ে বাইপাইল মোড়ে গিয়ে তিনি দেখেন তার ভাইয়ের ক্ষত-বিক্ষত নিথর মরদেহ পড়ে আছে। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীরা তাকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার বাদী সাহিদ হাসান ওরফে মিঠু বলেন, আমরা সাবুরের মরদেহ উদ্ধারের পর খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি ঘটনার দিন এক থেকে দেড় হাজার আন্দোলনকারী বাইপাইল মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীরাসহ অজ্ঞাতনামা আরও আসামিরা দেশি ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীসহ যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও গুলিবর্ষণ করে। আসামিদের মারপিট ও গুলি বর্ষণে আমার ভাই আস সাবুর ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে আমার ভাইকে গণহারে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। পরবর্তীতে নিহতের বাবা নায়েদ ছেলেকে উদ্ধার করে গ্রামের বাড়ি মহাদেবপুর বাসস্ট্যান্ড কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করেন।


আরও খবর



দেশ ছেড়েছেন সদ্য সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশ ছেড়েছেন সদ্য সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। গত শুক্রবার (৩০ আগস্ট) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের চাপে পদত্যাগ করা সাবেক এই প্রধান বিচারপতি।

গেলো ১০ আগস্ট রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান ওবায়দুল হাসান। পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, সুপ্রিমকার্ট বিল্ডিং এবং এর রেকর্ডসমূহ রক্ষা, কোর্ট প্রাঙ্গণ রক্ষা, বিচারপতিদের বাড়িঘর, জাজেজ টাওয়ার রক্ষা, বিচারপতিগণকে শারীরিক হেনস্থা থেকে রক্ষা করা এবং জেলা জজ কোর্টগুলো ও রেকর্ড রুমসমূহ রক্ষার স্বার্থে আমাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হলো।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর হেয়ার রোডে তার বাড়িতে ভাংচুর করা হয়। ২০২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন তিনি। ৩০ আগস্ট ওবায়দুল হাসানের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে বিএফআইইউ।


আরও খবর



যুদ্ধের আড়ালে যেভাবে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল করছে ইসরায়েল

প্রকাশিত:শুক্রবার ৩০ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ৩০ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলির মধ্যে ফিলিস্তিনের বাত্তির একটি। সেখানকার জলপাই বাগান ও আঙুরক্ষেতের জন্য পরিচিত এই গ্রাম। এখানে প্রাকৃতিক ঝর্ণার পানি ব্যবহার করা হয় সেচের কাজে। কয়েক শতাব্দী ধরে এইভাবেই জীবন বয়ে চলেছে সেখানে। প্রকৃতির কোলঘেঁষা এই গ্রামই অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক বা পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপনের সর্বশেষ ফ্ল্যাশপয়েন্টে পরিণত হয়েছে।

ইসরায়েল এখানে একটা নতুন ইহুদি বসতি স্থাপন বা সেটলমেন্ট-এর অনুমোদন দিয়েছে। এই নতুন বসতির জন্য কেড়ে নেওয়া হয়েছে বহু মানুষের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি। শুধু তাই নয়, অনুমোদন ছাড়াই নতুন ইসরায়েলি ফাঁড়িও স্থাপন করা হয়েছে।

যাদের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি এই নতুন বসতি স্থাপনের জন্য কেড়ে নেওয়া হয়েছে তাদের তালিকায় রয়েছে ঘাসান ওলিয়ান। তিনি বলেন, নিজেদের স্বপ্ন গড়তে আমাদের জমি চুরি করছে ওরা।

ইউনেস্কো জানিয়েছে বাত্তিরকে ঘিরে বসতি স্থাপনকারীদের পরিকল্পনা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। তবে এই গ্রাম কিন্তু একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এ জাতীয় সেটলমেন্টকে অবৈধ হিসেবে দেখা হয়। যদিও এই বিষয়ে ইসরায়েল সহমত পোষণ করে না।

ওরা আন্তর্জাতিক আইন, স্থানীয় আইন, এমন কী ঈশ্বরের আইনকেও তোয়াক্কা করে না, আক্ষেপের সুরে বলেছিলেন ওলিয়ান।

গত সপ্তাহে ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা প্রধান রোনেন বার মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে এক চিঠি লিখে তাদের সতর্ক করেছিলেন। সেই চিঠিতে রোনেন বার উল্লেখ করেছিলেন পশ্চিম তীরের ইহুদি চরমপন্থীরা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কাজ চালাচ্ছে এবং দেশের অবর্ণনীয় ক্ষতি করছে।

গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই কিন্তু অধিকৃত পশ্চিম তীরে দ্রুত বসতি স্থাপন হচ্ছে। ইসরায়েল সরকারের থাকা চরমপন্থীরা অবশ্য গর্ব করে বলেন এই পরিবর্তন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে বাধা দেবে।

আশঙ্কা করা হচ্ছে, নিজেদের লক্ষ্য পূরণের জন্য গাজায় যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে চাইছে এই চরমপন্থীরা। বসতি স্থাপনের বিষয়ে পর্যবেক্ষণকারী ইসরায়েলি সংস্থা পিস নাও-এর ইয়োনাতান মিজরাহি বলেছেন, ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের চরমপন্থী ইহুদিরা ইতিমধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে আরও বাড়িয়ে তুলছে এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের অবসান ঘটানোর বিষয়টাকেও কঠিন করেছে।

তার মতে ৭ অক্টোবরের হামলা পর ইসরায়েলি সমাজে ক্রোধ ও ভয়ের মিশ্রণ রয়েছে। ওই হামলার পর থেকে জমি দখল করে বসতি স্থাপনের ক্ষেত্রে গতি এসেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তার কারণ যারা জমি দখল করছেন, তাদের প্রশ্ন করার কেউ নেই।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের জুন মাসের একটা সমীক্ষা বলছে ৪০% ইসরায়েলের মানুষ বিশ্বাস করেন যে এই বসতি স্থাপন তাদের দেশকে নিরাপদ করেছে। ২০১৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ২৭%।

অন্যদিকে জুন মাসের ওই জরিপে অংশ নেওয়া ৩৫ শতাংশ মানুষ আবার মনে করেন, বসতি স্থাপনের কারণে ইসরায়েলের নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগের জরিপে ওই পরিসংখ্যান ছিল ৪২%।

মিজরাহি উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, পশ্চিম তীরের ইহুদি চরমপন্থীরা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। একই সঙ্গে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের অবসান ঘটানোর বিষয়টাকেও আগের চেয়ে কঠিন করে তুলছে।

আমি মনে করি এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ঘৃণা বাড়ছে, বলেছেন তিনি।

এই জাতীয় ঘটনায় বৃদ্ধি আগেই দেখা গিয়েছিল। কিন্তু গত ১০ মাসে এমন ১২৭০টা হামলার ঘটনা নথিভুক্ত করেছে জাতিসংঘ। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ৮৫৬।

ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থা বেটসেলেমের তথ্য অনুযায়ী, একই সময়ে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের কারণে অন্তত পশ্চিম তীরের ১৮টা গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন ফিলিস্তিনিরা। ইসরায়েল ও জর্ডনের মধ্যবর্তী এই ফিলিস্তিনি অঞ্চল ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে সময় দখল করেছিল ইসরায়েল। তখন থেকে এই অংশ তাদের দখলেই রয়েছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ৭ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের আগস্ট মাসের মধ্যে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ৫৮৯ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৫৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে ইসরায়েলির বাহিনীর হাতে এবং অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে বসতি স্থাপনকারীদের হাতে।

জাতিসংঘের মতে, এদের মধ্যে কেউ কেউ হামলার পরিকল্পনা করছিল বলে জানা গিয়েছে, আবার এই তালিকায় নিরস্ত্র বেসামরিক লোকজনও রয়েছে।

আবার অন্যদিকে, ওই একই সময়ে ফিলিস্তিনিরা পাঁচজন সেটলার বা বসতি স্থাপনকারী ও ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর নয়জন সদস্যকে হত্যা করেছে।

চলতি সপ্তাহে বেথেলহেমের কাছে ওয়াদি আল-রাহেলে বসতি স্থাপনকারী ও ইসরায়েলি সেনারা প্রবেশ করে। সেখানে ৪০ বছরের এক ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, এর আগেও কাছাকাছি থাকা একটা ইসরায়েলি গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়েছিল।

গত মাসে জিট গ্রামে জায়গা দখলের উদ্দেশ্যে ঢুকে পড়া কয়েক ডজন লোক তাণ্ডব চালালে ২২ বছরের এক ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক স্তরে নিন্দা করা হয়।

ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছ। তাদের পক্ষ থেকে একে মারাত্মক সন্ত্রাসী ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

কিন্তু এই পদক্ষেপ দায়মুক্ত করার জন্য বলেই মনে করে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। ইসরায়েলি নাগরিক অধিকার গোষ্ঠী 'ইয়েশ দিন' এর তথ্য বলছে ২০০৫ থেকে ২০২৩ সালে বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতার ঘটনার আনুষ্ঠানিক তদন্তের পর মাত্র ৩% দোষী সাব্যস্ত হয়েছে।

