আজঃ বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

রক্তদিয়ে কেনা আমার বর্ণমালা

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
ফাহাদ মশিউর রহমান

Image

১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে বাঙালির প্রাণের ভাষার মাস। ১৯৫২ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে ভাষা শহিদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে আমরা অজর্ন করেছিলাম মায়ের মুখের ভাষা, রক্তদিয়ে কেনা আমার বর্ণমালা। 

১৯৪৮ সালের ২১শে মার্চ, ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে - (যা এখন সোহরাওয়ার্দি উদ্যান)। এখানে এক ভাষণে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল, গণপরিষদের সভাপতি এবং মুসলিম লিগে সভাপতি মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ স্পষ্ট করে বলেছিলেন, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ভাষা হবে উর্দু - অন্য কোন ভাষা নয়। ইংরেজিতে দেয়া সেই বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, আমি খুব স্পষ্ট করেই আপনাদের বলছি যে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু, এবং অন্য কোন ভাষা নয়। কেউ যদি আপনাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে তাহলে সে আসলে পাকিস্তানের শত্রু

কয়েকদিন পর মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে ছাত্রদের সামনে আরো একটি ভাষণ দিলেন। সেখানেও একই কথা বললেন তিনি। বললেন, পাকিস্তানের প্রদেশগুলো নিজেদের সরকারি কাজে যে কোন ভাষা ব্যবহার করতে পারে - তবে রাষ্ট্রীয় ভাষা হবে একটিই এবং তা হবে উর্দু।  কার্জন হলে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার কথা বলার পর কয়েকজন ছাত্র না না বলে চিৎকার করে প্রতিবাদ করেছিলেন - যা জিন্নাহকে কিছুটা অপ্রস্তুত করেছিল।

পাকিস্তানের প্রথম গণপরিষদের অধিবেশন বসেছিল - ১৯৪৮ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি। তাতে গণপরিষদে কার্যক্রমে উর্দু ও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষাও যেন ব্যবহৃত হতে পারে - এমন এক প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন কংগ্রেস দলীয় সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। তাঁর যুক্তি ছিল - পাকিস্তানের ৬ কোটি ৯০ লক্ষ লোকের মধ্যে ৪ কোটিরও বেশি লোকের ভাষা বাংলা - অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষাই বাংলা। তাই বাংলাকে পাকিস্তানের একটি প্রাদেশিক ভাষা হিসেবে দেখা উচিত নয়, বাংলারও হওয়া উচিত অন্যতম রাষ্ট্রভাষা। কিন্তু তাঁর এ সংশোধনীর প্রস্তাব গণপরিষদে টেকেনি।  ২৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী তীব্র ভাষায় এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। দুঃখের বিষয়, মুসলিম লীগ দলের কোনো বাঙালি সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে সমর্থন করে কথা বলেননি। পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনও উর্দুর পক্ষ অবলম্বন করেন। ১১ মার্চ গণপরিষদে প্রস্তাব পাশ হয়, উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। এর প্রতিবাদে ঢাকায় ছাত্ররা ক্লাস বর্জন ও ধর্মঘট করে। ১১ই মার্চ ১৯৪৮ সালে পূর্ব বাংলায় পালিত হয় ভাষা দিবস

১১ মার্চ বাংলা ভাষা দাবি দিবস উপলক্ষ্যে পূর্ব বাংলায় সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়। ওইদিন ভোরবেলা শত শত ছাত্র ইডেন বিল্ডিং, জিপিও ও অন্যান্য জায়গায় পিকেটিং শুরু করে। সমগ্র ঢাকা শহর পোস্টারে ভরে যায়। ছাত্রদের আন্দোলনে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। নানা জায়গায় অনেক ছাত্র আহত হয়। শামসুল হক, শেখ মুজিবুর রহমান, অলি আহাদসহ সত্তর-পঁচাত্তরজন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর ফলে আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠে। স্বাধীন পাকিস্তানে এটিই শেখ মুজিবের প্রথম গ্রেপ্তার। দুজন মন্ত্রীকে পদত্যাগপত্র স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন বিক্ষোভকারীরা, পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজ নাজিমুদ্দিনকে গণপরিষদ ভবন থেকে বের করে নিতে সেনাবাহিনী ডাকতে হয়েছিল। এই নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ১৩-১৫ই মার্চ ঢাকায় ধর্মঘটও পালিত হয়েছিল।

