রংপুর প্রতিনিধিঃ
রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে ভুয়া চালানে মাধ্যমে অক্সিজেন সিলিন্ডার পাচার চেষ্টার প্রধান দুইজন প্রতারককে গ্রেফতার করেছে রংপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) পাবনা জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সোহেল ফকির ও নাসিম হোসেন নামে এ ঘটনার মূলহোতা দুই প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা অভিনব কায়দায় ট্রাকচালকদের কাছ থেকে টাকা আত্নসাৎ করত বলে জানায়।
দুপুরে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মোঃ আবু মারুফ হোসেন।
তিনি জানান, এই চক্রটি দীর্ঘদিন থেকে গাড়ি ভাড়া করে অভিনব কৌশলে গাড়ি চালকদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিলো।
গত ২৩ জুলাই দিনাজপুর ট্রাক ট্যাংকলরী কাভার্ডভ্যান ও ট্যাক্টর শ্রমিক ইউনিয়নের মনজুরুল আলমকে মোবাইল ফোনে আসামী সোহেল ফকির নিজেকে ডাঃ রেজাউল করিম পরিচয় দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হতে অক্সিজেনের খালি সিলিন্ডার ঢাকায় রেখে ঢাকা হতে অক্সিজেন ভর্তি সিলিন্ডার আনার কথা বলে ট্রাক প্রতি ৪০ হাজার টাকা করে ৩ টি ট্রাক ভাড়া করে।
চালকরা ফোনে কল দিয়ে গন্তব্যস্থল জেনে নেয়। তারপর দিনাজপুর থেকে ট্রাক ভাড়া চালান নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজে এসে কথিত ডাঃ রেজাউল করিমকে ফোন করে। এ সময় প্রতারক সোহেল ফকির রংপুর মেডিকেলে আছে এবং তাদের কাছে যাওয়ার কথা বলে সময় ক্ষেপন করতে থাকে। একপর্যায়ে প্রতারক সোহেল ফকির বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল ফ্রি করে দেয়ার কথা বলে ০৩টি ট্রাকের জন্য ট্রাক চালকদের কাছ থেকে ৩০০০ টাকা একটি বিকাশ নাম্বারে দেওয়ার জন্য বললে ৩ চালক সেই বিকাশ নাম্বারে ৩০০০ টাকা পাঠিয়ে দেয়। বিকাশে টাকা পাওয়া মাত্র প্রতারক তার মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়।
প্রতারকরা ইউটিউব, ফেসবুক কিংবা বিভিন্ন গাড়ির পিছনে থাকা মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে ট্রাক ভাড়া প্রদানকারী দালালের সাথে কথা বলে প্রতারণার ক্ষেত্র তৈরী করে এবং ৩-৫ হাজার টাকা নিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। পরবর্তী টার্গেট নির্ধারণ করে প্রতারণা করে। এই প্রতারক চক্র গত ২/৩ বছর যাবত সারাদেশে একই কায়দায় অসংখ্য প্রতারণা করেছে। টাকার পরিমাণ কম হওয়ায় অনেকেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে এড়িয়ে যায়।
এর আগে এই ঘটনায় পুলিশ ৩ জন ট্রাক চালক ও ৩ ট্রাক চালকের সহযোগীকে আটক করে এবং ৩টি ট্রাক জব্দ করে। পরবর্তীতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনার বিষয়ে কোতয়ালী থানায় নিয়মিত মামলার জন্য এজাহার দাখিল করলে কোতয়ালী থানায় নিয়মিত মামলা।