ইসরায়েলি গণমাধ্যমে ফাঁস হওয়া রোনেন বারের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিল লঘু আইনি পদক্ষেপই চরমপন্থী দখলদারদের উৎসাহ দিয়েছিল।

পশ্চিম তীরের কিছু অংশে একচেটিয়াভাবে প্রতিষ্ঠিত ইহুদি সম্প্রদায়ের মাঝেই বাস করছে এই নতুন বসতি স্থাপনকারীরা। এর মধ্যে অনেক বসতিতেই ইসরায়েলি সরকারের আইনি সমর্থন রয়েছে। অন্য বসতি যা আউট পোস্ট বা ফাঁড়ি হিসেবে পরিচিত সেগুলো বেশিরভাগই কাফেলা এবং লোহার তৈরী ছাউনির মতো সাধারণ।

এগুলো কিন্তু ইসরায়েলের আইনের চোখেও অবৈধ। কিন্তু চরমপন্থীরা আরও বেশি জমি দখলের করার উদ্দেশ নিয়ে এগুলো তৈরি করে।

জুলাই মাসে, যখন জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত প্রথমবার জানতে পারে পূর্ব জেরুজালেম-সহ পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের দখল অবৈধ, তখন ওই দেশকে বসতি স্থাপন সংক্রান্ত সমস্ত কার্যকলাপ বন্ধ এবং যত দ্রুত সম্ভব সেনা প্রত্যাহার করতে কথা বলা হয়।

ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররা কিন্তু বারবার এই বসতি স্থাপনকে শান্তি আনার পথে অন্তরায় বলে আখ্যা দিয়ে এসেছে। ইসরায়েল অবশ্য এই নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে জানিয়ে দেয় ইহুদিরা তাদের নিজেদের জমিতে কোনও ভাবেই দখলদার নয়।

এখন আশঙ্কা করা হচ্ছে, পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনের এই পদক্ষেপকে যাতে কোনও ভাবেই বন্ধ না করা যায়, তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে চরমপন্থীরা।

ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে উগ্র ডানপন্থী সরকারের সমর্থন পেয়ে ওই অঞ্চলে দ্রুত তাদের নিয়ন্ত্রণ বিস্তার করেছে। পশ্চিম তীরে সংযুক্তির পরিকল্পনাকে আরও মজবুত করছে এই চরমপন্থীরা। শুধু তাই নয়, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে গাজায় বসতি স্থাপনের জন্য প্রকাশ্যে আহ্বানও জানাচ্ছে।

নতুন বসতি স্থাপনকারীদের অনেকেই এখন ইসরায়েল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত।

এক দিকে পশ্চিম তীরে এই বসতি স্থাপনের বিরোধিতাকারী বিশ্বনেতারা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য নতুন করে উৎসাহ দিচ্ছেন, শান্তি আনার ক্ষেত্রে ইতিবাচক পদক্ষেপের কথা বলছেন।

আর অন্য দিকে ইসরায়েলের জাতীয়তাবাদীরা যারা বিশ্বাস করে এই পুরো জমি তাদের (ইসরায়েলের) মালিকানাধীন, তারা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বপ্নকে অসম্ভব করে তুলতে সচেষ্ট।

বিশ্লেষকরা মনে করেন এই কারণেই কিছু রাজনীতিবিদ যুদ্ধবিরতি চুক্তি মানতে নারাজ।

টাইমস অফ ইসরায়েলের রাজনৈতিক সংবাদদাতা টাল স্নাইডার বলেন, তারা সংঘাতের অবসান ঘটাতে চায় না বা জিম্মি চুক্তিতে যেতে চায় না কারণ তারা বিশ্বাস করে যে ইসরায়েলের লড়াই চালিয়ে যাওয়া উচিত যতক্ষণ না তারা গাজার ভিতরে থাকতে পারে।

তারা দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা পোষণ করেন এবং মনে করে তাদের মতাদর্শ বেশি ন্যায়সঙ্গত। এটা অবশ্য তাদের নিজস্ব যুক্তি।

ইতিমধ্যে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ পাঁচটা নতুন বসতির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে বাত্তিরের বসতি এবং রাষ্ট্রের জন্য কমপক্ষে ২৩ বর্গ কিলোমিটার ক্ষেত্র।

এর অর্থ হলো ইসরায়েল এই জমিকে তাদের নিজেদের বলে মনে করে, তা সে অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলেই হোক বা ফিলিস্তিনিদের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন হোক কিংবা দুটোই।

স্থলভাগে তথ্য পরিবর্তন করে এই দখলদাররা বিপুল সংখ্যক ইসরায়েলিদের ওই জমিতে স্থানান্তরিত করতে চায় যাতে তাদের উপস্থিতির জানান দেওয়া যেতে পারে। এবং দীর্ঘমেয়াদে এই ভূখণ্ডকে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা দখল করবে।