তখন পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার অধিবেশন চলছিল। এ সময় শেরেবাংলা একে ফজলুল হক, বগুড়ার মোহাম্মদ আলী, তোফাজ্জুল আলী, ডা. মালেক, খান এ সবুর, খয়রাত হোসেন, আনোয়ারা খাতুন এবং আরও অনেক সদস্য ছাত্রদের পুলিশ কর্তৃক মারধর ও জেলে পাঠানোর প্রতিবাদ করেন। নাজিমুদ্দিন সাহেব ঘাবড়ে গেলেন এবং সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে আলাপ করতে রাজি হলেন। ছাত্রনেতাদের সঙ্গে নাজিমুদ্দিন সরকারের আলোচনার পর উভয়পক্ষ মিলে একটি সমঝোতা চুক্তি প্রণয়ন করে। বিশিষ্ট ছাত্রনেতারা জেলে থাকায় চুক্তিপত্রটি তাদের অনুমোদনের জন্য অধ্যাপক আবুল কাশেম ও কামরুদ্দিন আহমেদ গোপনে জেলে নিয়ে যান এবং শামসুল হক, শেখ মুজিবুর রহমান ও অলি আহাদ বন্দিদের পক্ষে খসড়া চুক্তির শর্তাবলি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অনুমোদন করেন।

চুক্তির প্রধান প্রধান শর্ত ছিল-বন্দিদের মুক্তি, পুলিশি নির্যাতনের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক তদন্ত, বাংলা ভাষাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা ও শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করার জন্য পূর্ব পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাব উত্থাপন, সংবাদপত্রের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার। আট দফা চুক্তিটি ১৫ মার্চ সরকারের পক্ষে খাজা নাজিমুদ্দিন এবং সংগ্রাম পরিষদের পক্ষে কামরুদ্দিন আহমদ স্বাক্ষর করেন। চুক্তির শর্ত মোতাবেক ১৫ মার্চ শেখ মুজিব ও অন্যান্য নেতাসহ বন্দিরা মুক্তিলাভ করেন।

আন্দোলন যাতে ঝিমিয়ে না পড়ে সেজন্য ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় ছাত্র সমাবেশ ডাকা হয়। ওই সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান। বিখ্যাত আমতলায় এটিই শেখ মুজিবের প্রথম সভা। তিনি আন্দোলনের কিছু দিকনির্দেশনা দেন। যেসব শর্তের ভিত্তিতে সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে সরকারের আপস হয়েছে, সেসব মেনে চলতে হবে। তবে সভা খাজা নাজিমুদ্দিন কর্তৃক পুলিশি নির্যাতনের যে তদন্ত হবে তা মানতে রাজি নয়।

শেখ মুজিব বললেন, ঠিক আছে, আমরা প্রস্তাবটি শুধু পরিবর্তন করতে অনুরোধ করতে পারি, এর বেশি কিছু না। বাংলা পাকিস্তানের শতকরা ছাপ্পান্ন ভাগ লোকের মাতৃভাষা। তাই বাংলাই একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হওয়া উচিত। তবুও আমরা বাংলা ও উর্দু দুটি রাষ্ট্রভাষা করার দাবি করেছিলাম। সিদ্ধান্ত হলো শোভাযাত্রা করে আইন পরিষদে গিয়ে খাজা নাজিমুদ্দিনের কাছে এ দাবিটা পেশ করে সবাই চলে আসবে। কিন্তু দিনভর অনেক ছাত্র-জনতা আইন পরিষদের কাছে দাঁড়িয়ে থাকে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। ছাত্র-জনতাকে নিবৃত্ত করতে শেখ মুজিব আবারও সেখানে ছুটে যান। শেখ মুজিবকে কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিচার্জের মুখোমুখি হতে হয়।

