রাতের খাবার বেশি
খাওয়া ঠিক নয়, একথা কম-বেশি সবারই জানা। ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকে রাতে একেবারেই না
খেয়ে থাকেন। কেউ আবার অলসতা করে কিংবা ক্লান্তির কারণে খালি পেটে ঘুমাতে যান। যে কারণেই
রাতের খাবার বাদ দেন না কেন, এটি মোটেও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়। এটি ওজন কমাতে কিংবা
সুস্থ রাখতে সাহায্য করে না। রাতে না খেয়ে ঘুমাতে যাওয়া ভীষণ ক্ষতিকর অভ্যাস। এটি শারীরিক
বিপর্যস্ততার কারণ হতে পারে। নিয়মিত না খেয়ে ঘুমাতে গেলে তা ঘটাতে পারে মৃত্যুও। জেনে
নিন খালিপেটে ঘুমাতে গেলে কী ক্ষতি হয়-
পুষ্টির অভাব
দেখা দেয়
আপনি যদি রাতে
না খেয়ে ঘুমাতে যান তবে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি তৈরি হবে। কারণ সঠিক পরিমাণ পুষ্টি পেতে
আমাদের তিনবেলা খাওয়া উচিত, এবং এর অন্তত দুইবার হালকা নাস্তা খাওয়া উচিত। চিকিত্সকরা
বলেন, শরীরে ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি১২ ও ভিটামিন ডি থ্রি প্রয়োজন। তাই রাতের খাবার
বাদ দিলে পরবর্তীতে তা অপুষ্টির কারণ হতে পারে।
মেটাবলিজমের ক্ষতি
হয়
প্রতি রাতে না
খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে আমাদের মেটাবলিজম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নষ্ট হয়ে যায় শরীরের ইনসুলিনের
লেভেল। এটি শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হরমোন। এর লেভেল নষ্ট হয়ে গেলে ডায়াবেটিস দেখা
দেবে। এছাড়া কোলেস্টেরল ও থাইরয়েড লেভেলেও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। সঠিক সময়ে খাবার না
খেলে হরমোন লেভেল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ দেখা দেবে।
ঘুমে সমস্যা দেখা
দেবে
না খেয়ে ঘুমাতে
গেলে তা ঘুমে সমস্যার সৃষ্টি করবে। ঘুম গাঢ় হবে না, বারবার ঘুম ভেঙে যাবে। কারণ শরীরে
খাবারের প্রয়োজন হবে, সে ঠিকভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে না। ফলে ঘুমে বিঘ্ন ঘটবে।
ঘুমে সমস্যা হলে সারাদিন তার প্রভাব পড়বে। এটি ওজন বেড়ে যাওয়া, মাথাব্যথাসহ আরও অনেক
সমস্যার কারণ হতে পারে।
ওজন বেড়ে যাবে
ওজন কমানোর জন্য
অনেকে রাতে না খেয়েই ঘুমাতে চলে যান। এটি একেবারেই ভুল ধারণা। এভাবে না খেয়ে থাকলে
ওজন তো কমেই না উল্টো আরও বেড়ে যায়। রাতে খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া ভালো, তবে একেবারে
খালি পেটে থাকা ঠিক নয়। সারারাত খালি পেটে থাকলে সকালে খাবারের পরিমাণ বেড়ে যায়, তাতে
ওজন আরও বেড়ে যাওয়ার ভয় থাকে।
শক্তির অভাব দেখা
দিতে পারে
অনেকে ভাবেন,
রাতে পরিশ্রমের কাজ নেই বলে খাবারেরও প্রয়োজন নেই। আসলেই কি তাই? চিকিৎসকেরা বলেন,
আমাদের শরীর প্রতি মুহূর্তেই শক্তি ব্যবহার করে এবং ক্যালরি খরচ করে। তাই শারীরিক কার্যক্রম
সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজন পড়ে জ্বালানির। আর রাতে খাবার না খেলে সেই জ্বালানিতে
সংকট তৈরি হয়। ফলে দেখা দেয় শক্তির অভাব।