এদিকে, রাষ্ট্র অনুমোদিত ভূমি দখলের বাইরে চরমপন্থীরাও কিন্তু ওই অঞ্চলে দ্রুত বসতি স্থাপন করেছে।

হেবরনের উত্তরে আল-কানুবের একটা স্যাটেলাইট চিত্র অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর কয়েক মাসের মধ্যে নতুন কাফেলা এবং রাস্তা নজরে এসেছে। ইতিমধ্যে ওই অঞ্চল থেকে ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়কে উচ্ছেদ করা হয়েছে।

পাঁচ দশকেরও বেশি সময় আগে জর্ডনের কাছ থেকে পশ্চিম তীর দখল করার পরপরই সেখানে বসতি স্থাপন শুরু করে ইসরায়েল। তারপর থেকে ক্ষমতায় আসা প্রতিটা সরকারই সেখানে ক্রমবর্ধমান বসতি সম্প্রসারণের অনুমতি দিয়েছে।

বর্তমানে সেখানে (ইসরায়েল অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেম বাদে) আনুমানিক ৩০ লাখ ফিলিস্তিনি ৫ লাখ ইহুদি ইসরায়েলির সঙ্গে ১৩০টারও বেশি বসতিতে থাকে। তবে ২০২২ সালে দায়িত্ব নেওয়া একজন সুপরিচিত উগ্র ডানপন্থী সরকারি নেতা এই সংখ্যা দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

উগ্র ডানপন্থী নেতা বেজালেল স্মোট্রিচ বিশ্বাস করেন যে এই জমিগুলোতে ইহুদিদের ঈশ্বর প্রদত্ত অধিকার রয়েছে। তিনি দুটো উগ্র ডানপন্থী বসতি স্থাপনকারী দলের মধ্যে একটার প্রধান। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০২২ সালের নির্বাচনের পরে তাকে ক্ষমতায় আনেন।

স্মোট্রিচ অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করলেও তিনি একইসঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে পদাধিকারী, যা তাকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনার সুযোগ করে দিয়েছে।

নতুন রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো-সহ এই বসতিগুলোতে রাষ্ট্রের অর্থ থেকে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছেন তিনি। দ্রুত বসতি নির্মাণের জন্য নতুন আমলাতন্ত্রও তৈরী করেছেন। গোপনে রেকর্ড করা কথোপকথনে তাকে সমর্থকদের কাছে গর্ব করে বলতে শোনা গিয়েছে যে তিনি সিস্টেমের ডিএনএ পরিবর্তন করেছেন এবং পশ্চিম তীরে সংযুক্তির জন্য তার যে পদক্ষেপ তা আন্তর্জাতিক এবং আইনি প্রেক্ষাপটে নিরিখে কার্যকর।


আরও খবর
উত্তর প্রদেশে মাথাবিহীন নারীর লাশ উদ্ধার

বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪




টেলিগ্রামের সিইও গ্রেপ্তার

প্রকাশিত:রবিবার ২৫ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৫ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যম টেলিগ্রামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পাভেল দুরভকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ফ্রান্সের পুলিশ শনিবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় প্যারিসের উত্তরে একটি বিমানবন্দর থেকে পাভেল দুরভকে গ্রেপ্তার করেছে। খবর বিবিসির।

ফরাসি টিভি চ্যানেল টিএফওয়ান জানিয়েছে, পাভেল তার প্রাইভেট জেটে করে ভ্রমণ করছিলেন। প্রাইভেট জেটটি লো বোর্গেট বিমানবন্দরে অবতরণ করলে তাকে আটক করা হয়।

৩৯ বছর বয়সী পাভেলকে জনপ্রিয় এই অ্যাপ সম্পর্কিত একটি অপরাধের পরোয়ানার ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা তাস বলছে, পাভেলকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় ফ্রান্সে রুশ দূতাবাস প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি বুঝতে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিচ্ছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া, ইউক্রেন ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে টেলিগ্রাম ব্যাপক জনপ্রিয়। টেলিগ্রামের তথ্যভান্ডার রুশ সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য জোরাজুরি করা হলে ২০১৪ সালে রাশিয়া ছাড়েন পাভেল। এরপর থেকে দুবাই থেকেই অ্যাপটি পরিচালিত হয়।

২০১৮ সালে রাশিয়া এই অ্যাপ নিষিদ্ধ করে। তবে ২০২১ সালে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।


আরও খবর
উত্তর প্রদেশে মাথাবিহীন নারীর লাশ উদ্ধার

বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