১৯৪৯ সালের ১১ অক্টোবর আওয়ামী মুসলিম লীগের উদ্যোগে ঢাকার আরমানিটোলা ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় মওলানা ভাসানী, শামসুল হক ও শেখ মুজিবুর রহমান বক্তৃতা করেন। এ জনসভায় সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রদানের অভিযোগে ৩১ ডিসেম্বর শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করা হয় এবং একটানা ২৬ মাস তাকে রাজনৈতিক (নিরাপত্তা) বন্দি হিসাবে জেলে আটক রাখা হয়।

রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় ১৯৫২ সালের জানুয়ারি মাসে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে খাজা নাজিমুদ্দিন প্রথম ঢাকায় আসেন ১৯৫২ সালের ২৫ জানুয়ারি। ২৬ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় তিনি ঘোষণা করেন-উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। তার এ ঘোষণার পর ১৯৪৮ সালের চেয়েও ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। ৩০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্মঘট পালিত হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সভা করে বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা কমিটি। ওইদিন সন্ধায় ঢাকা জেলা বার লাইব্রেরি মিলনায়তনে সর্বস্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্র ও তরুণদের বাইরে এটিই প্রথম সভা, যেখানে বিশিষ্ট নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতারা সমাবেত হন।

এ সভায় পূর্বে গঠিত রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদকে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদে রূপান্তরিত করা হয়। কাজী গোলাম মাহবুব এ পরিষদের আহ্বায়ক নিযুক্ত হন। তরুণ রাজনৈতিক নেতা শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহিউদ্দিন আহমদ তখন জেলে বন্দি ছিলেন। অসুস্থতার ভান করে শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হলেন। হাসপাতাল থেকেই তিনি গোপনে মোহাম্মদ তোয়াহা, অলি আহাদ, শওকত আলি, আবদুস সামাদ আজাদ, গোলাম মাওলা প্রমুখের সঙ্গে সভা করে জানিয়ে দেন ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা দিবস পালন করা হবে, হরতাল হবে এবং অ্যাসেম্বলি ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হবে।

এদিকে শেখ মুজিবুর রহমান ও মহিউদ্দিন আহমেদ তাদের দীর্ঘ কারাবাস (২৬ মাস) থেকে মুক্তির জন্য ১ ফেব্রুয়ারি সরকারের কাছে আবেদন করেন এবং জানান, ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের মুক্তি দেওয়া না হলে ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে তারা জেলের ভেতর অনশন ধর্মঘট করবেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদের দুজনকে ঢাকা থেকে ফরিদপুর জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। শেখ মুজিব ও মহিউদ্দিন সাহেব ফরিদপুর জেলেই অনশন করলেন। দুদিন পর অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নিয়ে তাদের জোর করে নল দিয়ে তরল খাবার দেওয়া হলো। এদিকে শেখ মুজিবুর রহমানের অনশনের বিষয়টি ২০ ফেব্রুয়ারি তদানীন্তন বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য আনোয়ারা খাতুন মুলতুবি প্রস্তাব হিসাবে উত্থাপন করলে মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিন নির্লজ্জভাবে এর বিরোধিতা করেন।

