কৃষি শ্রমিক সংকট ও দিন মজুরি বৃদ্ধির প্রভাবে বেকায়দায় পড়েছেন প্রান্তিক পর্যায়ের চাষিরা। অনেকেই অর্থাভাবে ধান কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এমনি এক কৃষক মধু মিয়ার ধান কাটা ও মাড়াই করে দিয়েছে রংপুর মহানগর ছাত্রলীগ।
গতকাল দুপুরে রংপুর নগরীর ২ নং ওয়ার্ড এর পূর্ব অবিরাম ডাক্তারপাড়ায় কৃষক মধু মিয়ার ১০০ শতক (১ একর)জমির ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
বৈশাখের অসহনীয় গরমের মধ্যেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে কৃষকের পাশে এগিয়ে এসেছে তৃণমূলের ছাত্রলীগ। মানবিক সহায়তামূলক এ কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেন রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মাজেদুর রহমান প্রিন্স।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে কৃষকের ধান কেটে দিলেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা
ছাত্রলীগের অর্ধশত নেতাকর্মী কৃষক মধু মিয়ার খেতের ধান কাটার পর মাড়াই করে গোলায় পৌঁছে দেন। এতে মহানগর ছাত্রলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক রাঙ্গা, রসিকের ২, ৩ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং রংপুর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মীরা অংশ নেন।
কৃষক মধু মিয়া বলেন, খেতের ধান পাকার পরও তা কাটতে না পারায় দুশ্চিন্তায় পড়েছিলাম। কালবৈশাখী ঝড় বৃষ্টির কারণে ক্ষতির শঙ্কাও করেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি ছাত্রলীগ অসহায় কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছে। তা দেখে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অন্তত ৫০ জন আমার খেতের ধান কেটে দিয়েছে। এজন্য আমি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছে কৃতজ্ঞ।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মধু মিয়া বলেন, ছেলেগুলো গরমে ঘেমে একাকার হলেও ধান কাটা বন্ধ রাখেনি। আমার ১০০ শতক জমির সব ধান কেটেছে। শুধু তাই নয়, ধান কাটা শেষে নিমিষেই তা মাড়াই করে বাড়ির গোলা পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। আমার কোনো খরচ হয়নি। তাদের আন্তরিকতায় আমি প্রধানমন্ত্রীসহ ছাত্রলীগের সকলের প্রতি চির কৃতজ্ঞ।
এদিকে ধান কাটা ও মাড়াই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মাজেদুর রহমান প্রিন্স বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা এবং মহানগরের সভাপতি শফিউর রহমান স্বাধীন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আসিফ হোসেনের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে স্বেচ্ছায় মানবিক এই কার্যক্রমে অংশ নিয়েছি। কৃষক মধু মিয়ার সংকট ও সমস্যার কথা জানতে পেরে তার ১০০ শতক জমির ধান কাটা শেষ করে মাড়াই করে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সবসময় মানুষের পাশে ছিল, আছে এবং আগামীতেও থাকবে। আমরা করোনা মহামারি্য মধ্যেও কৃষকের জমির ধান কাটা ও মাড়াই করে দিয়েছি। শুধু তাই নয়, ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে অসহায় রোগীদের আর্থিক ও ওষুধসামগ্রী সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এখনো আমরা বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।