ইতোমধ্যে ঢাকায় ২০ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টার দিকে মাইকে ১৪৪ ধারা জারি করে পরবর্তী এক মাস ঢাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। ঢাকা বেতারেও এ খবর প্রচারিত হয়। এরপরই সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের নেতারা ৯৪, নবাবপুরের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জরুরি সভায় বসেন। সভায় অলি আহাদ ১৪৪ ধারা ভঙ্গের পক্ষে যুক্তি দেখালেও কর্মপরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা বিপক্ষে ভোট প্রদান করে। তবে ওই রাতেই ফজলুল হক হলের পুকুরপাড়ে ছাত্রনেতাদের বৈঠকে পরদিন ১৪৪ ধারা ভঙ্গের পক্ষে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সাধারণ ছাত্র ও ছাত্রসমাজের বৃহত্তর অংশ ১৪৪ ধারা ভঙ্গের পক্ষে ছিলেন। ২১ ফেব্রুয়ারি বেলা ১০টা থেকে ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জমা হতে থাকে। বটতলায় দাঁড়িয়ে ছাত্রনেতারা বক্তৃতা দেন। বিশ্ববিদ্যালয় ভাষা কমিটির আহ্বায়ক আবদুল মতিন জ্বালাময়ী বক্তৃতায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গের প্রস্তাব দেন। সহস্র কণ্ঠ গর্জে উঠল-১৪৪ ধারা মানব না, মানব না। সিদ্ধান্তমতে দশজন দশজন করে ছাত্র মিছিল করে অ্যাসেম্বলি ভবনের দিকে যেতে থাকে।

পুলিশ ছাত্রদের প্রথম দলটিকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। ছাত্ররা দলবদ্ধ হয়ে স্লোগান দিয়ে মেডিকেল কলেজ হোস্টেল, মেডিকেল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ গেট থেকে বের হতেই পুলিশ বাহিনী তাড়া করে, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। বেলা প্রায় সোয়া ৩টার সময় এমএলএ ও মন্ত্রীরা মেডিকেল কলেজের সামনে দিয়ে পরিষদ ভবনে আসতে থাকেন। পুলিশ বেপরোয়াভাবে ছাত্রদের ওপর আক্রমণ চালায়। বাধ্য হয়ে ছাত্ররা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পুলিশ ছাত্রদের লক্ষ করে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই রফিকউদ্দিন, আবদুল জব্বার শহিদ হন এবং আরও ১৭ জন গুরুতর আহত হন। রাতে আবুল বরকত মারা যান।

ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পূর্ববাংলায় যে স্বাধিকার আন্দোলনের ভিত্তি রচিত হয়, তার পথ ধরেই চলতে থাকে পরবর্তী আন্দোলন-সংগ্রাম, যা ১৯৭১ সালে মুক্তির সংগ্রামে পূর্ণতা লাভ করে।


আরও খবর



রূপপুরে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সুযোগ থাকলে পাবনার রূপপুরে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করার জন্য রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশন রোসাটমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে প্রধানমন্ত্রী এ অনুরোধ জানান।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ করার পর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (আরএনপিপি) জায়গায় নতুন আরেকটি প্ল্যান্ট নির্মাণের আহ্বান জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, দুটি নতুন ইউনিট স্থাপনের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে প্রযুক্তিগত জরিপ করা দরকার। প্রধানমন্ত্রী রাশিয়ান ফেডারেশনে আরএনপিপির প্রথম এবং দ্বিতীয় ইউনিটের স্পেন্ট নিউক্লিয়ার ফুয়েল’  ফিরিয়ে নেওয়ার সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

তার উত্তরে রোসাটম মহাপরিচালক রাশিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে আরএনপিপি’র প্রথম এবং দ্বিতীয় ইউনিটে ব্যয় করা পারমাণবিক জ্বালানি রাশিয়ান ফেডারেশনে ফেরত নেওয়ার আশ্বাস দেন।

বাংলাদেশ সরকার এবং রাশিয়ান ফেডারেশন সরকার ইতোমধ্যেই রাশিয়ান ফেডারেশনে আরএনপিপির ব্যয়িত পারমাণবিক জ্বালানি ফেরত দেওয়ার বিষয়ে একটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

শেখ হাসিনা জ্বালানি নিরাপত্তা বিশেষ করে বাংলাদেশে এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল এবং তা বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং এজন্য তিনি রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানান।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে রাশিয়ার সহায়তার কথা এবং এবং মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে দেশটির সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় তাকে শুভেচ্ছা জানান।

আলেক্সি লিখাচেভ প্রধানমন্ত্রীকে আরএনপিপির অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন এবং বলেন যে, ২০২৫ সালের মধ্যে আরএনপিপি উৎপাদনে আসবে এবং জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুত যোগ করতে সক্ষম হবে। তিনি আরও বলেন, আরএনপিপির ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

রোসাটম মহাপরিচালক আরএনপিপি এলাকায় দুটি নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট (ইউনিট-৩ ও ইউনিট-৪) নির্মাণের প্রস্তাবও দেন। তিনি বলেন, প্রথম দুটি ইউনিটের নির্মাণকাজ শেষ হলেই নতুন ইউনিট-৩ ও ইউনিট-৪-এর নির্মাণকাজ শুরু করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে আলেক্সি লিখাচেভ আরও বলেন, বিদ্যমান পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সম্প্রসারণ আর্থিক দৃষ্টিকোণ থেকে এবং প্রযুক্তিগত ও পারমাণবিক নিরাপত্তার আলোকে অধিক লাভজনক এবং যুক্তিসঙ্গত যা আন্তর্জাতিকভাবে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশি ও রাশিয়ানসহ প্রায় ২৫০০ কর্মী এই প্রকল্পে কাজ করছেন যারা তাদের দক্ষতা অর্জন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী রোসাটম মহাপরিচালককে বিভিন্ন দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে বাংলাদেশের দক্ষতা কাজে লাগাতে বলেন।

আলেক্সি লিখাচেভ বলেন, মহামারি এবং স্যাংশনের জন্য প্রতিবন্ধকতা ছিল। কিন্তু এরপরও স্বাভাবিক গতিতেই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৌশলগতভাবে এই বাধা এড়ানো গেছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব মো. আলী হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বর্তমানে আরএনপিপি এলাকায় ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি ইউনিটের (১২০০ x ২ = ২৪০০ মেগাওয়াট) নির্মাণকাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রথম ইউনিটের ফিজিক্যাল স্টার্ট-আপ এই বছরের ডিসেম্বরে শুরু হবে। আর ইউনিট-১ এবং ইউনিট-২ থেকে বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ২০২৫ এবং ২০২৬ সালে শুরু হবে।


আরও খবর



গোপন বিয়ে’র গুজব উড়িয়ে চমক দিলেন অদিতি-সিদ্ধার্থ

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

অদিতি রাও হায়দরি ও সিদ্ধার্থের বিয়ে নিয়ে গুজব ছড়াতেই ময়দানে নামলেন যুগল। এবার নতুন তথ্য প্রকাশ্যে আনলেন তারা। বুধবার থেকে বলিউড সরগরম। খবর ছড়ায়, অভিনেত্রী অদিতি রাও হায়দরি এবং সিদ্ধার্থ নাকি গোপনে বিয়ে সেরেছেন। তেলঙ্গানার রঙ্গনয়কস্বামী মন্দিরে নাকি বিয়ে সেরেছেন যুগল। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) অন্য খবর জানালেন এই যুগল। সমাজমাধ্যমে ছবি পোস্ট করে তারা তাদের বাগ্‌দানের খবর প্রকাশ্যে এনেছেন।

বৃহস্পতিবার সমাজমাধ্যমে সিদ্ধার্থের সঙ্গে তোলা একটি ছবি পোস্ট করেন অদিতি। সেই ছবিতে যুগলের আঙুলে বাগ্‌দানের আংটি স্পষ্ট। ছবির সঙ্গে অদিতি লেখেন, ও সম্মতি দিল। আমাদের বাগ্‌দান সম্পন্ন হয়েছে।’ এই ভাবেই বিয়ের গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন তারা। ২০২১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত দক্ষিণী ছবি মহা সমুদ্রম’-এর সেটে আলাপ অদিতি ও সিদ্ধার্থের। ছবির সেট থেকেই তাদের বন্ধুত্ব, তারপর প্রেম। সমাজমাধ্যমে আদুরে ছবি ও ভিডিও পোস্ট করলেও নিজেদের সম্পর্কের সমীকরণ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেননি দু’জনের কেউই।

বাগ্‌দান সম্পন্ন হতেই সিদ্ধার্থ এবং অদিতির বিয়ে নিয়ে কৌতূহল দানা বেঁধেছে। কিন্তু বিয়ের তারিখ নিয়ে এখনও কোনও তথ্য প্রকাশ করেননি এই যুগল।

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে ছোটবেলার বান্ধবী মেঘনাকে বিয়ে করেছিলেন সিদ্ধার্থ। দীর্ঘস্থায়ী হয়নি সেই বিয়ে। তিন বছরের মধ্যেই ভাঙে সম্পর্কে। ২০০৭ সালে আইনত বিবাহবিচ্ছেদ হয় সিদ্ধার্থের। অদিতির গল্পটাও খানিকটা একই রকমের। মাত্র ২১ বছরেই উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক সত্যদীপ মিশ্রের সঙ্গে বিয়ে হয় অদিতির। তবে চার বছর পর বিয়ে ভাঙে নায়িকারও। ২০১৩ সালে আলাদা হন দু’জনে। এ বার সিদ্ধার্থ-অদিতির বিয়ের অপেক্ষা।


আরও খবর



ট্রান্সকম গ্রুপের সিমিনসহ তিনজনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

প্রকাশিত:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমানসহ তিনজনকে দেশে ফেরার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সিমিন রহমান ছাড়া বাকি দুজন শীর্ষ কর্তা হলেন- গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহনাজ রহমান ও হেড অব ট্রান্সফরমেশন যারেফ আয়াত হোসেন।

রোববার (৩১ মার্চ) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও কে এম জাহিদ সারওয়ারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

গেলো ২১ মার্চ রাতে ট্রান্সকমের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের ছোট মেয়ে শাযরেহ হক গুলশান থানায় সিমিন রহমান সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তিনি অভিযোগ করেন, ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমান অসুস্থ ছিলেন না। তার বড় বোন সিমিন ও অন্য আসামিরা চক্রান্ত করে তাকে হত্যা করেছেন।

উল্লেখ্য, গেলো ২১ মার্চ ট্রান্সকম গ্রুপের সিইও সিমিন রহমান এবং বর্তমান চেয়ারম্যান মা শাহনাজ রহমানসহ তিনজনকে প্রতারণার একটি মামলায় দেশে প্রবেশের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন চেম্বার আদালত।

লতিফুর রহমানের ছোট মেয়ে শাযরেহ হক এই মামলা করেন। তার বড় বোন, ট্রান্সকম গ্রুপের বর্তমান সিইও সিমিন রহমান এবং গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান, তাদের মা শাহনাজ রহমানসহ ট্রান্সকমের আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেন শাযরেহ হক।


আরও খবর



শিল্প-সংস্কৃতির উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

শিল্প ও সংস্কৃতির উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে মুক্তি ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রামাণ্যচিত্র উৎসব দ্বাদশ লিবারেশন ডকফেস্ট বাংলাদেশ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা ও মেন্টর এক্সপোজিশন অব ইয়াং ফিল্ম ট্যালেন্ট নীলোৎপল মজুমদার এবং ভারতের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্ত চলচ্চিত্র নির্মাতা হাওবাম পবন কুমার। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য প্রদান করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি আসাদুজ্জামান নূর এমপি এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও উৎসব পরিচালক মফিদুল হক। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও সদস্য সচিব সারা যাকের।

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ যে চিন্তা-চেতনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে সেটি হলো একটি অসাম্প্রদায়িক, আধুনিক ও শান্তিপূর্ণ সমাজ তৈরি হবে, যেখানে উগ্রবাদ-মৌলবাদের কোনো জায়গা থাকবে না। এ রকম একটি সমাজ তৈরি করতে গেলে আমাদের শিল্প ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অনেক বেশি বিনিয়োগ দরকার।

তিনি আরও বলেন, ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ হওয়ার জন্য কতগুলো ভিত্তি দরকার। এ ভিত্তিগুলো তৈরি করার জন্য আমাদের অনেক অর্জন ইতোমধ্যে হয়েছে। গত পনেরো বছরে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেক হয়েছে, আরও উন্নয়ন করতে হবে। তবে আগামী পাঁচ বছর শিল্প ও সংস্কৃতির উন্নয়নের জন্য আমাদের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কারণ আমরা যদি উগ্রবাদ, মৌলবাদ ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে চাই, তাহলে শিল্প ও সাংস্কৃতির চেয়ে বড় কোন অস্ত্র হতে পারে না। শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন এখন আমাদের দরকার। একইসাথে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গণে উদ্ভাবনী মেধা খুবই দরকার।

প্রতিমন্ত্রী আরও যোগ করেন, রাষ্ট্রের কাজ অর্থনৈতিকভাবে শিল্পকে সহযোগিতা দেওয়া এবং এগিয়ে নেয়া যাতে যে মেধার জন্ম হয় সমাজে সেটা বিকশিত হতে পারে, শিল্পের মাধ্যমে আরো মানবতা ও মানবিকতা ছড়িয়ে যেতে পারে। দিন শেষে আমরা মানবিক বিশ্ব গড়তে চাই ও বিশ্ব নাগরিক হতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা সুস্থ শিল্প বিকাশের পরিবেশ দেশে নিশ্চিত করতে চাই। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমরা এই কাজটি করার চেষ্টা করবো।


আরও খবর



আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে ইসরায়েলে এই হামলা হতো না: ট্রাম্প

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। বহুদিনের বৈরিতা থাকলেও এই প্রথমবারের সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালালো ইরান। শনিবার (১৩ এপ্রিল) গভীর রাতে দুই শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইরান এই হামলা চালায়।

এমন অবস্থায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকলে ইসরায়েলে ইরানের এই হামলা হতো না। সবাই এটি জানে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

রোববার পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গভীর রাতে ইসরায়েলে ইরানের নজিরবিহীন হামলার খবর পাওয়ার পর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থানীয় সময় শনিবার তার সোশ্যাল-মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ নিজের প্রতিক্রিয়া জানান।

সেখানে ট্রাম্প বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে ইসরায়েলের ওপর এই হামলা হতো না। তার ভাষায়, ইসরায়েল আক্রমণের মুখে! এটি কখনোই হতে দেওয়া উচিত ছিল না - আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে এটি কখনও ঘটতো না আপনি এটি জানেন, তারাও এটি জানেন, সবাই-ই জানে। আমেরিকা ইসরায়েলের জন্য প্রার্থনা করছে, ক্ষতির সম্মুখীন সবাইকে আমরা আমাদের নিরঙ্কুশ সমর্থন জানাচ্ছি।

স্নেকসভিলে একটি রাজনৈতিক সমাবেশের কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রুথ সোশ্যাল-এ এই প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।

এর আগে ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। বহুদিনের বৈরিতা থাকলেও এই প্রথমবারের সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালালো দেশটি। দুই শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।

ইরানের রেভলিউশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে তারা দখলীকৃত ভূমিতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুকে টার্গেট করে ওই হামলা চালিয়েছে

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীও ইরানের হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

তবে ইসরায়েল ও অন্য কয়েকটি দেশ কিছু ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের গতিরোধ করেছে, যার বেশিরভাগ হয়েছে ইসরায়েলের আকাশসীমার বাইরে। মূলত বহু বছর ধরে ছায়া যুদ্ধে লিপ্ত থাকার পর এই প্রথম দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ প্রথমবারের মতো সরাসরি সংঘাতে লিপ্ত হলো।

পুরো ইসরায়েল জুড়ে সাইরেনের শব্দের পাশাপাশি জেরুসালেমে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। একই সাথে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিছু বস্তুকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ইসরায়েল, লেবানন ও ইরাক তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে এবং সিরিয়া ও জর্ডান আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সতর্কাবস্থায় রেখেছে।

ইরানের হামলা শুরুর পরপরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী তার যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার বৈঠক ডেকেছেন। এছাড়া জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, যে কোন পরিস্থিতির জন্য দেশটির সামরিক বাহিনী প্রস্তুত আছে।


আরও খবর